যেভাবে ফাঁস হয় ব্যাংক পরীক্ষার উত্তরপত্র

নিজস্ব প্রতিবেদক

নভেম্বর ১১, ২০২১, ০১:১৮ এএম

যেভাবে ফাঁস হয় ব্যাংক পরীক্ষার উত্তরপত্র

রাষ্ট্রায়াত্ত্ব ৫টি ব্যাংকের 'অফিসার ক্যাশ' পদে নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস হতে পারে, এমন তথ্য পেয়ে পুলিশ পরীক্ষার দিন ৬ নভেম্বর সকাল ৭টার দিকে প্রশ্ন ও উত্তর পেতে চক্রের সঙ্গে যোগাযোগ করে। ওই চক্রের মূল হোতা রাইসুল ইসলাম স্বপনকে অগ্রিম টাকা দেওয়া হলে, তিনি পরীক্ষার্থীকে একটি বুথে নিয়ে যান। পরে ওই পরীক্ষার উত্তরপত্রসহ তাকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করা হয়। 

জালিয়াতি চক্র সম্পর্কে ডিবির বক্তব্য দেখুন।

তিনদিন আগেই প্রশ্ন ফাঁসের প্রক্রিয়া চলছিল

অফিসার ক্যাশ পদে পরীক্ষা বিকাল ৩ টায় অনুষ্ঠিত হবার কথা থাকলেও প্রশ্নের উত্তরপত্র সকাল ৮ টায় ফাঁস হয়ে যায়। জনতা ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার সামশুল হক শ্যামল তিনদিন আগেই প্রশ্ন ফাঁসের বিষয়টি নিশ্চিত করে। এরই প্রেক্ষিতে কয়েকটি বুথ করার পরিকল্পনা করে রূপালী ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার জানে আলম মিলন। সেই বুথ থেকেই উত্তরপত্র মুখস্থ করানো হয় পরীক্ষার্থীদের।

৫ ঘন্টা আগে মুখস্থ করানো হয় উত্তর

রাজধানীর বাড্ডা, বসুন্ধরা, উত্তরা, মোহাম্মদপুর, কল্যানপর, রূপনগর, মিরপুর, মাতুয়াইল, শেওড়াপাড়া, শেরেবাংলা নগর, পল্লবী এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয় প্রার্থীদের। সেখানে পরীক্ষার ৫-৬ ঘন্টা আগে তাদের ফাঁস করা প্রশ্ন দিয়ে উত্তরপত্র মুখস্থ করানো হয়। আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রশ্নফাঁস করতে সাহায্য করেন এক টেকনিশিয়ান।

ব্যাংকাররা জড়িত প্রশ্নফাঁসে

বাংলাদেশ ব্যাংক আয়োজিত নিয়োগ পরীক্ষার এই প্রশ্ন জালিয়াতি চক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গত ৬ নভেম্বর থেকে আজ বুধবার পর্যন্ত ডিবি পুলিশের অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবির) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার আজ এক সংবাদ সম্মেলনে এ সব তথ্য জানান।

555

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন-মো. মোক্তারুজ্জামান রয়েল (২৬), মো. শামসুল হক শ্যামল (৩৪), জানে আলম মিলন (৩০), মোস্তাফিজুর রহমান মিলন (৩৮) ও রাইসুল ইসলাম স্বপন (৩৬)।

এর আগেও প্রশ্ন ফাঁস করে

গ্রেপ্তারকৃত মোক্তারুজ্জামান রয়েল আহসানউল্লাহ ইউনির্ভাসিটি অব সাইন্স এন্ড টেকনোলজিতে আইসিটিতে টেকনিশিয়ান হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি ওই পরীক্ষার প্রশ্ন ও উত্তরপত্র সংগ্রহ করেছিলেন বলে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে।

মোক্তারুজ্জামান ও শ্যামল জিজ্ঞাসাবাদে জানান, তারা ৩ বার বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ও উত্তর ফাঁস করেছে। চক্রটি পরীক্ষার ৫-৬ ঘণ্টা আগে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে প্রায় ২ হাজার পরীক্ষার্থীদের প্রশ্ন ও উত্তর সরবরাহ করেছে। প্রত্যেক পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে নিয়োগ পাওয়ার আগ পর্যন্ত বিভিন্ন ধাপে ৫ থেকে ১৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হয় বলে জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে।

Link copied!