আর মাত্র দুই সপ্তাহ বাকি। তার পরই এদেশের মুসলিম সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদ উল ফিতর। ঈদকে কেন্দ্র করে এ সময় জমজমাট হয়ে থেকে কেনাকাটার বাজার। রাজধানীর ঐতিহ্যবাহী নিউমার্কেটও এ সময় থাকে বিকিকিনির ব্যস্ততা। ক্রেতা-বিক্রেতায় ঠাঁসা থাকে গোটা এলাকা। সকাল থেকে দুপুর গড়িয়ে মধ্য রাতেও চলে বেচাকেনা।
সেই নিউমার্কেট আজ সন্ধ্যা নামতেই পুরো অন্ধকারে ডুবে গেছে। বন্ধ দোকানপাট। কোলাহল শুন্য পরিবেশ। থমথমে গোটা এলাকা যেন যুদ্ধবিধ্বস্ত এক জনপদ। একপাশে অবস্থান নিয়েছে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা অন্যপাশে নিউমার্কেটের শ্রমিকরা।
গতকাল সোমবার নিউমার্কেটের একটি খাবারের দোকানের কর্মীদের সঙ্গে বচসা হয় ঢাকা কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থীর। এর জের ধরে সোমবার গভীর রাতে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ব্যবসায়ী ও দোকানিদের সংঘর্ষ হয়। তাতে কয়েকজন আহতও হন। পুলিশ আসে, কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ছোড়ে। সংঘর্ষ রাত আড়াইটা পর্যন্ত গড়ায়।
সাহ্রির সময় ঘনিয়ে আসায় দুই পক্ষ যখন রণে ক্ষান্ত দেয়, তখন পুলিশও চলে যায়। কিন্তু রাতের এই সংঘর্ষ সেখানেই শেষ হয়নি। এর জেরে আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টার পর ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা রাস্তায় জড়ো হন আগের দিনের কাইজ্যার বিচার দাবিতে মানববন্ধনের জন্য। এ সময় নিউমার্কেটসহ আশপাশের কয়েকটি মার্কেটের দোকানিরা বেরিয়ে এলে আবারও সংঘর্ষ শুরু হয়। দফায় দফায় সংঘর্ষে বন্ধ হয়ে যায় রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ মিরপুর সড়ক। শত শত যানবাহন আটকা পড়ে। যানজট ছড়িয়ে পুরো শহরে। নিত্য যানজটের এ শহরে যোগ হয় চরম ভোগান্তি। সংঘর্ষ শুরুর তিন ঘণ্টা পর পুলিশ এসে আবার কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। সংঘর্ষ তবু থামেনি।
ইফতারের কিছুক্ষণ আগে সংঘর্ষ থামলে ৪ দফা দাবি নিয়ে ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষের সাথে বৈঠকে বসে কলেজটির সাবেক শিক্ষার্থীরা। এক দফা বৈঠক পার হওয়ার পরও আসেনি কোন সিদ্ধান্ত।
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো:
১. এডিসি হারুনকে প্রত্যাহার।
২. নিউমার্কেট ব্যবসয়ীদেরকে নিশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে।
৩. আহত শিক্ষার্থীদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
৪. ঢাকা কলেজের কোন শিক্ষার্থীদের সাথে নিউমার্কেটের কোন ব্যবসায়ী অসদাচরণ করতে পারবে না।