এবার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়ার পদত্যাগ দাবি, বুধবার পর্যন্ত কারফিউ

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

মে ১০, ২০২২, ১০:৫৯ এএম

এবার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়ার পদত্যাগ দাবি, বুধবার পর্যন্ত কারফিউ

শ্রীলঙ্কায় প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষের পদত্যাগের পর এবার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষের পদত্যাগ দাবিতে জোরালো আন্দোলন শুরু করেছে সরকারবিরোধী শিবির। সোমবার থেকেই বিক্ষোভ আর সংঘর্ষে উত্তাল পুরো দেশ। সহিংস বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে সোমবার দেওয়া কারফিউয়ের সময় বাড়ানো হয়েছে। 

মঙ্গলবার দ্বীপদেশটির সংবাদমাধ্যম ডেইলি মিরর এ তথ্য জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, জননিরাপত্তা অর্ডিন্যান্সের ১৬ ধারা মেনে যে কারফিউ দেওয়া হয়েছে তা মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকাল ৭টায় তুলে নেওয়ার কথা ছিল। পরে তা বাড়িয়ে আগামীকাল বুধবার সকাল ৭টা পর্যন্ত করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, কারফিউ চলাকালে কেউ ঘর থেকে বের হতে পারবেন না। তবে, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে বের হওয়া যাবে।

শ্রীলঙ্কার পর্যটন বিভাগ বলেছে, বেড়াতে আসা বিদেশিদের ট্রাভেল ডকুমেন্টকে তাদের কারফিউ পাস হিসেবে গণ্য করা হবে। এ ছাড়াও, বিদেশিদের তাদের হোটেলের আশে-পাশে থাকার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

এদিকে, কারফিউ থাকলেও তা অমান্য করে রাজধানী কলম্বোসহ বিভিন্ন জায়গায় আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন বিক্ষোভকারীরা। এবার তাদের টার্গেট গোতাবায়া রাজাপক্ষের পদত্যাগ।

দেশটির জনগণ গোতাবায়াকে দুর্নীতিগ্রস্থ রাজনীতিবিদ উল্লেখ করে মিছিল দিচ্ছে। বিক্ষোভকারীদের প্লে কার্ডে লেখা ছিল, ‘রাজাপক্ষের পরিবার থেকে শ্রীলঙ্কাকে বাঁচান’।

প্রথমবারের মতো শ্রীলংকার কোনো আন্দোলনে সব ধরণের রাজনৈতিক ও সামাজিক ব্যাক্তিরা একত্রে অংশ নিয়েছে। সবার দাবি এখন একটাই, রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ এবং এই আর্থ-সামাজিক সংকট থেকে উদ্ধার করতে সক্ষম ব্যাক্তিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর।

বিক্ষোভকারীরা বলছে, রাজাপাকসে পরিবার সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে অযোগ্য এবং অক্ষম এটাই প্রমাণিত হয়েছে। গোতাবায়া একটা দেশ চালাতে পারে না। এই ধরণের সঙ্কট মোকাবেলা করার মতো বুদ্ধি তার নেই।

গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষের পদত্যাগের পর দেশটিতে সহিংস আন্দোলন শুরু হয়। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সরকার সমর্থকদের দফায় দফায় সংঘর্ষ চলে। এ ঘটনায় সবশেষ খবর অনুযায়ি পাঁচজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত দুই শতাধিক।  

টাইমস অফ ইন্ডিয়া, হিন্দুস্তান টাইমসসহ বেশ কয়েকটি ভারতীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, গতকাল  সোমবার মাহিন্দা রাজাপাকসেসহ দেশটির মন্ত্রী, এমপি, সাবেক মন্ত্রী ও স্থানীয় নেতাদের বাসভবনে আগুন দিয়ে দেওয়া হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে ক্ষমতাসীন এক এমপি ও এক বিক্ষোভকারীও রয়েছেন। এছাড়া আহতদের দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। কলম্বো ন্যাশনাল হাসপাতালের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, কলম্বোর সংঘর্ষের ঘটনায় আহত অন্তত ১৩৮ জনকে হাসপাতালটিতে ভর্তি করা হয়েছে।

শ্রীলংকার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষের কুরুনেগালাস্থ বাসভবনসহ রাজাপক্ষের পরিবারের ঘনিষ্ঠ বেশ কয়েকজন মন্ত্রী, এমপি, সাবেক মন্ত্রী ও স্থানীয় নেতাদের বাসভবনে অগ্নিসংযোগ করেছেন সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীরা। 

করোনা মহামারি, উচ্চাভিলাষী ও অলাভজনক বিভিন্ন প্রকল্পে সরকারের বিনিয়োগ, ত্রুটিপূর্ণ করনীতি ও সরকারি অব্যবস্থাপনার কারণে শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংকে বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ ব্যাপকভাবে কমে যায়। এর ফলে অনেকদিন ধরে জ্বালানি তেল, খাদ্য, ওষুধসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য আমদানি করতে পারছে না দেশটি।

Link copied!