জুলাই সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর বিরোধে উদ্বেগ আইন উপদেষ্টার

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

অক্টোবর ৩০, ২০২৫, ০৮:৪৪ পিএম

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর বিরোধে উদ্বেগ আইন উপদেষ্টার

আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল

জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পরস্পরবিরোধী ও উত্তেজনাপূর্ণ অবস্থান দেখা দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল।

বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন। এ সময় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম উপস্থিত ছিলেন।

আইন উপদেষ্টা বলেন, “রাজনৈতিক দলগুলো যদি এ রকম পরস্পরবিরোধী ভূমিকা নেয়, তাহলে সরকার কী করবে—সেটা এখন একটা বড় প্রশ্ন। এত দিন আলোচনা হওয়ার পরও যদি ঐকমত্যে পৌঁছানো না যায়, তাহলে আমরা কীভাবে এগোব, সেটা নিয়ে সত্যিই চিন্তায় পড়েছি।”

তিনি জানান, জুলাই সনদ নিয়ে ২৭০ দিন ধরে চলা আলোচনা সত্ত্বেও প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর বক্তব্যে অনৈক্যের সুর স্পষ্ট। এই তীব্র বিরোধের মধ্যে সমঝোতার দলিল পাস করাটা সরকারের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

অধ্যাপক নজরুল বলেন, “আগে বিরোধ ছিল জুলাই সনদের বিষয়বস্তু নিয়ে, এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে বাস্তবায়নের পদ্ধতি ও গণভোটের সময় নিয়ে। জুলাই গণঅভ্যুত্থনের পক্ষে থাকা দলগুলোও নিজেদের মধ্যে পরস্পরবিরোধী ও উত্তেজিত আচরণ করছে।”

তিনি আরও জানান, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন জুলাই সনদ বাস্তবায়নে দুটি বিকল্প প্রস্তাব দিয়েছে।
প্রথমটি—সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি করে গণভোট আয়োজন, এবং ২৭০ দিনের মধ্যে গণভোট না হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংবিধান সংশোধন কার্যকর হবে।
দ্বিতীয়টি—এই দায়িত্ব নির্বাচিত সংসদের হাতে ছেড়ে দেওয়া।

এই দুটি প্রস্তাবের মধ্যে কোনটি গ্রহণযোগ্য হবে, তা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে তীব্র মতবিরোধ রয়েছে বলে জানান আইন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, “গণভোট কবে হবে—এটা নিয়েই এখন সবচেয়ে বড় বিতর্ক। শেষ পর্যন্ত এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধান উপদেষ্টা, আর আমরা তাঁকে সহায়তা করব। সিদ্ধান্ত হবে দ্রুত ও দৃঢ়ভাবে।”

অপর এক প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক নজরুল বলেন, বর্তমান সরকার একধরনের ‘ঐকমত্যের সরকার’, যেখানে প্রধান তিনটি রাজনৈতিক শক্তি ও জুলাই গণঅভ্যুত্থনের পক্ষে থাকা দলগুলোর প্রতিনিধিরা রয়েছেন। কিন্তু সাম্প্রতিক বিভাজন ও অনৈক্যের কারণে এই ঐকমত্যের অবস্থান দুর্বল হয়ে পড়ছে।

তিনি বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থনের পক্ষে থাকা শক্তিগুলো যদি ঐক্যবদ্ধ থাকত, তাহলে সরকারের কাজ অনেক সহজ হতো। কিন্তু বড় দুটি দল প্রায় ৪০–৫০ বছর রাজনীতি করার পরও কিছু ক্ষেত্রে ঐক্য ধরে রাখতে পারছে না।”

Link copied!