জুলাই ১০, ২০২৫, ১১:৪৯ এএম
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আরও সাতটি দেশের পণ্যের ওপর নতুন করে পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছেন। বুধবার ফিলিপাইন, ব্রুনেই, মলডোভা, আলজেরিয়া, ইরাক, লিবিয়া ও শ্রীলঙ্কার উদ্দেশে আনুষ্ঠানিকভাবে শুল্ক সংক্রান্ত চিঠি পাঠানো হয়।
এর আগে সোমবার তিনি ১৪টি দেশের জন্য একই ধরনের চিঠি পাঠিয়েছিলেন। অর্থাৎ, এক সপ্তাহের মধ্যেই মোট ২১টি দেশের জন্য নতুন শুল্ক হার নির্ধারণ করলেন ট্রাম্প।
বুধবার ট্রাম্প তার মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম `ট্রুথ সোশ্যালে` এই ঘোষণা দেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দেওয়া এক পোস্টে তিনি জানান, পরদিন সকালে অন্তত সাতটি দেশের তালিকা প্রকাশ করা হবে এবং বিকেলের দিকে আরও কয়েকটি দেশের নাম জানানো হতে পারে। তবে শেষ পর্যন্ত ওই তালিকাটি সাত দেশের মধ্যেই সীমিত থাকে।
নতুন শুল্ক হার অনুযায়ী, ফিলিপাইনের পণ্যে ২০ শতাংশ (পূর্বে ১৭ শতাংশ), ব্রুনেইয়ের পণ্যে ২৫ শতাংশ (পূর্বে ২৪ শতাংশ), মলডোভার পণ্যে ২৫ শতাংশ (পূর্বে ৩১ শতাংশ), আলজেরিয়ার পণ্যে ৩০ শতাংশ (অপরিবর্তিত), ইরাকের পণ্যে ৩০ শতাংশ (পূর্বে ৩৯ শতাংশ), লিবিয়ার পণ্যে ৩০ শতাংশ (পূর্বে ৩১ শতাংশ) এবং শ্রীলঙ্কার পণ্যে ৩০ শতাংশ (পূর্বে ৪৪ শতাংশ) শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।
এখন পর্যন্ত যেসব ২১টি দেশকে চিঠি পাঠানো হয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে শুল্ক হার ২০ থেকে ৪০ শতাংশের মধ্যে নির্ধারণ করা হয়েছে।
চিঠিগুলোতে উল্লেখ রয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র “সম্ভবত” এই নতুন শুল্ক হার ভবিষ্যতে পর্যালোচনা করতে পারে, যা নির্ভর করবে সংশ্লিষ্ট দেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের ওপর।
সব চিঠিতেই বলা হয়েছে, এই শুল্ক হার প্রয়োজনের তুলনায় কম। অর্থাৎ, সংশ্লিষ্ট দেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যঘাটতি দূর করতে যে পরিমাণ শুল্ক প্রয়োজন, তা এখনো পূর্ণ মাত্রায় আরোপ করা হয়নি।
ট্রাম্প বারবার দাবি করে আসছেন যে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যঘাটতি থাকা মানেই প্রতারণা, যদিও অনেক অর্থনৈতিক বিশ্লেষক তার এই ব্যাখার সঙ্গে একমত নন।
ট্রাম্প যেসব দেশের পণ্যে শুল্ক আরোপ করেছেন, তাদের বেশিরভাগই তুলনামূলক ছোট অর্থনীতি। অনেক দেশের সঙ্গেই যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ খুবই সামান্য।
যেমন, মার্কিন সরকারি তথ্যমতে, ২০২৪ সালে মলডোভার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি ছিল মাত্র ৮ কোটি ৫০ লাখ ডলার।
নতুন শুল্ক হারগুলোর বেশিরভাগই ট্রাম্পের ২ এপ্রিল ঘোষিত ‘স্বাধীনতা দিবস শুল্ক’-এর কাছাকাছি। তবে এবার অনেক ক্ষেত্রেই শুল্ক হার কমানো হয়েছে। ওই ঘোষণার পর বিশ্ববাজারে অস্থিরতা দেখা দিলে ট্রাম্প সেই শুল্ক ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করেন।
এই অবকাশকাল শেষ হওয়ার কথা ছিল বুধবার। কিন্তু সোমবার তিনি নির্বাহী আদেশে শুল্ক কার্যকর করার সময়সীমা বাড়িয়ে ১ আগস্ট নির্ধারণ করেন।
মঙ্গলবার আরেকটি পোস্টে ট্রাম্প বলেন, “১ আগস্টের সময়সীমা বদলাবে না।” তিনি স্পষ্ট করে বলেন, “আর কোনো সময় দেওয়া হবে না।”
সোমবার যে ১৪টি দেশের পণ্যে নতুন শুল্ক আরোপ করা হয়, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে: জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, মালয়েশিয়া, কাজাখস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকা, লাওস, মিয়ানমার, বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা, তিউনিসিয়া, ইন্দোনেশিয়া, বাংলাদেশ, সার্বিয়া, কম্বোডিয়া এবং থাইল্যান্ড।