আলাস্কা বৈঠকে ট্রাম্প–পুতিন, ইউক্রেন ইস্যুতে কোনো অগ্রগতি নেই

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

আগস্ট ১৬, ২০২৫, ১২:২৩ পিএম

আলাস্কা বৈঠকে ট্রাম্প–পুতিন, ইউক্রেন ইস্যুতে কোনো অগ্রগতি নেই

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে আলাস্কার অ্যাঙ্কোরেজে অনুষ্ঠিত বহুল প্রতীক্ষিত বৈঠক ইউক্রেন যুদ্ধের ক্ষেত্রে কোনো সমাধান আনতে পারেনি।

প্রায় তিন ঘণ্টার আলোচনার পর দুই নেতা একটি যৌথ বিবৃতি দিলেও যুদ্ধবিরতি নিয়ে কোনো সমঝোতায় পৌঁছানো সম্ভব হয়নি।

বৈঠক শেষে দুই নেতা সংবাদমাধ্যমের সামনে হাজির হলেও কোনো প্রশ্ন নেননি। ফলে ফলাফল অস্পষ্ট ও অনুমানের ওপরই রয়ে গেল।

ট্রাম্পের ‘চুক্তির কারিগর ভাবমূর্তিতে আঘাত

নিজেকে দীর্ঘদিন ধরে দক্ষ সমঝোতাকারী হিসেবে তুলে ধরলেও ট্রাম্প স্বীকার করতে বাধ্য হন যে বৈঠকে কোনো দৃশ্যমান ফল পাওয়া যায়নি। তিনি বলেন, “চূড়ান্ত কোনো চুক্তি না হলে, আসলে কোনো চুক্তিই হয় না। এভাবে তিনি পরোক্ষভাবে মেনে নেন যে যুদ্ধবিরতি বা কার্যকর কোনো সমাধান হয়নি।

যদিও ট্রাম্প দাবি করেন, “কিছু ভালো অগ্রগতি হয়েছে, তবে বিস্তারিত কিছু জানাননি। সাংবাদিকদের প্রশ্ন না নিয়েই তিনি মঞ্চ ত্যাগ করেন।

ইউক্রেন ও ইউরোপীয় মিত্রদের জন্য স্বস্তির বিষয় হলো, ট্রাম্প একতরফাভাবে কোনো ছাড় দেননি। তবে আলাস্কা থেকে খালি হাতে ফেরা তাঁর ভাবমূর্তিকে দুর্বল করেছে।

সংবাদ সম্মেলনে অস্বস্তিকর মুহূর্ত তৈরি হয়যেখানে পুতিন দীর্ঘ বক্তব্য রাখেন আর ট্রাম্প পাশে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকেন। সাধারণত এ ধরনের পরিস্থিতিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নেতৃত্ব দেন। তাছাড়া আলাস্কার ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটযা একসময় ছিল “রাশিয়ান আমেরিকা”—পুতিনকে প্রতীকীভাবে আরও শক্তিশালী করে তুলেছে।

এখন প্রশ্ন, ট্রাম্প কি রাশিয়ার বিরুদ্ধে তাঁর ঘোষিত নতুন নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়ন করবেন? ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, “দুইতিন সপ্তাহের মধ্যে বিবেচনা করবেন। তবে তাঁর অস্পষ্ট মন্তব্য নতুন প্রশ্নই বাড়িয়েছে।

বৈশ্বিক আলোয় পুতিন

মার্কিন প্রেসিডেন্টের পাশে দাঁড়িয়ে পুতিন বৈশ্বিক কূটনীতির মঞ্চে দৃশ্যমান উপস্থিতি পেলেন। যদিও ইউক্রেন ইস্যুতে কোনো ছাড় দেননি। তিনি আবারও জানিয়ে দেন, সংঘাতের ‘মূল কারণ সমাধান না হলে শান্তি সম্ভব নয়যা মূলত বোঝায়, ইউক্রেনের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে রাশিয়ার অবস্থান অপরিবর্তিত।

কিয়েভে মিশ্র প্রতিক্রিয়া

বৈঠকের ফল অনেকের কাছে হতাশাজনক হলেও কিয়েভ কিছুটা স্বস্তি পেয়েছে। কারণ, এমন কোনো সমঝোতা হয়নি যাতে ইউক্রেনের ভূখণ্ড খোয়ানোর ঝুঁকি থাকত।

তবে পুতিনের বক্তব্য আবারও আশঙ্কা বাড়িয়েছে। তিনি পরিষ্কার করেছেন যে রাশিয়ার লক্ষ্য বদলায়নি। প্রায় চার বছর ধরে পশ্চিমাদের আল্টিমেটাম ও হুমকি কার্যকর হয়নি, আর অ্যাঙ্কোরেজ বৈঠকও সেই বাস্তবতা বদলায়নি।

ইউক্রেনের জন্য এটি কেবল স্থবিরতা নয়, বরং একটি ইঙ্গিতযুদ্ধ চলতেই থাকবে, আর পশ্চিমাদের সতর্কবার্তাও কার্যকর পদক্ষেপে রূপ নিচ্ছে না।

Link copied!