মহামারি করোনাভাইরাসের মার্কিন ফাইজার ও জার্মান বায়োএনটেকের তৈরি টিকা নেওয়ার দাবিতে কয়েক শত প্রবাসী হাসপাতালের দোতলায় করোনার টিকাকেন্দ্রের সামনে বিক্ষোভ করেন। বুধবার (১৪ জুলাই) দুপুর ১২টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত বিক্ষোভ চলে।
মো. আরিফ নামক এক প্রবাসীর অভিযোগ, তিনি সৌদি আরবে যাবেন মাস তিনেকের মধ্যে। এ জন্য তার ফাইজারের টিকাই নেওয়া লাগবে। সকালে ফাইজারের টিকা দেওয়া হলেও কিছুক্ষণ পর তা বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় এক আনসার সদস্য তার কাছে ফাইজারের টিকা দেওয়া যাবে বলে টাকা চান।
এ বিষয়ে আরিফ বলেন, ‘আমার কাছে এক আনসার সদস্য ৫০০ টাকা চেয়েছিল। আমার পকেটে ৫ টাকা নাই, ৫০০ টাকা কীভাবে দিব। তখন আরেক আনসার সদস্য আমাকে টাকা দিতে মানা করেন।’
সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের পরিচালক খলিলুর রহমান গণমাধ্যমকে জানান, প্রবাসীদের জন্য ফাইজারের টিকা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু ফাইজারের টার্গেট ১ হাজার ২০০ টিকা সকালে শেষ হয়ে যায়। এ সময় প্রবাসীরা ফাইজারের টিকা নেওয়ার জন্য হইচই করেন। অথচ তাঁরা মডার্নার টিকা নিতে চান না। তিনি বলেন, ‘ফাইজারের টিকা ও মডার্নার টিকা একই। এই সিদ্ধান্ত তো আমাদের হাতে নেই। আমরা তাঁদের বলেছি, মডার্নার টিকা নিলেও কোনো অসুবিধা হবে না। প্রবাসীদের কেউ কেউ মডার্নার টিকা নিতে রাজি হয়েছেন।’
দুপুর ১২টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত ফাইজারের টিকার দাবিতে কয়েক শ প্রবাসী হাসপাতালের দোতলায় করোনার টিকাকেন্দ্রের সামনে বিক্ষোভ করেন। এ সময় কেন্দ্রে ঢোকার কলাপসিবল গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়। হাসপাতালে মোতায়েন করা হয় অতিরিক্ত পুলিশ ও আনসার সদস্য। পরে এক ঘণ্টা পর আবার টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়।
উল্লেখ্য, ৫ জুলাই অনলাইনে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের যৌথ সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বিদেশগামী কর্মীদের মধ্যে যারা সৌদি আরব ও কুয়েত যাবেন, তারা যুক্তরাষ্ট্রের ফাইজার-বায়োএনটেকের করোনাভাইরাসের টিকা পাবেন। আর যাঁরা অন্য দেশে যাবেন, তাঁরা চীনের সিনোফার্মের টিকা পাবেন।
বেলা একটা থেকে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের পুরুষ বুথে আবার টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রবাসীদের বোঝানোর পর তাঁরা কিছুটা শান্ত হন। এ সময় প্রবাসীদের অনেকেই মডার্নার টিকা নিতে রাজি হন। কেউ কেউ আবার টিকা না নিয়ে ফিরে যান।