সংস্কার ছাড়া নির্বাচন বিতর্কিত হতে পারে: বদিউল আলম মজুমদার

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

আগস্ট ১৬, ২০২৫, ০৪:৩৪ পিএম

সংস্কার ছাড়া নির্বাচন বিতর্কিত হতে পারে: বদিউল আলম মজুমদার

নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারের বাইরে রেখে নির্বাচিত হলে তা বিতর্কিত হতে পারে।

তিনি এই মন্তব্য করেছেন শনিবার রাজধানীর এফডিসিতে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত “আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু করতে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকাই প্রধান শীর্ষক ছায়া সংসদ সভায়।

ড. মজুমদার বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য সংসদ নির্বাচন সময়মতো আয়োজন জরুরি, যাতে কোনো অনিশ্চয়তা না থাকে। তিনি বলেন, “সরকারের সহযোগিতা ছাড়া নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারবে না। এবার নির্বাচন যথাযথ লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডে অনুষ্ঠিত হবে। সব রাজনৈতিক পক্ষ দায়িত্বশীলভাবে অংশগ্রহণ করলে ভোটাররা স্বাচ্ছন্দ্যে লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দেবেন। তবে যদি রাজনৈতিক দলগুলো টাকার রাজনীতিতে ব্যস্ত থাকে, তাহলে ভালো ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। নির্বাচন কমিশনের কেন্দ্রীয় ভূমিকা থাকা সত্ত্বেও প্রার্থী, ভোটার, নাগরিক সমাজ ও সংবাদমাধ্যমের দায়িত্বশীল অংশগ্রহণ অপরিহার্য।

ছাত্ররাজনীতির প্রসঙ্গে ড. মজুমদার বলেন, ছাত্ররাজনীতির প্রয়োজন আছে, তবে তা কোনো গ্যাং-ভিত্তিক বা দলীয় লাঠিয়াল রাজনীতি হতে পারবে না। তিনি বলেন, “ছাত্ররা অনেক ইতিবাচক কর্মকাণ্ড করে থাকেন, কিন্তু কোনো দলীয় লাঠিয়াল হতে পারেন না। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচনের ফলাফল জাতীয় নির্বাচনের উপর প্রভাব ফেলতে পারে।

নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে তিনি উল্লেখ করেন, প্রতিনিধিত্বমূলক ও আসনভিত্তিক পদ্ধতির উভয় সীমাবদ্ধতা রয়েছে, এবং নিম্নকক্ষ গঠন করতে আসনভিত্তিক নির্বাচন ও উচ্চকক্ষ গঠন করতে প্রোপোরশনাল সিস্টেম নিয়ে আলোচনা অব্যাহত রয়েছে।

ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, “প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো এখনও বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে একমত হয়নি। নির্বাচন সময়সূচি ঘোষণার পরও জুলাই সনদ চূড়ান্ত হয়নি। আসনভিত্তিক হবে না প্রোপোরশনাল পদ্ধতিতে হবেএ নিয়ে দলগুলোর মধ্যে বিরোধ অব্যাহত। এই পরিস্থিতি আগামী নির্বাচনের আয়োজনকে নতুনভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। সময়মতো নির্বাচন না হলে দেশ গুরুতর সংকটের মুখে পড়তে পারে। তাই গণতন্ত্র ও দেশের স্বার্থে সকল রাজনৈতিক দলকে নিজেদের অবস্থান থেকে ছাড় দিয়ে নির্বাচন প্রস্তুতি ত্বরান্বিত করতে হবে। তবে নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন, রাজনৈতিক দল, প্রার্থী এবং ভোটারদের সহযোগিতা ছাড়া কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হবে না।

তিনি আরও বলেন, স্বৈরাচারবিরোধী দলগুলোর মধ্যে বিভাজন কমানো, কাদা ছোড়াছুড়ি ও অশালীন বক্তব্য এড়িয়ে চলা এবং নেতাদের বক্তব্যে শালীনতা বজায় রাখা জরুরি। তিনি বলেন, “পূর্বের অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া দলগুলোর মধ্যে বিতর্ক বেড়ে গেলে পরাজিত শক্তি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে পারে। কেউ কেউ ১/১১ বা গৃহযুদ্ধের ভয় দেখালেও তা অমূলক। রাজনৈতিক মতবিরোধ থাকলেও সকল দল ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ।

ছায়া সংসদ সভার সমাপ্তিতে অনুষ্ঠিত বিতর্ক প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজির দল সার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের দলকে পরাজিত করে জয় লাভ করে। বিচারক ছিলেন প্রফেসর আবু মুহাম্মদ রইস, ড. এস. এম. মোর্শেদ, সাংবাদিক সাইদুর রহমান, জাকির হোসেন লিটন ও মো. হুমায়ূন কবীর। বিজয়ী দলকে ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদপত্র দেওয়া হয়।

Link copied!