সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২১, ০৭:৫৮ পিএম
ইভ্যালির নির্বাহী পরিচালক (সিইও) মোহাম্মদ রাসেলের মুক্তির দাবিতে করা শাহবাগের বিক্ষোভ মিছিল পুলিশের ধাওয়ায় ছত্রভঙ্গ হয়ে গেছে। শুক্রবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৩ টায় শাহবাগ মোড়ে ইভ্যালির নির্বাহী পরিচালকের মুক্তির দাবিতে প্রতিষ্ঠানটির ক্রেতা এবং বিক্রেতারা বিক্ষোভ শুরু করে। পরে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ধাওয়া দিলে মিছিলটি ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।
শাহবাগ মোড়ে শুরু হওয়া বিক্ষোভ মিছিলটি শাহবাগ মোড় থেকে পাবলিক লাইব্রেরীর সামনে দিয়ে ঘুরে আবার জাতীয় জাদুঘরের সামনে সমবেত হয়। বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে প্রথমে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে। তাতে বিক্ষোভকারীরা না সরলে কিছুক্ষণ পর শাহবাগ থানা পুলিশ তাদের ধাওয়া দিয়ে সরিয়ে দেয়। পুলিশের ধাওয়ায় ছত্রভঙ্গ হয়ে বিক্ষোভকারীরা যে যার মতো নিরাপদ জায়গায় আশ্রয় নেন।
ইভ্যালিতে প্রায় ১০ লাখ টাকার পণ্য অর্ডার করেছেন মোহাম্মদ শাওন। তিনি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান আমাজান-ফ্লিপকার্ডের সাথে তিনি নয় বছর ধরে ব্যবসা করছেন। পুলিশের ধাওয়ার পরেও শাওন শাহবাগে উপস্থিত তার আরও ৫ বন্ধুকে ইংগিত করে, দ্য রিপোর্টকে জানান, ‘আমরা ৫ বন্ধু মিলে প্রায় ২৫ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করেছিলাম ইভ্যালিতে। তিনি জানান, ফেসবুক লাইভে এসে রাসেল ভাই ৬ মাস সময় চেয়েছেন। সেটা না দিয়ে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এখন আমাদের পাওনা পরিশোধ করবে কে? আমরা চাই রাসেল ভাইকে আরও ছয়মাস সময় দেয়া হোক।
রাসেলের মুক্তি দাবি করে ইভ্যালির আরেকজন ক্রেতা মোহাম্মদ মুন্না বলেন, ফেসবুক লাইভে এসে রাসেল ভাই ছয় মাস সময় চাওয়ার পরেও হুট করে তাকে গ্রেফতার করা উচিৎ হয়নি। তিনি মাঠে না থাকলে আমদের টাকার কি হবে? সরকার কি আমাদের পাওয়া পরিশোধ করবে? প্রশ্ন রাখেন তিনি।
ইভ্যালিতে প্রায় ৫ লক্ষ টাকার পণ্য অর্ডার করা আছে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শেখ মোহাম্মদ সোহানের। তিনি দ্য রিপোর্ট কে জানান, অনেক প্রোডাক্টসের ডেলিভারি তিনি দিচ্ছিলেন। উনাকে না ছাড়লে আমাদের পাওয়া পরিশোধ করবে কে? ছয়মাস সময় দেয়া উচিৎ সরকারের। যদি না মুক্তি দেয়া হয় কি করবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন আমরা জামিন আবেদন করবো।
শুক্রবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকালে, অর্থ আত্মসাৎ এবং প্রতারণা মামলায় মোহাম্মদ রাসেলেকে আদালতে তুলে ১০ দিনের রিমান্ড চাইলে ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
এদিকে শুক্রবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকাল এগারোটায় র্যাবের সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ইভ্যালির নির্বাহী পরিচালকের ই-কমার্সের নামে মানুষের কষ্টার্জিত অর্থ হাতিয়ে নেয়ার বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন র্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
এর আগে, ১৬ সেপ্টেম্বর (বৃহস্পতিবার) বিকালে রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে র্যাব অভিযান চালিয়ে ইভ্যালির নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ রাসেল এবং প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যানকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেফতারের পরপরই রাসেলের মুক্তির দাবিতে ধানমন্ডিতে অবস্থিত প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কার্যালয়ের সামনে অবস্থান করতে থাকা ক্রেতা এবং বিক্রেতারা সেখান থেকেই তার মুক্তির দাবিতে শাহবাগের এই বিক্ষোভের ঘোষণা দেন।