অক্টোবর ১০, ২০২১, ১২:৫০ পিএম
পারমাণবিক শক্তির দেশ হিসেবে বাংলাদেশ নিজেদের গড়ে তুললো এবং এই শক্তি শান্তির জন্য ব্যবহৃত হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রবিবার (১০ অক্টোবর) বেলা ১১ টায় গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ইউনিট-১ এর চুল্লি (রি-অ্যাক্টর প্রেসার ভেসেল) বসানোর কাজের উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী এই কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতা স্বাধীনতা অর্জনের জন্য সারাটি জীবন চরম ত্যাগ স্বীকার করেছেন। সবসময়ই তিনি এ অঞ্চলের দুঃখী মানুষের মুখে কিভাবে হাসি ফুটানো যায়, কীভাবে এ অঞ্চলের উন্নয়ন করা যায় তা ভেবেছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরো বলেন, ‘জাতির পিতা স্বাধীনতার আগেই এই দেশের মানুষের জন্য বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধানকল্পে বিদ্যুতায়নের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে অনুধাবন করেছিলেন। তারই দাবীর পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তান সরকার ১৯৬১ সালে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করে’।
তিনি আরো বলেন, ‘তখন জমি অধিগ্রহণসহ বেশ কিছু কাজ সম্পন্ন হয়েছিল। কিন্তু, ১৯৭০ সালে পাকিস্তান সরকার হঠাৎ করে কাজ বন্ধ করে দিয়ে প্রকল্পটি পশ্চিম পাকিস্তানে সরিয়ে নিয়ে বিরাজমান বৈষম্যমূলক আচরণের পুণঃপ্রকাশ ঘটায়’।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগের নির্দেশও দেন। সে অনুযায়ী কাজও শুরু হয়েছিল। দুর্ভাগ্য, ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট ঘাতকেরা জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। এই মেগা প্রকল্পটিসহ সকল জনবান্ধব ও উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড থেমে যায়’।
জাতির পিতার স্বপ্নের প্রকল্প ছিল বলেই এরপর দীর্ঘ ২১ বছর কোন সরকারই রূপপুর প্রকল্প বাস্তবায়নে উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। অবশেষে ১৯৯৬ সালে জনগণের ভোটে জয়ী হয়ে আমরা সরকার গঠন করি। ২০২০ সালের মধ্যে ‘সবার জন্য বিদ্যুৎ’ সরবরাহের লক্ষ্য নিয়ে ‘ভিশন স্টেটমেন্ট ও পলিসি স্টেটমেন্ট অন পাওয়ার সেক্টর রিফর্মস’ প্রণয়নও অনুমোদন করি।
জাতির পিতার স্বপ্নের ‘রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প’ বাস্তবায়নের কার্যক্রম শুরু করি। বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। সে সময় আমরা পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করে ‘বাংলাদেশ নিউক্লিয়ার পাওয়ার অ্যাকশন প্লান-২০০০’ প্রণয়ন করি। ১৯৯৬ সলে আমরা সরকারে এসে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা পেয়েছিলাম মাত্র ১ হাজার ৬৪২ মেগাওয়াট, ২০০০-২০০১ অর্থবছরে তা আমরা ৪ হাজার ৫ মেগাওয়াটে উন্নীত করেছিলাম।
এসময় প্রধানমন্ত্রী রূপপুর প্রকল্পে রাশিয়া সহায়তার কথা স্বীকার করে বলেন, ‘বন্ধুরাষ্ট্র রাশিয়া এটি বাস্তবায়নে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ায় আমি রাশিয়ান ফেডারেশনের সরকার এবং সে দেশের বন্ধুপ্রতিম জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি’।