আজ ১৩ জানুয়ারি, আন্তর্জাতিক সন্দেহবাদী দিবস। ১৯৯০-এর দশকে এটি প্রথম পালিত হয়। দিনটি কিন্তু পালন করতে পারেন। আপনি যা বিশ্বাস করছেন, সেই সব বিশ্বাসের ভিত্তিগুলো সত্যের যুক্তিতে মেপে দেখবেন না একবার!
সন্দেহ নিয়ে আমাদের ভেতর একটি সাধারণ ধারণা আছে। তা হলো- সন্দেহ বিশ্বাসের বিপরীত। অথচ ব্যাপারটি মোটেই তা নয়। এ ক্ষেত্রে জার্মান বংশোদ্ভূত আমেরিকান দার্শনিক পল টিলিকের (১৮৮৬-১৯৬৫) বক্তব্যকে আমলে নেওয়া যেতে পারে। তিনি বলেছেন, সন্দেহ বিশ্বাসের বিপরীত কিছু নয়, বরং এটা বিশ্বাসেরই অংশ।
অতিরিক্ত সন্দেহ প্রবণতা এক ধরনের মানসিক রোগ। বিশ্বাসে মিলায় বস্তু তর্কে বহুদূর, এসব কথাকে মোটেও গায়ে মাখবেন না। কারণ সন্দেহকে একেবারেই নেতিবাচক ধরে নেওয়াটা ঠিক নয়। একমাত্র সন্দেহপ্রবণ মনই সত্য পর্যন্ত পৌঁছুতে পারে। সন্দেহপ্রবণ মন আপনাকে বিপদ থেকে বাঁচায়ও বৈকি। এছাড়া সংশয় থেকে শিখতে পারেন জীবনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ পাঠ।
তবে ব্যক্তিগত সম্পর্কে অন্যকিছু প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত সন্দেহ না থাকাটাই সমীচিন। তবে সত্যের অনুসন্ধানে সন্দেহ একটি জরুরি মনোভাব। ফারসিতে প্রবাদ , সন্দেহই হলো জ্ঞানের চাবিকাঠি। কেননা, কোনো কিছু সম্বন্ধে সন্দেহ না থাকলে অধিকতর জ্ঞান লাভ সম্ভব নয়।
সন্দেহ-সংশয়ের ওপর ভিত্তি করেই সত্য জ্ঞানের প্রসার ঘটে। রোজকার জীবনে যত্রতত্র ব্যবহারে আমরা ‘সন্দেহ’ শব্দটির অর্থই সংকুচিত করে ফেলেছি। সন্দেহ বলতে মূলত নিরীক্ষামূলক চিন্তাভাবনা ও যৌক্তিক অনুসন্ধানকে বোঝায়। প্রশ্ন উত্থাপন ও প্রাপ্ত তথ্যপ্রমাণ যাচাই-বাছাইয়ের মধ্য দিয়ে চূড়ান্ত সত্যের কাছে পৌঁছাতে হয়। চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করে ফেলা কোনো কাজের কথা নয়। জ্ঞানবিজ্ঞানের বড় সব আবিষ্কারের উৎসই তো আসলে সন্দেহ।