জঙ্গিবাদ নিয়ন্ত্রণে আছে জানিয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক জানান, দেশে জঙ্গিদের উত্থানের আর সুযোগ নেই। জঙ্গি গোষ্ঠীকে দেশে অরাজকতার কোনো সুযোগ দেওয়া হবে না। হলি আর্টিজানের মতো হামলার সক্ষমতা এখন আর জঙ্গিদের নেই।
শনিবার (১ জুলাই) সকালে গুলশানে হলি আর্টিজান হামলার সময় জিম্মিদের উদ্ধার অভিযানে নিহত দুই পুলিশ কর্মকর্তার স্মরণে নির্মিত ‘দীপ্ত শপথ’ ভাস্কর্যে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর এ কথা বলেন তিনি।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, হলি আর্টিজান হামলার পর উন্নয়ন সহযোগীরা দেশ ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন। কিন্তু পুলিশ জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ায় পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, জেএমবি, নব্য জেএমবিসহ জঙ্গিবাদ নেই বলেও চলে। তবে জঙ্গিবাদের সুপ্ত বীজ লুকিয়ে থাকতে পারে। এটিইউ, সিটিটিসি ও র্যাব জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অনবরত কাজ করে যাচ্ছে।
এ ছাড়া জঙ্গিবাদের বিষয়ে মানুষজনকে সচেতন করার লক্ষ্যে বিভিন্ন সময় নানা প্রোগ্রাম করা হয়েছে বলেও জানান ডিএমপি কমিশনার।
হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলা; পেরিয়ে গেল ৭ বছর
২০১৬ সালে ১ জুলাই রাজধানীর গুলশান-২ এর লেক পাড়ের হলি আর্টিজান বেকারিতে দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটে। ওইদিন রাত ৮টা ৪০ মিনিটে নব্য জেএমবির পাঁচ জঙ্গি বেকারিতে ঢুকে নির্বিচারে হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে দুই পুলিশ কর্মকর্তা ও ১৭ বিদেশি নাগরিকসহ ২২ জনকে নির্মমভাবে হত্যা করে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা সারারাত জঙ্গিদের সাথে আত্মসমর্পণের আলোচনা করেন। কিন্তু কোনো কিছুতেই রাজি না হওয়ায় পরদিন ২ জুলাই পুলিশ, র্যাব, বোম ডিসপোজাল ইউনিট, সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা সর্বোপরি সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে কমান্ডো অভিযান শুরু হয়। অপারেশন থান্ডারবোল্ট নামে এই অভিযানে পাঁচ জঙ্গির মৃত্যু হয়।
এছাড়া ঘটনাস্থল থেকে এক রেস্টুরেন্ট কর্মীর লাশ উদ্ধার ও পালিয়ে বের হয়ে আসার পর হাসপাতালে আরেক রেস্টুরেন্ট কর্মীর মৃত্যু হয়।
এদিকে এই ঘটনার পরপর দেশ-বিদেশে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা ও চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে। আন্তর্জাতিক মহলেও নজরে আসে ভয়াবহ এ হামলার ঘটনা। হামলার পরপর জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস) হামলার দায় স্বীকার করে এবং নিজেদের মুখপাত্র ‘আমাক’ নিহত জঙ্গিদের ছবি প্রকাশ করে।
এর পরপরই জঙ্গিবাদ প্রতিরোধে গঠিত ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট- সিটিটিসির ধারাবাহিক অভিযানে গুলশান হামলায় অংশ নেয়া নব্য জেএমবির শীর্ষ একাধিক নেতার মৃত্যু হয়। অনেক শীর্ষ ও মধ্যম সারির নেতাকে গ্রেফতার করা হয়।