চট্টগ্রাম মহানগরীর বহদ্দারহাট এম এ মান্নান ফ্লাইওভারের র্যাম্পের পিলারে ‘ফাটল নেই’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (সিসিসি) গঠিত ‘নিরপেক্ষ’ তদন্ত কমিটির দুই সদস্য বৃহস্পতিবার (০৪ নভেম্বর) রাতে ওই প্রতিবেদন জমা দেন। উক্ত প্রতিবেদনে তিনটি সুপরিশ করা হয়েছে।
তদন্তে কী পাওয়া গেছে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক এবং ইন্সটিটিউট অব আর্থকোয়েক ইঞ্জিনিয়ারিং রিসার্চের পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবদুর রহমান ভুঁইয়া বলেন, ‘ওখানে যা দেখা যাচ্ছে তা, কনস্ট্রাকশন জয়েন্ট। ভয়ের কোনো কারণ নেই। ফ্লাইওভারের ওই র্যাম্পটি তৈরি করা হয়েছিল হালকা যানবাহনের জন্য। তা নিশ্চিত করার সুপারিশ করেছি’।
র্যাম্পটি যেন কার্যকর রাখতে এবং বেশি দিন যেন ব্যবহার করার লক্ষ্যে নজরদারিও করতে সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি।
তদন্ত প্রতিবেদনে ফাঁটল ধরা স্থানে কোনো ক্র্যাক বা স্ট্রাকচারাল প্রবলেম নেই উল্লেখ করে ফাঁকা অংশটি হাই স্ট্রেংথ থিন কনক্রিট দিয়ে সিল করে দিতে বলা হয়েছে।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাক্সকে উক্ত স্থান দ্রুত রিপেয়ার করতে বলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিক।
তিনি বলেন, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে ফ্লাইওভারের মূল অংশের সাথে র্যাম্পের পিলারের জোড়া দেওয়া অংশের ‘ফোম’ সরিয়ে যথাযথভাবে পরিষ্কার করে সে অংশটুকু ‘হাই স্ট্রেংথ থিন কংক্রিট’ দিয়ে ‘সিল’ করে দিতে বলা হয়েছে।
রফিকুল ইসলাম মানিক বলেন, “র্যাম্পের নিচে এবং সংযোগ অংশে মোট তিনটি হাইট ব্যারিয়ার ইতোমধ্যে স্থাপন করা হয়েছে যাতে ভারী যানবাহন উঠতে না পারে। মেরামত কাজ শেষ হলে র্যাম্পটি খুলে দেওয়া হবে। তদন্ত কমিটি মাঝেমাঝে ফ্লাইওভারের গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলো পর্যবেক্ষণে রাখতে বলেছে।”
গত ২৫ অক্টোবর রাতে নগরীর বহদ্দারহাট মোড়ে এম এ মান্নান ফ্লাইওভারের র্যাম্পের পিলারে ফাটল দেখা দেয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ে। রাতেই ওই র্যাম্পে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।
এম এ মান্নান ফ্লাইওভারটি চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) নির্মাণ করে। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে হস্তান্তরের পর থেকে এর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের।
১০৬ কোটি টাকা ব্যয়ে বন্দরনগরীর চান্দগাঁও থানা এলাকা থেকে বহদ্দারহাট মোড় পর্যন্ত ১ দশমিক ৩৩ কিলোমিটার এ ফ্লাইওভারটি ২০১৩ সালের অক্টোবরে উদ্বোধন করা হয়।
প্রায় চার বছর পর স্থানীয়দের দাবির মুখে বাড়তি ওই র্যাম্প যোগ করা হয় ফ্লাইওভারে, তা চালু হয় ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে।