মস্কোয় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকে তলবের কারণ জানালো পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

কূটনৈতিক প্রতিবেদক

ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২৩, ০৫:৫৪ এএম

মস্কোয় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকে তলবের কারণ জানালো পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞায় থাকা রাশিয়ার ৬৯ জাহাজকে বাংলাদেশে ভিড়তে না দেওয়ার সিদ্ধান্তের পর মস্কোতে রাষ্ট্রদূত তলবের ঘটনাকে ‘বিচ্ছিন্ন’ বিষয় হিসেবে দেখছে বাংলাদেশ।এ ঘটনায় ঢাকা-মস্কোর দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত হবে না বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়।

বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আয়োজিত সাপ্তাহিক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে মন্ত্রণালয়ের পাবলিক ডিপ্লোম্যাসি অনুবিভাগের মহাপরিচালক ও মুখপাত্র সেহেলী সাবরীন এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, “ আমরা মনে করি না শুধু একটি জাহাজের জন্য বা সুনির্দিষ্ট কোনো একটি কারণে রাশিয়ার সঙ্গে আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে কোন প্রভাব পড়বে। রাশিয়া বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত কামরুল আহসানকে ডেকেছিলেন এবং সেখানে নানান বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এটাকে তলব বলা ঠিক হবে না, কারণ রাশিয়ার জাহাজ ভিড়তে না দেওয়ায় ঘটনাটি ৬ সপ্তাহ আগের।”

মস্কোয় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত কামরুল আহসানকে রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ডেকে পাঠানোর বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আরও বলেন, “আমাদের রাষ্ট্রদূতকে আলোচনার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে, আমরা রিপোর্টটি পেয়েছি। ওখানে রাশিয়ার পক্ষ থেকে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। তবে নির্দিষ্ট করে কোনো জাহাজের কথা বলা হয়নি। নিষেধাজ্ঞাভুক্ত ৬৯টি জাহাজকে কেন বন্দরে ভিড়তে দেওয়া হবে না সে সম্পর্কে তারা তাদের উদ্বেগ জানিয়েছে।”

তিনি বলেন,  “আমাদের রাষ্ট্রদূতের রাশিয়ার উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশের বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ও রাশিয়ার ঐতিহাসিক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কথা বিবেচনায় রাখার অনুরোধ জানান। তিনি এ ঘটনায় রাশিয়ার উদ্বেগের বিষয়টি বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট পৌঁছে দিতে রাষ্ট্রদূতকে অনুরোধ করেন।”

বাংলাদেশি দূতকে ডেকে দেওয়া মস্কোর বার্তাটি বিশ্লেষণ করা হচ্ছে উল্লেখ করে সেহেলি সাবরীন বলেন, “বার্তার বিষয়ে পরবর্তীতে ঢাকার পক্ষ থেকে কী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে তা পরে গণমাধ্যমকে জানানো হবে। সেখানে কোন নির্দিষ্ট জাহাজ বা সংখ্যা নিয়ে আলোচনা হয়নি।” প্রাপ্ত তথ্য মতে, নিষেধাজ্ঞার বাইরেও রাশিয়ার ১১০০ জাহাজ আছে বলে তিনি জানান।

প্রসঙ্গত, গত জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মালামাল নিয়ে আসা রুশ জাহাজ ‘উরসা মেজর’ অনুমতি না পাওয়ায় পণ্য খালাসের জন্য বাংলাদেশের বন্দরে ভিড়তে পারেনি। পরে মালামাল নিয়েই রাশিয়ায় ফিরে যায় জাহাজটি।  বিষয়টি নিয়ে আলোচনার মধ্যেই রাশিয়ার যেসব জাহাজ মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় রয়েছে, সেসব নৌযানের বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় প্রবেশে গত ১৬ জানুয়ারি নিষেধাজ্ঞা দেয় বর্তমান সরকার।

ওই সিদ্ধান্তের প্রেক্ষাপটে গত মঙ্গলবার মস্কোতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত কামরুল আহসানকে তলব করা হয়।  এর দু’দিন পর বৃহস্পতিবারই সাপ্তাহিক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে বিন্তারিত তুলে ধরলো পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। 

Link copied!