হেলিকপ্টার বিধ্বস্তের ঘটনায় ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দোল্লাহিয়ানসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা নিহত হয়েছেন।
রোববার এই খবর দিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা।
এর আগেও বেশ কয়েকজন বিশ্ব নেতা বিমান বা হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন।
বিশ্ব নেতাদের এমন অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুর মধ্য দিয়ে বিভিন্ন দেশে তৈরি হয় রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা। চলুন জেনে আসি হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন যে ১০ বিশ্ব নেতা, তাদের সম্পর্কে-
ইব্রাহিম নাসির: যিনি ছিলেন মালদ্বীপের দ্বিতীয় প্রেসিডেন্ট। ২০০৮ সালে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত হন তিনি।
মালদ্বীপের একটি জনবসতিহীন দ্বীপে ব্যক্তিগত সফরে যাওয়ার সময় এই দুর্ঘটনার শিকার হন।
হাফিজ আল-আসাদ: ২০০০ সালে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট হাফিজ আল-আসাদ দামেস্কের উপকণ্ঠে বিমান দুর্ঘটনায় নিহত হন।
এই দুর্ঘটনার কারণ নিয়েও রয়েছে নানা বিতর্ক। কারণ হিসেবে বলা হয়েছিল আসাদের হার্ট অ্যাটাকের কারণে বিমান জরুরি অবতরণ করাতে চাইলে বিধ্বস্ত হয়। তবে অনেকে দাবি করেন, এটি ‘ষড়যন্ত্র’।
জেনারেল জিয়া-উল-হক: পাকিস্তানের ষষ্ঠ প্রেসিডেন্ট তিনি। ঠিক একইভাবে ১৯৮৮ সালে দেশটির ভাওয়ালপুরের কাছে বিমান দুর্ঘটনায় নিহত হন।
দুর্ঘটনার কারণ নিয়ে রয়েছে নানা বিতর্ক। কেউ বলেন- ‘যান্ত্রিক ত্রুটি’, কেউ- ‘নাশকতা’, কিংবা কেউ দাবি করেন- ‘ষড়যন্ত্র’ করেই দুর্ঘটনা ঘটনানো হয়েছিল।
লেচ কাকজিন্সকি: ২০১০ সালে পোল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট লেচ কাকজিন্সকি হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত হন। এতে প্রেসিডেন্ট ও সঙ্গে থাকা অন্যান্য শীর্ষস্থানীয় পোলিশ কর্মকর্তারা নিহত হন।
র্যামন ম্যাগসেসে: ১৯৫৭ সালে ফিলিপাইনের সপ্তম প্রেসিডেন্ট র্যামন ম্যাগসেসে বিমান দুর্ঘটনায় নিহত হন। দেশটির সেবু শহরের মাউন্ট মানুংগালে পার্বত্য এলাকায় দুর্ঘটনার শিকার হন তিনি। শক্তিশালী কমিউনিস্ট বিরোধী নীতি ও গণতন্ত্রের প্রতি চেতনার জন্য সুপরিচিত ছিলেন ম্যাগসেসে।
জুভেনাল হাব্যারিমানা ও সাইপ্রিয়েন এনটারিয়ামিরা: ১৯৯৪ সালে রুয়ান্ডার প্রেসিডেন্ট ও বুরুন্ডির প্রেসিডেন্ট সাইপ্রিয়েন এনটারিয়ামিরা বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত হন। একে কেন্দ্র করেই রুয়ান্ডা গণহত্যার সূত্রপাত বলে অনেকে মনে করেন।
সামোরা ম্যাচেল: সামোরা ম্যাচেল ছিলেন মোজাম্বিকের প্রথম রাষ্ট্রপতি। ১৯৮৬ সালে মোজাম্বিক-দক্ষিণ আফ্রিকা সীমান্তের উপকণ্ঠে এক বিমান দুর্ঘটনায় নিহত হন তিনি।
এর পেছনে দক্ষিণ আফ্রিকার জড়িত থাকার অভিযোগ করেন অনেকে। মার্কসবাদ-লেনিনবাদের ঐতিহ্যের একজন সমাজতান্ত্রিক আদর্শে অনুপ্রাণিত নেতা ছিলেন তিনি।
ডাগ হ্যামারশল্ড: ১৯৬১ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর এক যাত্রীবাহী বিমান দুর্ঘটনায় নিহত হন জাতিসংঘের তদানীন্তন প্রধান ডাগ হ্যামারশল্ড। এই দুর্ঘটনায় সুপরিচিত এই সুইডিশ কূটনীতিবিদসহ ১৬ জন নিহত হন। কঙ্গোয় যুদ্ধ-সংক্রান্ত আলোচনায় যোগ দিতে আফ্রিকা যান হ্যামারশল্ড। পরবর্তীতে অনুসন্ধানে জানা যায়, খুব কম উচ্চতায় উড্ডয়নের কারণে দুর্ঘটনার শিকার হয় বিমানটি।
সঞ্জয় গান্ধী: ভারতের এককালের প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধীর ছেলে সঞ্জয় গান্ধী নিজেও ছিলেন শক্তিশালী একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব।
১৯৮০ সালের ২৩ জুন দিল্লির সফদরজং এয়ারপোর্ট থেকে উড্ডয়নের কিছু সময় পরই তার বিমান বিধ্বস্ত হয়। এই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান সঞ্জয় গান্ধী।
বিপিন রাওয়াত: ২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর ভারতের সুলুরে একটি মিলিটারি হেলিকপ্টারে ওঠেন তিনি। ওয়েলিংটং টাউনের ডিফেন্স সার্ভিসেজ স্টাফ কলেজের দিকে যাওয়ার পথে তামিল নাড়ুর একটি পাহাড়ি এলাকায় তার হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়।