কারান্তরীণ লেখক মুশতাক আহমেদ মারা গেছেন। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে তিনি কাশিমপুর কারাগারে মারা যান। তার বিরুদ্ধে ‘রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রের' অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলা করেছিল র্যাব। গুরুতর অসুস্থ মুশতাক আহমেদ গত বছরের মে মাস থেকে কারাবন্দী ছিলেন। সেখানেই তিনি মারা গেলেন। তার বয়স হয়েছিল ৫৩ বছর।
কারা সূত্র জানিয়েছে, মুশতাকে কারাগারে মাথা ঘুরে পড়ে যান। সেখান থেকে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মোহাম্মদ শরীফ জানান, কাশিমপুর কারাগার থেকে ওই বন্দিকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। তার মৃত্যুর সঠিক কারণ এখনো জানা যায়নি। ময়নাতদন্ত শেষে তার মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা সম্ভব হবে।
মুশতাক আহমেদ লালমাটিয়ায় স্ত্রী ও বৃদ্ধ বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকতেন। তিনি বাবা-মায়ের একমাত্র পুত্রসন্তান। বাণিজ্যিকভাবে দেশে কুমির চাষের অন্যতম প্রবক্তাও ছিলেন তিনি। পারিবারিক সূত্র জানিয়েছে, শুক্রবার সকালে মুশতাক আহমেদের মৃতদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানানো হয়েছে। মুশতাকের স্ত্রী লিপা আক্তার মানসিক রোগে আক্রান্ত হয়েছেন সম্প্রতি।
গত ১১ জানুয়ারি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর, লেখক মুশতাক আহমেদ ও রাষ্ট্রচিন্তার কর্মী দিদারুল ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। গত বছরের মে মাসে রমনা থানায় মুশতাকসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে র্যাব তিনটি মামলা করে।
গত সেপ্টেম্বরে এসব মামলায় গ্রেপ্তার মিনহাজ মান্নান ও দিদারুল ভূঁইয়া জামিনে মুক্তি পান। কার্টুনিস্ট কিশোর ও লেখক মুশতাকের জামিন হয়নি। ছয় বার মুশতাকের জামিন আবেদন নাকচ হয়। ফলে কারামুক্তি হয়নি এই লেখকের। মুশতাক ‘কুমির চাষির ডায়েরি’ বইয়ের লেখক। এ ছাড়া তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখতেন।
কারাগারে থাকা কার্টুনিষ্ট কিশোরও অসুস্থ্য বলে জানালেন তার বড় ভাই আহসান কবীর। তিনি গণমাধ্যমকে জানান, ২৩ ফেব্রুয়ারি কিশোর, মুশতাকদের ঢাকার সিএমএম আদালতে হাজির করা হয়েছিল। কিশোরকে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটতে দেখেন। তাকে কিশোর বলেছেন, গ্রেপ্তারের পর নির্যাতন করা হয়েছে, যার কারণে তার পায়ে সংক্রমণ হয়েছে। কানে পুঁজ হচ্ছে। তার ডায়বেটিস বেড়ে ১৮ হয়েছে। চোখেও কম দেখছেন।