চুক্তি অনুযায়ী ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের তৈরি করোনা টিকা বাংলাদেশে কবে নাগাদ আসতে পারে তার কোনো নির্দিষ্ট তারিখ বলতে পারছেন না বলে স্পষ্ট করে জানিয়ে দিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম দোরাই স্বামী।
শুক্রবার (২৩ জুলাই) সকালে পাঁচদিনের ভারত সফর শেষে আখাউড়া-আগরতলা স্থলবন্দর ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট সীমান্তপথে ঢাকায় ফেরার পথে নোম্যান্সল্যান্ডে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
হাইকমিশনার দোরাইস্বামীর এই কথার ফলে ভারতের সেরামের তৈরি করোনার টিকা আসার দ্রুত সম্ভাবনা ফিকে হয়ে গেল। অথচ পাঁচদিন আগেও ভারতে যাওয়ার পথে একই চেকপোস্টে তিনি খুব দ্রুত সেরামের টিকা বাংলাদেশকে পাঠানোর কথা জানিয়েছিলেন। পাঁচদিনের ব্যবধানেই বাংলাদেশকে টিকা দেওয়া নিয়ে সুর পাল্টে নতুন কথা বললেন দোরাইস্বামী।
শুক্রবার (২৩ জুলাই) দোরাইস্বামী গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ভারতে টিকা উৎপাদনের বিষয়ে জানার জন্য আমি দেশে গিয়েছিলাম। উৎপাদন দ্রুত বাড়ছে। আশা করছি, উৎপাদন বাড়লে বাংলাদেশকে টিকা দিতে পারব। তবে আমি এ ব্যাপারে নির্দিষ্ট কোনো দিন তারিখ বলতে পারছি না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের মতো গুরত্বপূর্ণ বন্ধু দেশকে টিকা সরবরাহ নিশ্চিত করতে কাজ করছি। উৎপাদন বাড়ছে, এটা ইতিবাচক দিক।’
বাংলাদেশ ভারতের ঘনিষ্ঠ বন্ধু উল্লেখ করে ভারতীয় হাইকমিশনার আরও বলেন, ‘বাংলাদেশও কভিডের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। এ ব্যাপারে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করতে পারলে আমরা খুশি হব।’ করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় বাংলাদেশ কঠোর পরিশ্রম করছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
১৮ জুলাই দোরাইস্বামী যা বলেছিলেন
গত ১৮ জুলাই সকালে আখাউড়া স্থলবন্দর ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট সীমান্তে ভারতীয় হাইকমিশনার বলেন, চুক্তি অনুযায়ি ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের তৈরি করোনা টিকা দ্রুত সময়ের মধ্যে বাংলাদেশে সরবরাহ করা হবে।
এ সময় তিনি বলেন, বাংলাদেশের সাথে চুক্তি অনুযায়ী ভারতে উৎপাদিত বাকি টিকা খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে কিভাবে সরবরাহ করা যায় সেই চেষ্টাই চলছে।’খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে চুক্তি অনুযায়ী ভারতে উৎপাদিত টিকা বাংলাদেশকে সরবরাহ করা হবে। এ বিষয়ে আলোচনা করতেই দেশে যাচ্ছি।’
বাংলাদেশের কেনা টিকার পরবর্তী চালান আসার বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বিক্রম দোরাইস্বামী বলেন, টিকা সরবরাহের অবস্থা কী, সেটি জানার জন্যই ভারতে যাচ্ছি। চেষ্টা থাকবে দ্রুত বাংলাদেশকে টিকা দেওয়ার।’
প্রসঙ্গত, সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে বাংলাদেশ বেক্সিমকোর মাধ্যমে তিন কোটি ডোজ অক্সফোর্ডের টিকা কেনার চুক্তি করে৷ চুক্তি অনুাযায়ী গত জানুয়ারি মাসে প্রথম চালানের ৫০ লাখ টিকা আসে দেশে। ফেব্রুয়ারি মাসে আসে ২০ লাখ৷ এরপর সেরাম আর কোনো টিকা পাঠায়নি৷ কথা ছিল প্রতি মাসে ৫০ লাখ ডোজ টিকা পাঠাবে তারা৷
এই চুক্তির বাইরে ভারত সরকারের কাছ থেকে শুরুতেই ২০ লাখ ডোজ টিকা উপহার হিসেবে পায় বাংলাদেশ৷ এছাড়া নরেন্দ্র মোদীর ঢাকা সফরের সময় উপহার হিসেবে আসে আরো ১২ লাখ ৷ ভারতের সেনা প্রধান বাংলাদেশের সেনা প্রধানকে উপহার দিয়েছেন এক লাখ ডোজ টিকা ৷
বাংলাদেশে ব্যাপকভাবে প্রথম ডোজ টিকা দেওয়া শুরু হয় গত ৭ ফেব্রুয়ারি৷ এরপর দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া শুরু হয় ৮ এপ্রিল থেকে৷