সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২১, ১০:১১ পিএম
দেশে ১৮ বছরের নিচে সবাইকে শিশু বিবেচনা করা হবে কি না, তা নিয়ে চিন্তা-ভাবনার সময় এসেছে। বৃহস্পতিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর মধুবাগে বীর মুক্তিযোদ্ধা আসাদুজ্জামান খান কমপ্লেক্স অডিটোরিয়ামে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল এ মন্তব্য করেন।
‘সবার হোক একটাই পণ, কিশোর অপরাধ করবো দমন’ শীর্ষক কিশোর অপরাধ দমনে জনসচেতনতামূলক টিভিসি উদ্বোধন উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, ‘বর্তমানে নিয়মিত পড়াশোনাকারীরা ১৮ বছর বয়সে বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে যায়। আমাদের মনে হয়, শিশুদের ১৮ বছরের এ সময়সীমা নিয়ে চিন্তাভাবনা করার সময় এসেছে। আন্তর্জাতিক আইনের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হওয়ায় তাদের সঙ্গে সমন্বয় করে এটি করা হয়েছে। কিন্তু এর ফলে দেশে কিশোর অপরাধ দমনে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বেগ পেতে হচ্ছে, তাই বিষয়টি নিয়ে নতুন করে ভাবনার সময় এসেছে’।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলছে, এটি ধরে রাখার প্রথম শর্ত হচ্ছে নিরাপত্তা। আমাদের কিশোররা নানা ধরনের অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। আমাদের শঙ্কা ছিল কোভিডকালীন স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকার কারণে কিশোরদের নিয়ে যে শঙ্কাটা ছিল তা হয়নি, দেশ অনেক অন্য অনেক দেশের তুলনায় ভালো আছে’।
এসময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অভিভাবকদের উদ্দেশে বলেন, ‘সময় থাকতে সন্তানকে উপযুক্ত শিক্ষা দিন, তাদের সঙ্গে কথা বলুন। সন্তানরা কোথায় যাচ্ছে, কী করছে খেয়াল করুন। আমাদের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করছে। তবে আপনি যদি আপনার সন্তানের প্রতি যদি খেয়াল না রাখেন তাহলে এটি আমরা কখনোই পারব না’।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘তিন বছর ধরে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য কিশোর গ্যাং একটা বিশাল চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে‘। কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নতুনভাবে ভাবার আহ্বান জানান তিনি।
তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের সংসদে নতুন নতুন আইন প্রণয়ন হচ্ছে। আদালতও অনেক নির্দেশনা দিচ্ছেন। সেক্ষেত্রে কিশোর আইনও হালনাগাদ হয়েছে। সে হিসেবে একজন ব্যক্তি ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত শিশু হিসেবে গণ্য হয়। কিন্তু বর্তমানে দেশে আইন পরিবর্তন করার কারণে যেটা হয়েছে তাতে যে যুবকে পরিণত হয় তাকেও শিশু হিসেবে গণ্য করা হয়। ফলে কিশোর গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না’।
‘বর্তমানে আইন অনুযায়ী, কিশোর অপরাধীকে গ্রেপ্তার করা যাবে না। তাদেরকে সংশোধনাগারে পাঠাতে হবে। সংশোধনাগারের সংখ্যাও কম। ফলে কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণ কঠিন হয়ে যাচ্ছে’, যোগ করেন বেনজীর আহমেদ।
র্যাব মহাপরিচালক (ডিজি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান নাছিমা বেগম, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দীন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) কর্নেল কে এম আজাদ।