মে ২৫, ২০২১, ০৩:৩৭ এএম
দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ আসামিদের অপরাধের উপাদান রয়েছে বলে পর্যবেক্ষণ দিয়েছে হাইকোর্ট। আগামী ছয় মাসের মধ্যে মামলাটি নিষ্পত্তির জন্য বিচারিক আদালতকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সোমবার (২৪ মে) হাইকোর্টের প্রকাশিত একটি রায়ে এমন নির্দেশনা এসেছে। বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় প্রকাশ করেন।
মামলায় খালেদা জিয়া ১ নম্বর আসামি
৬৮ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেছে, এ মামলায় আসামিদের অপরাধের উপাদান রয়েছে। এখন সেটি সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে নির্ধারিত হবে। ছয় মাসের মধ্যে মামলাটি নিষ্পত্তির জন্য বিচারিক আদালতকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ মামলায় ১ নম্বর আসামি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।
রায় প্রকাশের বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, একটা পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হয়েছে। রায়ে আদালত বলেছেন, এ মামলায় খালেদা জিয়াসহ আসামিদের অপরাধের উপাদান পাওয়া গেছে।
জীবদ্দশায় বড়পুকুরিয়া মামলা বাতিল চেয়ে আবেদন করছিলেন সাবেক ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী আমিনুল হক। এরপর তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রুল জারি করেছিল হাইকোর্ট। ওই রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে রুলটি খারিজ করে সোমবার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হলো। ২০১৯ সালের ২১ এপ্রিল সাবেক ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী আমিনুল হক মারা যান।
ঠিকাদার নিয়োগ ও ব্যবস্থাপনায় অনিয়মের অভিযোগ
দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি থেকে কয়লা উত্তোলন ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণে ঠিকাদার নিয়োগে অনিয়ম এবং রাষ্ট্রের ১৫৮ কোটি ৭১ লাখ টাকা ক্ষতি ও আত্মসাতের অভিযোগে ২০০৮ সালে শাহবাগ থানায় এ মামলাটি করে দুদক। এর আসামি করা হয় খালেদা জিয়া ও তার সরকারের মন্ত্রীদের। ২০০৮ সালের ৫ অক্টোবর ১৬ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলাটি এখন ঢাকার ২ নম্বর বিশেষ জজ আদালতে অভিযোগ গঠনের শুনানির পর্যায়ে রয়েছে।
মামলায় অন্য আসামি যারা
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ছাড়া মামলার অন্য আসামিরা হলেন: সাবেক অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমান (মৃত), সাবেক স্থানীয় সরকার, পল্লি উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী আবদুল মান্নান ভূঁইয়া (মৃত), সাবেক শিল্পমন্ত্রী মতিউর রহমান নিজামী (মৃত), সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী আলী আহসান মো. মুজাহিদ (মৃত), এম কে আনোয়ার (মৃত), এম শামসুল ইসলাম (মৃত), ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, ব্যারিস্টার আমিনুল হক (মৃত), এ কে এম মোশাররফ হোসেন, জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব নজরুল ইসলাম, পেট্রোবাংলার সাবেক চেয়ারম্যান এস আর ওসমানী, পেট্রোবাংলার সাবেক পরিচালক মঈনুল আহসান, বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম ও খনির কাজ পাওয়া কোম্পানির স্থানীয় এজেন্ট হোসাফ গ্রুপের চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন। এদের মধ্যে মৃতদের মামলা থেকে অব্যহতি দিয়েছেন আদালত।