কোনো স্টেডিয়াম পুকুর, কোনোটা কাশফুল বাগান!

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২১, ০৩:৪৫ এএম

কোনো স্টেডিয়াম পুকুর, কোনোটা কাশফুল বাগান!

অযত্ন আর অবহেলার কারণে দেশের বেশিরভাগ জেলা স্টেডিয়ামগুলোর এখন বেহাল অবস্থা। স্টেডিয়ামে বসে খেলা দেখা বা উপভোগ করার কোনো পরিবেশ নেই। করোনাকালীন সময়ে নিয়মিত খেলাধুলা না হওয়ায় পরিচর্যা করার ক্ষেত্রেও যথেষ্ট গাফিলতি ছিল বলে জানা গেছে। যার কারণে পুরোপুরি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়েছে পড়েছে স্টেডিয়ামগুলো।

২০০৬ সালের নভেম্বরে কেনিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে আন্তর্জাতিক ভেন্যু হিসেবে আত্মপ্রকাশ করা খুলনা শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামের বর্তমান অবস্থা। ছবি: সংগৃহীত

অধিকাংশ স্টেডিয়ামগুলোর মাঠ,গ্যালারি ও ‍সুইমিংপুলগুলো এরই মধ্যে নষ্ট হয়ে গেছে বা ব্যবহারের অনুপযুক্ত হয়ে পড়েছে। এরই প্রেক্ষিতে চলতি মাসের মধ্যেই সব জেলা স্টেডিয়ামগুলোর সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে প্রতিবেদন তৈরির নির্দেশনা দিয়েছে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়।

দেখে মনে হয়না স্টেডিয়াম

করোনা পরবর্তী সময়ে অযত্ন ও পরিচর্যার কারনে জেলা স্টেডিয়ামগুলো চেনার উপায় নেই। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের প্রাথমিক তদন্তে দেখা যায়, রাজশাহী মহিলা স্টেডিয়াম কমপ্লেক্সের সুইমিংপুলের সকল সরঞ্জাম উঠে এসেছে।সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দিনের পর দিন পানিহীন থাকায় রোদের কারনে এমন অবস্থা হয়েছে সুইমিংপুলগুলোতে। আন্তর্জাতিক ভেন্যু খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামের গ্যালারির চেয়ারগুলোর ভঙ্গুর দশা।

যশোরের শামসুল হুদা স্টেডিয়ামে বুক সমান ঘাস। নেই খেলাধুলার ন্যূন্যতম পরিবেশ। তেমনি রাজশাহীতে উন্নত ক্রীড়া কাঠামো থাকলেও নেই কোনো রক্ষণাবেক্ষণ। রংপুরের স্টেডিয়াম এখন কাশফুলে ছেয়ে গেছে।

চলতি মাসেই শেষ হবে স্টেডিয়াম পরিদর্শন

ক্রীড়াঙ্গণের উন্নতিতে সারাদেশের ক্রীড়া কাঠামোগুলোর সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণ দ্রুত সম্পন্ন করার নির্দেশ দিয়েছেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল। এরই প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার (৯ সেপ্টেম্বর) দেশের সব জেলা স্টেডিয়ামগুলোর সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে দ্রুত প্রতিবেদন চূড়ান্ত করতে বলা হয়েছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদকে। ইতোমধ্যে নড়াইল জেলা স্টেডিয়ামের সার্বিক পরিস্থিতি যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের কাছে পাঠানো হয়েছে।

যে মাঠে একসময় খেলোয়াড়দের পদচারণায় মুখরিত ছিলো, কক্সবাজারের সেই স্টেডিয়াম মাঠে এখন ঘাস আর ঘাস। মাঠের বেশির ভাগ অংশ ঘাসে ভরে গেছে।ছবি: সংগৃহীত

এছাড়া ঢাকা ও আশেপাশের জেলা স্টেডিয়ামগুলোকে প্রাধান্য দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের পরিচালক (পরিকল্পনা) সারওয়ার জাহান। তিনি দ্য রিপোর্ট ডট লাইভকে বলেন, চলতি সপ্তাহ থেকেই কয়েকটি জেলা স্টেডিয়ামগুলো পরিদর্শনে যাওয়া হবে। আশা করছি আগামী মাসের মধ্যেই জেলা স্টেডিয়ামগুলোর সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়কে দেয়া হবে। তখন সে অনুসারে ব্যবস্থা নেয়া যাবে।

এদিকে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাটের জেলা স্টেডিয়ামগুলো পরিদর্শন করা হয়েছে। আগামী সপ্তাহে মানিকগঞ্জ, ফরিদুপর,নরসিংদী ও নারায়নগঞ্জ জেলা স্টেডিয়ামগুলো পরিদর্শনের জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এরপরপরই বরগুনা ও পিরোপুরের স্টেডিয়াম ও দিনাজপুরের জেলা স্টেডিয়াম পরিদর্দশন করা হবে।

৫ বছর ধরে অচল ফতুল্লা স্টেডিয়াম

একসময় আন্তর্জাতিক ম্যাচ নিয়ে ব্যস্ততা থাকলেও প্রায় পাঁচ বছর ধরে সব বন্ধ। ফতুল্লায় সর্বশেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয় ২০১৬ সালে। দুটি টেস্ট, ১০টি ওয়ানডে ও চারটি টি-২০ ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে এখানে। এদিকে, মূল স্টেডিয়াম লাগোয়া আউটার স্টেডিয়াম যেখানে খেলোয়াড়রা সাধারণ অনুশীলন করেন, সেটাও জলমগ্ন অবস্থায় রয়েছে; দেখলে মনে হবে একটি বড় পুকুর।

fatulla

ফতুল্লায় ‘ডুবন্ত’ স্টেডিয়ামের উন্নয়নের জন্য বুয়েটের শরণাপন্ন হয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। ছবি: সংগৃহীত

নারায়নগঞ্জের ফতুল্লায় খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামের সার্বিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়কে (বুয়েট) পরিকল্পনা দেয়া হয়েছে। যেটি মূলত ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও সার্বিক নকশার উন্নয়নের জন্য করার কথা। তবে গত মাসেই বুয়েট সেটি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) কাছে জমা দেয়। পরে সেখান থেকে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদকে দেয়া হয়। এখন সব কিছু বিশ্লেষণ করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ বৈঠক আয়োজন করবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

Link copied!