মার্চ ১৬, ২০২৪, ০৫:৫৪ এএম
বাবার মৃত্যুর এক বছরের মাথায় মেয়েও চলে গেল। অবলম্বন হারানোর আক্ষেপ নিয়ে এমনটাই জানালেন মা তাহমিনা শবনম। বিলাপ করতে করতে মূর্ছা যাচ্ছিলেন তিনি। এ অবস্থায়ই গণমাধ্যমে তিনি বলেন, ‘গত রোজায় সরকারি কলেজের অধ্যাপক স্বামীকে হারালাম। এবার মেয়েকে হারালাম। এক বছরের মধ্যে স্বামী ও মেয়ে আমার কাছ থেকে চলে গেল। মেয়ে আমার বিচারক হতে চেয়েছিল। কিন্তু তারা তাকে বাঁচতে দিলো না। ও সাহসী মেয়ে ছিল। বিচার না পেয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিলো।’
অবন্তিকার মৃত্যুর ঘটনাকে হত্যা দাবি করে অবন্তিকার মা বলেন, ‘আমার মেয়েকে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করা হয়েছে। একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে আম্মান, রাফি, মাহিয়ান, লাকি, রিমি, আঁখি, বন্যা ও দ্বীন ইসলাম আমার মেয়ের জীবনটাকে বিষিয়ে তুলেছিল। তারা বিভিন্নভাবে আমার মেয়েকে হয়রানি করে আজকের অবস্থার সৃষ্টি করেছে।’
অবন্তিকার আত্মহত্যার চেষ্টার আগমুহূর্তের কথা বর্ণনা করে তাহমিনা শবনম বলেন, ‘মৃত্যুর কয়েক মিনিট আগে রাত সাড়ে নয়টার দিকে আমাকে পানি দিয়ে গেল এক গ্লাস। এর কিছুক্ষণ পর ওর রুমে ফ্যানের শব্দ না পেয়ে ডাকাডাকি করি। কোনো সাড়া মেলেনি। পরে ছেলেকে নিচে পাঠাই। ও দারোয়ানকে নিয়ে মই দিয়ে পূর্ব পাশের জানালা খুলে দেখতে পায়, ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আছে ও। এরপর পাশের ফ্ল্যাটের বাসিন্দা পুলিশের একজন সদস্যসহ আমরা ওকে নামাই। এরপর কুমিল্লা সদর হাসপাতালে নিই। সেখান থেকে মেয়েকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ (কুমেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়। হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।’
প্রসঙ্গত, ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার (২৪) বাবা মো. জামাল উদ্দিন মৃত্যুর কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন। এছাড়া কুমিল্লা সরকারি মহিলা কলেজ ও কুমিল্লা সরকারি কলেজে দীর্ঘদিন অধ্যাপনাও করেছেন তিনি। ২০২৩ সালের ১২ এপ্রিল রোজার মাসে মৃত্যু হয়। এর আগে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির জাতীয় নির্বাচনের দিন চট্টগ্রামের সাতকানিয়া সরকারি কলেজ ভোট কেন্দ্রে প্রিসাইডিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালনের সময় জামাল উদ্দিনকে কুপিয়ে জখম করা হয়। তাদের গ্রামের বাড়ি কুমিল্লা শহরতলির শাসনগাছা মহাজন বাড়ি এলাকায়। অবন্তিকার মা তাহমিনা শবনম এক সময় কুমিল্লা পুলিশ লাইনস উচ্চবিদ্যালয়ের খণ্ডকালীন শিক্ষক ছিলেন। অন্যদিকে অবন্তিকার ছোট ভাই এসএসসি পরীক্ষার্থী।