ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান ইস্যুতে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে উত্থাপিত নিন্দা প্রস্তাবে ভোট না দিয়ে বিরত থেকে বাংলাদেশ সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং।
রবিবার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে চীনা দূতাবাস আয়োজিত ‘ডায়ালগ উইথ চায়না’ শীর্ষক আলোচনায় তিনি এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানের সহ-আয়োজক ছিল ইংরেজি দৈনিক বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড ও ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ (ডিকাব)। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের সম্পাদক ইনাম আহমেদ।
অনুষ্ঠানে বিবাদমান রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে শান্তিপূর্ণ সমাধানের তাগিদ দিয়ে লি জিমিং বলেন, “জাতিসংঘ সনদ অনুযায়ী রাশিয়া-ইউক্রেন আলোচনা চায় চীন। আবেগ নয়, ঠাণ্ডা মাথায় রাশিয়া-ইউক্রেন সমস্যার সমাধান করতে হবে। উভয় পক্ষ চাইলে আলোচনায় সহায়তা করতে পারে চীন।
তিনি বলেন, ইউক্রেনকে প্রথমে দুশ্চিন্তা কমিয়ে মানবিক সহায়তা বৃদ্ধি করতে হবে। অনুসন্ধান করতে হবে কেন এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, ইন্দোপ্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজি কোয়াডসহ এই অঞ্চলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে বিভিন্ন উদ্যোগের বিরোধিতা করে আসছে চীন। এসব উদ্যোগ নিয়ে বাংলাদেশ বিচক্ষণ সিদ্ধান্ত নেবে বলে আমরা প্রত্যাশা করি।
তাইওয়ান ইস্যু চীনের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার উল্লেখ করে লি জিমিং বলেন, “এক চীন নীতি বিশ্বের সব দেশের কাছেই স্বীকৃত। ইন্দোপ্যাসিফিক করিডোর আইপিএস, কোয়াডসহ এই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে বিভিন্ন উদ্যোগ চীন বিরোধী।
তিনি বলেন, উইঘুরে মুসলিম নির্যাতনের ঘটনা বলে পশ্চিমারা অপপ্রচার চালিয়ে আসছে। চীন উইগুর ইস্যুতে জাতিসংঘের তদন্ত উদ্যোগকে স্বাগত জানায় বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতন থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন বিষয়ে চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, “বেইজিং রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান চায়। এই সংকটের সমাধানে এখনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি নেই। তবে রাখাইনে নিরাপদ পরিবেশ তৈরিতে মিয়ানমারের সাথে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে চীন।”
বাংলাদেশে সামরিক ঘাঁটি নির্মাণ করবে না চীন
এদিকে, বাংলাদেশসহ অন্য কোনো দেশে চীন তাদের সামরিক ঘাঁটি করবে না বলে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন লি জিমিং। তবে কোনো দেশ সামরিক সরঞ্জাম রক্ষণাবেক্ষণে সহায়তা চাইলে, চীন সহায়তা দিয়ে থাকে বলে জানান চীনা রাষ্ট্রদূত।
‘বাংলাদেশে মিসাইল তৈরির কারখানা তৈরি করছে চীন, উদ্বিগ্ন ভারত’- জাপানের সংবাদমাধ্যম নিক্কেই এশিয়া’য় প্রকাশিত এমন প্রতিবেদনের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে চীনা রাষ্ট্রদূত এসব কথা বলেন।