বাংলাদেশ ‍‍`প্রকৃত গণতন্ত্র‍‍` থেকে দূরে সরে গেছে

আফছার মুন্না

সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২১, ১২:১১ এএম

বাংলাদেশ ‍‍`প্রকৃত গণতন্ত্র‍‍` থেকে দূরে সরে গেছে

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ২০০৭ সালের ১৫ সেপ্টেম্বরকে আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস হিসেবে ঘোষণা করেছিল। যার লক্ষ্য ছিল বিশ্বের বিভিন্ন দেশের গণতন্ত্র চর্চাকে শক্তিশালী করতে উৎসাহিত করা।

জাতিসংঘের সার্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণাপত্রের অনুচ্ছেদ ২১ (৩) অনুযায়ী গণতন্ত্র এবং মানবাধিকারের মধ্যে সম্পর্ক হলো: ‘জনগণের মতামত অনুযায়ী সরকার পরিচালিত হবে।’

অনুচ্ছেদ অনুযায়ী এই ‍‍`মতামত‍‍` নির্দিষ্ট সময় অন্তর ও জনগণের মধ্যে হওয়া নির্বাচনের মাধ্যমে প্রকাশ করা হবে ... এবং গোপন ভোটের মাধ্যমে বা অবাধ নির্বাচনের মাধ্যমে প্রকাশিত হবে।

ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (ইআইইউ) গণতন্ত্র সূচক ২০২০ -এ বাংলাদেশের স্থান ৭৬ তম, যা ২০১৯ সালের সূচকের চেয়ে চার ধাপ এগিয়ে।

কিন্তু প্রতিবেদনে বাংলাদেশকে ‍‍`হাইব্রিড শাসন‍‍` শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে ‍‍`যথেষ্ট অনিয়ম‍‍` প্রায়ই  এখানকার অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে বাধা হয়ে দাঁড়ায় দেয়।

এছাড়া, ২০২০ সালে যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক নিরপেক্ষ নির্বাচন পর্যবেক্ষক ‘ফ্রিডম হাউস’ তার সর্বশেষ তালিকায় বাংলাদেশে চর্চাকৃত গণতন্ত্রকে ১০০ -এর মধ্যে ৩৯ নম্বর দিয়ে ‘আংশিক মুক্ত’ দেশ হিসাবে মূল্যায়ন করেছে।

একাধিক তথ্যের উপর ভিত্তি করে প্রতিবেদনটি লিবারেল ডেমোক্রেসি ইনডেক্স (এলডিআই) এবং ইলেক্টোরাল ডেমোক্রেসি ইনডেক্স (ইডিআই) -এ উল্লেখযোগ্যহারে নিম্নগামী প্রবণতা দেখায়, যখন লিবারেল কম্পোনেন্ট ইনডেক্স (এলসিআই), ইগ্যালিটারিয়ান কম্পোনেন্ট ইনডেক্স (ইসিআই), অংশগ্রহণমূলক উপাদান সূচক (পিসিআই) এবং ইচ্ছাকৃত উপাদান গত ১০ বছরে সূচক (ডিসিআই) প্রায় একই ছিল।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. শান্তনু মজুমদার বলেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্রকে বিশ্লেষণ করতে গিয়েমনে রাখতে হবে, বাংলাদেশ একটি উত্তর-ঔপনিবেশিক এবং মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দক্ষিণ এশিয়ার দেশ।

অধ্যাপক মজুমদার বলেন, বাংলাদেশের গণতন্ত্রের অবস্থা এই শ্রেণীর দেশগুলোর অভিজ্ঞতা থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন হতে পারে না। আমাদের এটাও মনে রাখতে হবে যে গত ১৫ বছর ধরে সারা বিশ্বের কোনও দেশেই নিরঙ্কুশ গণতন্ত্র  নেই।

তিনি আরও বলেন, গণতন্ত্রের প্রথম শর্ত নিয়মিত বিরতিতে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন । তবে একই সাথে আমাদের মনে রাখা উচিত যে শুধুমাত্র একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনই উদার গণতন্ত্রের গ্যারান্টি দিতে পারে না। জাতিগত, ধর্মীয় সংখ্যালঘু, বুদ্ধিবৃত্তিক সংখ্যালঘু ও বহুত্ববাদ এবং বৈচিত্র্য রক্ষার দিকে বিশেষ নজর দেওয়া প্রয়োজন।

Link copied!