ভাসমান অবস্থায় থাকবেন না দেশের চা-শ্রমিকরা। চা-দিবস উপলক্ষে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে মঙ্গলবার (৪ জুন) এই আশ্বাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, “চা-শ্রমিকরা ভাসমান থাকবে কেন? তারা ভাসমান থাকবে না। সেজন্য আমাদের যা যা করার দরকার তা করা হবে। আবার চা-বাগানে সোলার প্যানেল করা একান্তভাবে দরকারি, এতে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী হবে।”
চা-শ্রমিকদের প্রতি বাগান মালিকদের যত্নবান হওয়ার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, “তাদেরকে (শ্রমিকদের) অধীনস্থ বলে বিবেচনা করা যাবে না। তাদের প্রতি আরও বেশি যত্নবান হতে হবে। তাদের সন্তানরা যাতে ভালোভাবে লেখাপড়া করতে পারে, সেই ব্যবস্থা নিতে হবে। বাগানের স্কুলগুলো যাতে ভালোভাবে চলে সেদিকে আমাদেরও নজর থাকবে।”
শেখ হাসিনা বলেন, “আওয়ামী লীগের উদ্যোগের ফলেই উত্তরবঙ্গে চা-বাগান ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। চা-শ্রমিকদের আর্থিক স্বচ্ছলতার পাশাপাশি তাদের নিরাপত্তা নিয়েও কাজ করছে সরকার। তারা যাতে পরিবার নিয়ে স্বাচ্ছন্দ্যে থাকতে পারে সেদিকে সরকার সবসময়ই মনোযোগী।”
তিনি আরও বলেন, “লালমনিরহাট জেলায় চা-বিভাগের একটি স্থায়ী অফিস নির্মাণ করা হয়েছে। একসময় যেসব এলাকা গো-চারণভূমি ছিল সেসব এলাকা এখন চায়ের ক্ষেতে রূপান্তরিত হয়েছে। চা-বোর্ড এই বিষয়ে সব ধরনের সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। সময়ের সঙ্গে চায়ের চাহিদা বেড়ে চলছে। আগে নিলামের চা শুধু চট্টগ্রামেই বিক্রি হতো। এই সরকার সিলেটেও নিলামে চা বিক্রির ব্যবস্থা করে দিয়েছে। বর্তমানে ১৬৮টি বৃহৎ চা-বাগান ও ৮ হাজারেরও বেশি ক্ষুদ্র আয়তনের বাগানে চা চাষ হচ্ছে। এ পর্যন্ত চায়ের উন্নত জাতের ১৩টি ক্লোন উদ্ভাবন করা হয়েছে। চা নিয়ে গবেষণার প্রতি বিশেষভাবে নজর দিতে হবে।”
বাগান মালিকদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, “অভিভাবকদের মতো করে শ্রমিকদের দেখবেন, যাতে তাদের জীবনমান উন্নতি হয়। চা-শ্রমিকরা যাতে আবাসন থেকে শুরু করে সব ধরনের সুযোগ পায়, তার ব্যবস্থা আপনারা করবেন।”
চায়ের গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, “এই খাতে সরকার গুরুত্ব বাড়িয়েছে। এটি দেশের অর্থকারী ফসল, যেটা দেশের আর্থিক স্বচ্ছলতা এনে দিতে সাহায্য করছে। মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বাড়ায় এটির চাহিদাও দিনে দিনে বেড়ে যাচ্ছে। তাই চা শিল্পকে আরও গুরুত্ব বেশি দিতে হবে। যাতে রপ্তানি বাড়িয়ে বৈদেশিক মুদ্রাও অর্জন করা যায়। এ নিয়ে গবেষণা অব্যাহত রাখতে হবে এবং বিশেষ নজর দিতে হবে।”
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “চা-শ্রমিকরা কিন্তু অন্য কোথাও ভোট দেয় না। তারা নৌকাতেই ভোট দেয়। অনেকে অনেক চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তারা নৌকায় ভোট দেয়।”