ঈদে বিক্রি কমেছে ৭০ শতাংশ!

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

মে ২০, ২০২১, ০১:৫৬ পিএম

ঈদে বিক্রি কমেছে ৭০ শতাংশ!

লকডাউন উপেক্ষা করে মার্কেট ও শপিংমল আগে খোলার অনুমতি মিললেও বেচাবিক্রি অনেক কম হয়েছে বলে দাবি করছেন ব্যবসায়ীরা। যার ফলে প্রত্যাশার চেয়ে প্রায় ৭০ শতাংশ কম বিক্রি হয়েছে। টাকার অঙ্কে যা প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকা। তবে করোনা পরিস্থিতির আগের চেয়ে এই বিক্রিবাট্টা ১৪ থেকে ১৯ হাজার কোটি টাকা কম। 

ঈদকে কেন্দ্র করে বাণিজ্য কত?

করোনা পরিস্থিতির আগে ঈদকে কেন্দ্র করেই দোকান, শপিংমল ও ফ্যাশন হাউজগুলো ব্যবসা করে থাকে। সারাবছরের আয়ের ৬০ থেকে ৭০ শতাংশই আসে দুই ঈদকে কেন্দ্র করে। আর এরমধ্যে ঈদুল ফিতরেই বিক্রি বেশি হয়। করোনা পরিস্থিতির আগে প্রতি ঈদে ২০ থেকে ২৫ হাজার কোটি টাকার বাণিজ্য হত দোকান মালিকদের। কিন্তু গত বছর করোনার কারনে ২ হাজার কোটি টাকা লেনদেন হয় বলে জানায় তারা।

লেনদেন হয়েছে মাত্র ৬ হাজার কোটি টাকা

চলতি বছরে অগ্রীম মার্কেট খোলার দাবি করেন ব্যবসায়ীরা। তবে দোকান খুললেও আশানুরূপ ব্যবসা হয়নি বলে জানায় তারা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, এবার ব্যবসা কম হবে ধারণা করেই মার্কেট খোলা হয়। কিন্তু এতটা কম হবে আশা করেননি কেউই। স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় এবার অর্ধেকেরও কম ব্যবসা হয়েছে। দোকান মালিকদের দাবি, এর পরিমাণ ৩০ শতাংশও নয়।

বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, গত বছর তিনটি বড় উৎসবের বাজার হারিয়ে খাদের কিনারায় ছিলেন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু এ বছরও আশানুরূপ বেচাবিক্রি হয়নি।  

Helal

স্বাভাবিক সময়ে ঈদে ২৫ হাজার কোটি টাকার বিপরীতে এবার ৬ হাজার কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে বলে জানান হেলাল উদ্দিন

প্রতিবছর ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে সারাদেশে ২০ থেকে ২৫ হাজার কোটি টাকার বাণিজ্য হলেও চলতি ঈদে করোনা পরিস্থিতির পরও  ১০ থেকে ১৫ হাজার কোটি টাকার বাণিজ্য হবে বলে ধারণা করা হয়েছিল। সেখানে ৩০ থেকে ২৫ শতাংশেরও নিচে নেমেছে। ৬ হাজার কোটি টাকার ব্যবসাও হয়নি বলে জানান তিনি।

বিক্রি কম হবার কারন

ঈদ উপলক্ষে অগ্রীম মার্কেট খুললেও বেচাকেনা কম হবার কারন হিসেবে গণপরিবহ বন্ধ থাকার কথা বললেন ব্যবসায়ীরা। এছাড়া করোনা পরিস্থিতি খারাপ হবার দিকে যাওয়ার কারনে অনেকেই ঝুঁকি নিতে চায়নি। এদিকে শেষ মুহুর্তে আভ্যন্তরীন গণপরিবহন খুলে দিলেও দুরপাল্লার যানবাহন চালু ছিল না। অনেকেই পরিবার পরিজনের সাথে ঈদ না করার কারনে পোশাক ও উপহারসামগ্রী ক্রয় করেনি। যার ফলে বিক্রি স্বাভাবিকের চেয়ে কম রয়েছে।

ব্যবসায়ীদের ঋণ বাড়ছে

করোনায় ঋণের বোঝা বেড়েই চলেছে বলে জানান রাজধানীর ঢাকা ট্রেড সেন্টারের পোশাকের পাইকারি প্রতিষ্ঠান কমফোর্ট জোনের ব্যবসায়ী মো. দুলাল। গতবারের তুলনায় এবার ঈদে একটু আগে দোকান খুলতে পারায় ভেবেছিলেন কিছুটা হলেও গত বছরের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবেন। কিন্তু হতাশ হতে হয়েছে তাকে। দুলাল বলেন, এবারও এক কথায় ব্যবসা হয়নি। পুঁজির সংকটে রয়েছি। পাইকারি মার্কেটে রোজার এক মাস আগে ব্যবসা জমে ওঠে। অথচ তখন মার্কেট বন্ধ ছিল। ১৮ রমজান দোকান-পাট খুলতে পেরেছি। কোনো টার্গেট ছিল না। যা বেচতে পারি- এমন মানসিকতা নিয়ে দোকান খুলি। কিন্তু লকডাউনের কারণে ঢাকার বাইরে থেকে ক্রেতাই আসেনি। শেষমেশ পাইকারির বদলে খুচরা পণ্য বিক্রি করেছি।

গুলিস্তানের মহানগর কমপ্লেক্সের পাঞ্জাবির ব্যবসায়ী মো. আশরাফুল হোসেন বলেন, স্বাভাবিক সময়ে ঈদের আগে যে পরিমাণ পাঞ্জাবি বিক্রি করি, তার অর্ধেকও বিক্রি হয়নি। তবে গতবারের চেয়ে অবশ্যই বেশি। যতটুকু ব্যবসা হয়েছে তা দিয়ে পরিবার নিয়ে ঈদটা অন্তত করতে পেরেছি। তবে রাতে মার্কেট খোলা রাখার সময় বাড়ানো হলে বিক্রি বাড়ত।

Link copied!