নতুন বছরে বিশ্বজুড়ে কৃষিপণ্যের সরবরাহ সংকটে পড়ার আশঙ্কা

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

ডিসেম্বর ২৭, ২০২৩, ০৫:১৪ পিএম

নতুন বছরে বিশ্বজুড়ে কৃষিপণ্যের সরবরাহ সংকটে পড়ার আশঙ্কা

ছবি: সংগৃহীত

চলতি বছরে বিশ্বব্যাপী বেড়েছে খাদ্যপণ্যের দাম। ফলে দানাদার শস্য ও তেলবীজ চাষে অধিক আগ্রহী হয়ে উঠেছেন কৃষকেরা। তারপরও অর্থনীতিবিদ ও বাজার বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, ২০২৪ সালে বিশ্বব্যাপী পণ্য সরবরাহ সংকটের মুখে পড়বে। এর পেছনে শীর্ষ উৎপাদনকারী দেশগুলোয় এল নিনোর প্রভাব, রফতানি নিষেধাজ্ঞা ও বায়োডিজেলের উচ্চ চাহিদাকে দায়ী করছেন তারা।

অর্থনীতিবিদদের মতে, নতুন বছরে কৃষিপণ্যের সরবরাহ ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারে। কারণ বিশ্বজুড়ে এখনো সরবরাহ ঘাটতি ও খাদ্য মূল্যস্ফীতি রয়েছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

সিডনির কৃষি ব্রোকারেজ আইখন কমোডিটিসের উপদেষ্টা পরিষেবার পরিচালক ওলে হাউ বলেছেন, ‘২০২৩ সালে শীর্ষ উৎপাদনকারী অঞ্চলগুলোয় ভালো ফলন হওয়ায় সরবরাহ পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে আমরা এখনো ঘাটতির হুমকি থেকে মুক্ত নই।’

ওলে হাউ আরও বলেন, ‘আমাদের কাছে অন্তত এপ্রিল-মে পর্যন্ত এল নিনোর পূর্বাভাস রয়েছে। ব্রাজিলে প্রায় নিশ্চিতভাবেই এ বছর কম ভুট্টা উৎপাদন হতে যাচ্ছে। অন্যদিকে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে চীনের রেকর্ড পরিমাণ গম ও ভুট্টা আমদানি আমাদের অবাক করেছে।’

এ ছাড়াও এশিয়া অঞ্চলে নতুন বছরে ধানের ফলনও কম হতে পারে। কারণ শুষ্ক আবহাওয়াজনিত কারণে এ অঞ্চলের জলাশয়গুলো শুকিয়ে আসছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুষ্ক আবহাওয়ার প্রভাব পড়বে অস্ট্রেলিয়াতেও। এল নিনোর প্রভাবে এরই মধ্যে এশিয়ার বৃহৎ অঞ্চলে শুষ্কতা ছড়িয়ে পড়েছে এবং ২০২৪ সালের প্রথমার্ধেও শুষ্কতা অব্যাহত থাকার পূর্বাভাস রয়েছে। ফলে শীর্ষ কৃষিপণ্য রফতানিকারক ও আমদানিকারক দেশগুলোয় চাল, গম, পাম অয়েলসহ অন্যান্য কৃষিপণ্যের সরবরাহ ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারে।

চাল ছাড়াও ভারতে অন্যান্য কৃষিপণ্যের উৎপাদনও হুমকির মুখে পড়েছে। বাজার বিশ্লেষকেরা বলছেন, শুষ্ক আবহাওয়ার কারণে আসন্ন বছরে গমের উৎপাদনও কমে যেতে পারে। এমনিতেই ভারতে গমের মজুত গত সাত বছরের মধ্যে সর্বনিম্নে পৌঁছেছে, এর মধ্যে যদি উৎপাদন আরও কমে যায়, তাহলে ভারতকে ২০২৪ সালে অবধারিতভাবে গম আমদানির পথে হাঁটতে হবে।

বিশ্বের দ্বিতীয় শীর্ষ গম রফতানিকারক দেশ অস্ট্রেলিয়া। আগামী এপ্রিলে দেশটির কৃষকরা শুষ্ক মাটিতে বীজ বপন করতে বাধ্য হতে পারেন। এতে আশঙ্কাজনক হারে ফলন কমে যেতে পারে দেশটির। এমনকি তীব্র তাপমাত্রার কারণে বছরে তিন ফসল চাষের স্বপ্ন ভেস্তে যেতে পারে। ফলে চীন, ইন্দোনেশিয়ার মতো গম আমদানিকারক দেশগুলো উত্তর আমেরিকা, ইউরোপ ও কৃষ্ণ সাগরীয় অঞ্চলের রফতানিকারক দেশগুলোয় সরবরাহ চাপ বাড়িয়ে দিতে পারে।

Link copied!