প্রথম বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিদেশে শিপিং ও লজিস্টিকস খাতে ব্যবসা শুরু করতে যাচ্ছে সাইফ পাওয়ারটেক লিমিটেড। সংযুক্ত আরব আমিরাতের সাফিন ফিডার কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে প্রতিষ্ঠানটি। যার ফলে আপাতত আটটি জাহাজ পরিচালনা করবে সাইফ পাওয়ারটেক ।
১৫ বছরের চুক্তি সম্পন্ন
চুক্তির শর্তাবলির আওতায় সাফিন ফিডারস ও সাইফ পাওয়ারটেক ১৫ বছরের মেয়াদে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে বাংলাদেশে কার্গো সেবা দিতে একসঙ্গে কাজ করবে। কোম্পানিটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) ফুজাইরা বন্দর থেকে চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও ভারতীয় উপমহাদেশের অন্যান্য বন্দরে আমদানি পণ্য পরিবহনের জন্য আটটি জাহাজ পরিচালনা করবে।
কোম্পানি কর্তৃপক্ষ বলছে, এই ব্যবস্থায় সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে আরও সহজে এবং কম খরচে পণ্য আমদানি করা যাবে।
সাইফ পাওয়ারটেক ডিএসইকে আরও জানিয়েছে যে, পণ্য পরিবহনের জন্য তারা সাফিন ফিডার থেকে আটটি সমুদ্রগামী জাহাজ ভাড়া করবে। জাহাজগুলো পরিচালনা করবে সাইফ ইউনাইটেড শিপিং।
বিনিয়োগের তথ্য জানায়নি সাইফ
ভাড়াকৃত আটটি জাহাজের প্রতিটির ধারণক্ষমতা হবে ৫৫ হাজার ডিডব্লিউটি। তবে এই ব্যবসা পরিচালনায় কত টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে, সে তথ্য প্রকাশ করেনি প্রতিষ্ঠানটি। তবে প্রতিটি জাহাজ থেকে সাইফ পাওয়ারটেকের বছরে ১৫৪ কোটি টাকা আয় এবং ১৫ দশমিক ৪৮ কোটি টাকা মুনাফা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক তরফদার মো. রুহুল আমিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তিনি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এদিকে এডি পোর্টস গ্রুপ তাদের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে যে তারা বাল্ক শিপিং সেবা দেবে। এমইএনএ (মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা) অঞ্চল এবং এশিয়ান উপমহাদেশের মধ্যে সামুদ্রিক বাণিজ্যে সেবা দেবে তারা।
সাইফ পাওয়ারটেকের বিনিয়োগ পরিকল্পনা
সাইফ পাওয়ারটেক সম্প্রতি মোংলা বন্দরে মাল্টিমোডাল কনটেইনার টার্মিনাল, তেল ও গ্যাস অনুসন্ধান এবং মোংলা বন্দরে একটি জেটি নির্মাণে ২ হাজার ৬০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করছে। কোম্পানিটি ৪৭৩ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে উজবেকিস্তানের এরিয়েল সার্ভিস অ্যান্ড সাপোর্টের সঙ্গে গ্যাস ও তেল অনুসন্ধানে যুক্ত হয়েও ব্যবসা সম্প্রসারণ করছে।
এছাড়াও সাইফ পাওয়ারটেক মোংলা বন্দরে একটি বহুমুখী জেটি নির্মাণ করছে। এই জেটি নির্মাণে তারা প্রায় ১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। মোংলা বন্দরের এই জেটিতে কনটেইনার ও কার্গো জাহাজ উভয়ই হ্যান্ডল করা হবে। ২০২৩ সালের মধ্যে এর নির্মাণকাজ শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এছাড়াও কোম্পানিটি তথ্য প্রযুক্তি ব্যবসায় ৭৫ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে। সেখান থেকে তারা ১০০ কোটি টাকা আয় করবে বলে আশা করছে।
২০২১-২১ অর্থবছরে বন্দর পরিচালনা, ব্যাটারি ব্যবসা ও সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে সাইফ পাওয়ারটেক ৪৭৯ দশমিক ৫০ কোটি টাকা আয় করেছে, যা আগের অর্থবছরের তুলনায় ২৫ শতাংশ বেশি। একই বছরে কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের ১০ শতাংশ নগদ ও ৬ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ দিয়ে ৬২ দশমিক ৬৩ কোটি টাকা লাভ করেছে।