জুন ৮, ২০২২, ০৭:১৭ পিএম
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কে জিতবে তাতে মাথাব্যথা নেই তবে নির্বাচনের ফলে যাতে জনরায়ের প্রতিফলন ঘটে সেদিকে যুক্তরাষ্ট্রের নজর রয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস।
বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, “আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কে জিতবে তাতে যুক্তরাষ্ট্রের কিছু যায় আসে না। যুক্তরাষ্ট্র এমন একটি নির্বাচন চায়, যেখানে বাংলাদেশের জনগণ তাদের নেতা নির্বাচন করতে পারবে “
পুরো নির্বাচন এবং নির্বাচন প্রক্রিয়ায় নির্বাচন কমিশন (ইসি) খুবই গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করে পিটার ডি হাস বলেন, “অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে শুধু নির্বাচন কমিশন নয়, সরকার, রাজনৈতিক দল, গণমাধ্যম, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ও জনগণের জোরালো অঙ্গীকার প্রয়োজন।”
নির্বাচন আয়োজনে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো পরামর্শ ছিল কিনা-সাংবদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, “অবশ্যই না। এতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কোনো ভূমিকা নেই। এটি নির্বাচন কমিশন এবং পুরো বাংলাদেশিদের, এটা আমাদের বিষয় না।“
সিইসিসহ অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারদের সঙ্গে সাক্ষাতের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তেরাষ্ট্রের এই রাষ্ট্রদূত বলেন, “আমি এখানে এসেছি তিন মাস হলো। এর আগে আমি দুই-তিন জায়গায় দেখা করেছি। তার অংশ হিসেবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনারদের সঙ্গে দেখা করেছি। বাংলাদেশে কী হচ্ছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে এর অংশীদার হতে পারে তা বোঝার চেষ্টা করছি।”
বাংলাদেশে মার্কিন রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিযুক্ত হওয়ার তিন মাসের মধ্যে বাংলাদেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করছেন এই রাষ্ট্রদূত। এরই অংশ হিসেবে তিনি সিইসির সঙ্গে এ বৈঠক করেন।
এ সময় প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, “মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে নির্বাচনের অনেক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তার অনেক কথার সঙ্গে আমরা একমত। তারা ভালো নির্বাচন দেখতে চায়। কমিশনরেও একই রকম চাওয়া। আমরা চাই সব দলের অংশগ্রহণে গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন।
সিইসি বলেন, “ভোটকেন্দ্রগুলোয় সম্ভব হবে সিসি ক্যামেরা রাখার চেষ্টা করা হবে। সীমাবদ্ধতার মধ্যেও ভালো নির্বাচন করা হবে। ইভিএম নিয়ে রাষ্টদূতের সঙ্গে কথা হয়নি, চ্যালেঞ্জ নিয়ে কথা হয়নি। দলগুলোর বিপরীতমুখী অবস্থানের মধ্যেও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে ভোট হবে বলে আশ্বাস দিয়েছি।”
মার্কিন রাষ্ট্রদূতের মনোভাব ব্যাখ্যা করতে গিয়ে সিইসি বলেন, “উনিও (পিটার ডি হাস) বিশ্বাস করেন আন্তরিক পরিবেশে নির্বাচন হবে। রাজনৈতিক দলগুলার মধ্যে হয়তো সমঝোতা হতে পারে। এটা রাজনৈতিক নেতৃত্ব বুঝবেন।”
মার্কিন দূত অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের প্রত্যাশাও রেখেছেন উল্লেখ করে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, “আমরা চাই। উনিও চেয়েছেন নির্বাচন ফেয়ার হলে ভালো হয়। নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে। সহসা দলগুলোর সঙ্গেও সংলাপে বসবে ইসি। অংশগ্রহণমূলক কীভাবে করা যায় সে দিকটা আমাদের তরফ থেকে তাদের সঙ্গে আলোচনা করলে একটা উপায় বের হবে।”
প্রসঙ্গত, সংবিধান অনুযায়ী আগামী বছরের নভেম্বর থেকে ২০২৪ সালের জানুয়ারির মধ্যে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা রয়েছে।