খ্যাতনামা এক বাঙালি সাহিত্যিক নাকি বলেছিলেন ‘মাছ’ শব্দটি শুনলেই আপামর কলকাতাবাসীর জিভে জল আর মনে হর্ষ উৎপন্ন হয়। সত্যিই, মাছের প্রতি বাঙালির আবেগকে তুচ্ছ করা অসম্ভব। এই কলকাতা শহরের মানুষ হরেক রকম মাছ পছন্দ করেন। রুই-কাতলা-ইলিশ-মাগুর থেকে শুরু করে পুঁটি-পাবদা-সিঙ্গি-চিতল এমনকি জীবনবিজ্ঞান মাথায় তুলে কলকাতার বাঙালি চিংড়িকেও মাছ হিসাবেই খুঁজে বেড়ায় বাজারে বাজারে। আর এই মহানগরে একাধিক মাছের বাজার নিজের ঐতিহ্য যথাযথ ভাবে বহনও করছে।
মানিকতলা মাছের বাজার-
এই বাজারের নাম এ শহরে তো বটেই, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়েছে। বলিউডের ‘গুন্ডে’ ছবির শুটিং হয়েছিল এই মাছের বাজারে। ভোর ৫.৩০ মিনিট থেকেই এই বাজার ক্রেতাদের ভিড়ে জমজমাট থাকে। এই বাজারে বহু ধরনের মাছ মিলবে। উৎসবের মরসুমে এই বাজারে তিল ধারণের জায়গা পাওয়া মুশকিল হয় বিভিন্ন রকম মাছের অর্ডারের জন্য।
গড়িয়াহাট বাজার-
গড়িয়াহাটে মেলে না এমন বস্তু কমই আছে। এই অঞ্চলে মাছের বাজারের সম্পর্কেও একই কথা বলবে কলকাতার মৎস্যপ্রেমী মানুষজন। তাজা মাছ ঢেলে পাথরের স্ল্যাবের উপরে ঢেলে বিক্রি করেন বহু মাছ বিক্রেতা। একটু সময় হাতে নিয়ে এই বাজারে ঘুরলে রুই মাছ সূক্ষ্ম ভাবে টুকরো করা, পমফ্রেটের স্কেলিং করা বা মাছের ফিলে বার করা দেখতে পেতে পারেন। যদুবাবুর বাজার ভবানীপুরে আশুতোষ মুখোপাধ্যায় রোড সংলগ্ন এলাকায় বিস্তৃত জায়গা জুড়ে বসে এই বাজার। বাজারের বেশ কিছুটা অংশ ছাউনির নীচে। আবার কিছু দোকানি বসেন খোলা জায়গাতেই। ভোর থেকে গভীর রাত অবধি শতাব্দীপ্রাচীন এই বাজারে চলে কেনাকাটা। রানী রাসমণির দৌহিত্র বাবু যদুনাথ চৌধুরীর নামের এই বাজারকে ভ্রান্তি বশত মানুষ জগুবাবুর বাজারও বলে থাকেন। এখানকার মাছের দোকানে ছুটির দিনে হয় উপচে পড়া ভিড়। সস্তা-দামি সমস্ত মূল্যেরই টাটকা মাছ আপনি পাবেন এই বাজারে। লেক মার্কেট কলকাতা শহরে লেক মার্কেটে পাওয়া যায় হরেক রকম জিনিস। বিশেষ করে রাস্তার উপর ফুলের দোকানের দৃশ্য অত্যন্ত মনোহর। কিন্তু লেক মার্কেটে মাছের বাজারও বিশেষ জনপ্রিয়। এখন লেক মলের পিছন দিকের অংশে এই যে মাছের বাজার বসে তাতে সন্ধ্যার পর ভিড় বাড়ে বেশি। রুই-কাতলা-বোয়াল-সিঙ্গি থেকে শুরু করে বাচা, সরপুঁটি, বেলে, তেলাপিয়া, মৃগেলের মতো মাছও মিলবে এখানে।