বঙ্গবন্ধু সেদিন বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশ-ভারত ভাই ভাই’

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

মে ২০, ২০২২, ১০:৫৩ পিএম

বঙ্গবন্ধু সেদিন বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশ-ভারত ভাই ভাই’

১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারি পাকিস্তান কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর  ভারত হয়ে ১০ জানুয়ারি সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের মাটিতে পা রাখেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বাংলাদেশের স্থপতিকে বরণ করে নিতে ওইদিন ঢাকা বিমানবন্দরে জনতার ঢল নামে। বিশাল জনসমুদ্রে দাঁড়িয়ে বঙ্গবন্ধু আনন্দে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। পরে  নিজেকে সামলে নিয়ে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া দেশের পূনর্গঠনে বাঙালি জাতিকে দিক নির্দেশনা দিতে নাতিদীর্ঘ ভাষণ  দেন। বঙ্গবন্ধু ওই ভাষণে 'ভারত-বাংলাদেশ বললে জনগণ ‘ ভাই ভাই' বলে স্লোগান তোলেন।  

আওয়ামী লীগের অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে ভাষণটি সংরক্ষিত আছে। ওই ভাষণের একেবারে শেষ দিকে শোনা যায় বঙ্গবন্ধু স্লোগান দেন, 'ভারত-বাংলাদেশ ভাই ভাই'।

এ ছাড়া ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ওয়েবসাইটেও লিখিত আকারে পাওয়া যায়।  

লিখিত দেখতে ক্লিক করুন:  https://albd.org/bn/articles/news/32346/ 

বঙ্গবন্ধু তার ভাষণে বলেন, 'প্রায় ৩০ লাখ মানুষকে মেরে ফেলা হয়েছে, ২য় বিশ্বযুদ্ধে, ১ম বিশ্বযুদ্ধেও এত মানুষ, এত সাধারণ জনগণ মৃত্যুবরণ করে নাই, শহীদ হয় নাই-৪ যা আমার সাত কোটির বাংলায় করা হয়েছে। আমি জানতাম না আমি আপনাদের কাছে ফিরে আসব, আমি খালি একটা কথা বলেছিলাম, তোমরা যদি আমাকে মেরে ফেলে দাও কোনো আপত্তি নাই মৃত্যুর পরে তোমরা আমার লাশটা আমার বাঙালির কাছে দিয়ে দিও এই একটা অনুরোধ তোমাদের কাছে'।

তিনি ওই ভাষণে আরও বলেন, 'আমি মোবারকবাদ জানাই ভারতবর্ষের প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধীকে, আমি মোবারকবাদ জানাই ভারতবর্ষের জনগণকে, আমি মোবারকবাদ জানাই ভারতবর্ষের সামরিক বাহিনীকে, আমি মোবারকবাদ জানাই রাশিয়াকে জনগণকে, আমি মোবারকবাদ জানাই জার্মানি, ব্রিটিশ, ফ্রান্স সব জায়গার জনগণকে তাদের আমি মোবারকবাদ জানাই যারা আমাকে সমর্থন করেছে'।

বঙ্গবন্ধু আরো বলেন, 'আমি মোবারকবাদ জানাই আমেরিকার জনসাধারণকে, মোবারকবাদ জানাই সারা বিশ্বের মজলুম জনগণকে-যারা আমার এই মুক্ত সংগ্রামকে সাহায্য করেছে। আমার বলতে হয় এক কোটি লোক এই বাংলাদেশ থেকে ঘরবাড়ি ছেড়ে ভারতবর্ষে আশ্রয় নিয়েছিল, ভারতের জনসাধারণ মিসেস ইন্দিরা গান্ধী তাদের আশ্রয় দিয়েছেন-তাদের আমি মোবারকবাদ না দিয়ে পারি না। যারা অন্যরা সাহায্য করেছেন তাদেরামার মোবারকবাদ দিতে হয়'।

তবে মনে রাখা উচিত বাংলাদেশ স্বাধীন রাষ্ট্র।বাংলাদেশ স্বাধীন থাকবে বাংলাদেশকে কেউ দমাতে পারবে না। বাংলাদেশকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করে লাভ নাই। আমি যাবার আগে বলেছিলাম ও বাঙালি এবার তোমাদের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম আমি বলেছিলাম ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোল তোমরা ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তুলে সংগ্রাম করছো আমি আমার সহকর্মীদের মোবারক বাদ জানাই। আমার বহু ভাই বহু কর্মী আমার বহু মা-বোন আজ দুনিয়ায় নাই তাদের আমি দেখবো না।

আমি আজ বাংলার মানুষ কে দেখলাম, বাংলার মাটি কে দেখলাম, বাংলার আকাশ কে দেখলাম বাংলার আবহাওয়া কে অনুভব করলাম। বাংলাকে আমি সালাম জানাই আমার সোনার বাংলা তোমায় আমি বড় ভালোবাসি বোধহয় তার জন্যই আমায় ডেকে নিয়ে এসেছে।

ভাষণের শেষ পর্যায়ে বঙ্গবন্ধু বলেন, “একদিন বলেছিলাম ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তুলো,একদিন বলেছিলাম যার যা কিছু আছে তা নিয়ে যুদ্ধ করো,বলেছিলাম এ সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম এ জায়গায় ৭ মার্চ। আজ বলছি তোমরা ঠিক থাকো একতাবদ্ধ থাকো,কারো কথা শুনো না।

 

ইনশাল্লাহ স্বাধীন যখন হয়েছি স্বাধীন থাকবো একজন মানুষ এই বাংলাদেশে বেঁচে থাকতে এই সংগ্রাম চলবে। আজ আমি আর বক্তৃতা করতে পারছি না একটু সুস্থ হলে আবার বক্তৃতা করবো। আপনারা আমাকে মাফ করে দেন আপনারা আমাকে দোয়া করেন আপনারা আমার সাথে সকলে একটা মুনাজাত করেন।

Link copied!