মে ৩১, ২০২২, ০৩:৫৯ পিএম
নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আলমগীর বলেছেন, “আমরা সকল জায়গায় নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি করছি। কোথাও যদি কেউ পেশীশক্তি ব্যবহার করে নির্বাচনকে প্রভাবিত করে সুষ্ঠু পরিবেশে বাধা দেয় তবে সে জায়গার নির্বাচন প্রত্যাহার করা হবে।”
মঙ্গলবার দুপুরে নোয়াখালীর হাতিয়ার দুই ইউনিয়নের একাধিক ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বার প্রার্থীরা ইসি ভবনের সামনে অবস্থান বিষয়ে জানতে চাইলে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন কমিশন ভবনে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
সে সময় তিনি বলেন, "এটা আপনাদের কাছে প্রথম শুনলাম। আর আমরা কর্মকর্তা পাঠিয়েছিলাম তারাও বললো। আমরা তাদের বলেছি, উনাদের যদি কেউ থাকে তাহলে তাকে আমার কাছে নিয়ে আসেন।”
ভোটে যদি কেউ বাধা দেয় তাহলে ইসির ভূমিকা কী হবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “বাধা দিয়ে কোন লাভ হবে না। যেকোন উৎস থেকে যদি তথ্য পাই যে প্রার্থীদের বাধা দেওয়া হয়েছে, ভোটারকে বাধা দেওয়া হয়েছে অথবা নমিনেশন পেপার সাবমিট করতে দেওয়া হয়নি। তাহলে প্রথমে আমরা যেটা করি শিডিউল স্থগিত করে দেই যাতে অন্য কোন প্রার্থী যদি থাকে তাহলে সে যেনো পুনরায় আবার নমিনেশন দিতে পারে। যদি এমন হয় ওইখানে প্রার্থী নিরাপদ নয় তাহলে পাশ্ববর্তী জেলা বা উপজেলায় তাদের নমিনেশন সাবমিট করার সুযোগ দেই।”
তিনি আরো বলেন, “প্রার্থী, ভোটারদের নিরাপত্তা, প্রচারের সুযোগ করে দেওয়া এইগুলো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্ব। দায়িত্ব পালনে কারও অবহেলা পেলে তার বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেবো। আমরা মনে করি এইগুলা করে কোন লাভ হবেনা। নির্বাচনের দিন যদি ভোটারকে আসতে বাধা দেওয়া হয় তাহলে সেই ভোটকেও আমরা বাতিল করে দিব। যারা বুদ্ধিমান ও সচেতন তারা এইগুলো করবে না বলে আমরা মনে করি।”
হাতিয়ার দুই ইউপি প্রার্থীদের দাবি ছিল সেখানকার প্রশাসনকে জানিয়ে কোন লাভ হয়নি। সুষ্ঠ নির্বাচনের লক্ষ্যে ওই এলাকার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি), উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সার্কেল এসপিকে প্রত্যাহারসহ সুষ্ঠু নির্বাচনী পরিবেশ নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন তারা। তবে এ প্রসঙ্গে মো. আলমগীর বলেছেন, প্রত্যাহার তো সমাধান না। এখানে কার দায়িত্বহীনতা আছে সেটা আমরা দেখবো। একটা জিনিস বুঝতে হবে প্রশাসনে যারা থাকে তাদের সময় খুবেই অল্প। এটা যদি প্রশাসনের নাকের ডগায় হয় তাহলে এক জিনিস, আর যদি হয় দূরে, প্রেজেন্সে হয় নাই.. কারণ প্রশাসনতো সবার বাড়ি বাড়ি থাকতে পারবে না। যদি দেখা যায় ঘটনা অনেক দূরে হইছে, প্রশাসনে বাইরে বা সম্মুখে না। অথবা এমন একটা সময় ঘটনা হইছে যেখানে প্রশাসন দূরে ছিল। পরবর্তীতে দেখা গেলো নমিনেশন পেপার সাবমিটের টাইম শেষ হয়ে গেছে। তখন তো আর প্রশাসনের করার কিছুই থাকছেনা। সামনে কিছু ঘটলেও প্রশাসন সেখানে যদি নিশ্চুপ থাকে তাহলে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেবো।
সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “ভোটে কেউ বাধা দিলে দেশের প্রচলিত আইনে মামলা হবে। আপনারা দেখবেন তার প্রশাসন তার বিরুদ্ধে মামলা নিয়েছে কি না। কেউ যদি পেশী শক্তি প্রয়োগ করে তাহলে ইসি তার ক্ষমতাবলে মামলা দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া ও ভোট বাতিল করে দেওয়া বা প্রার্থীর (অভিযুক্ত) প্রার্থীতা বাতিল করা।”
উল্লেখ্য সকাল ১১ টায় সুষ্ঠ নির্বাচনের দাবিতে নোয়াখালীর হাতিয়ার দুই ইউনিয়নের একাধিক ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বার প্রার্থীরা ইসি ভবনের সামনে অবস্থান নেয়।
এসময় তারা অভিযোগ করেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য (নোয়াখালী-৬) আয়েশা ফেরদাউসের স্বামী মোহাম্মদ আলীর লোকদের অত্যাচারে ভোটের প্রচার চালাতে পারছেন না। স্থানীয় প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করেও তারা কোনো প্রতিকার পাননি। এ কারণে কাফনের কাপড় পরে, বিষের বোতল নিয়ে সুষ্ঠু ভোটের পরিবেশ দাবি করে ইসি সামনে অবস্থান নেন তারা। পরে বেলা পৌনে ১২ টার দিকে প্রার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে শেরে বাংলা নগর থানা পুলিশ।