যুক্তরাষ্ট্রে সারোগেসির মাধ্যমে মা হয়েছেন আনা ওবরেগন নামে স্পেনের এক অভিনেত্রী। এক সপ্তাহ আগে মেয়ে শিশুর জন্ম দিয়ে সারা বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দেন ৬৮ বছরের এই অভিনেত্রী। এবার স্প্যানিশ সিটকম তারকা জানালেন, সদ্য ভূমিষ্ট হওয়া ওই মেয়ে শিশুটির পিতা আসলে তারই প্রয়াত ছেলে আলেস লেকুইও। অর্থাৎস্প্যানিস ওই অভিনেত্রী একই সাথে শিশুটির মা ও দাদী।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, মারা যাওয়ার আগে আগে ছেলের শেষ ইচ্ছে পূরণ করতেই অভিনেত্রী এমন সিদ্ধান্ত নেন।যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় বসবাসকারী কিউবান বংশোদ্ভূত এক নারী সারোগেসির মাধ্যমে এই সন্তানের জন্ম দেন।
একজন নারীর গর্ভে অন্য দম্পতির সন্তান ধারণের পদ্ধতিকে 'সারোগেসি' বলে। ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন পদ্ধতিতে নারীদেহ থেকে ডিম্বাণু ও পুরুষ দেহের শুক্রাণু দেহের বাইরে টেস্টটিউবে নিষিক্ত করে তা সারোগেট মায়ের গর্ভাশয়ে প্রতিস্থাপন করা হয়।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র থেকে হোলা ম্যাগাজিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ছেলের শেষ ইচ্ছের বিষয়টি প্রকাশ্যে আনেন ওবরেগন। তিনি বলেন, শিশুটি তার মেয়ের পাশাপাশি তার নাতনিও। অর্থাৎ তার প্রয়াত ছেলে আলেস লেকুইওর মেয়ে।
২৭ বছর বয়সে ক্যান্সারে মারা যান আলেস। মৃত্যুর এক সপ্তাহ আগে ছেলের সঙ্গে কথোপকথনের কথা তুলে ধরে আনা ওবরেগন বলেন, “নিজের একটি সন্তানকে পৃথিবীতে আনাই ছিল আলেসের শেষ ইচ্ছা।”
প্রয়াত ছেলের ইচ্ছেপূরণের জন্য ওই স্প্যানিস অভিনেত্রী ২০২০ সালে নিউ ইয়র্কে ছেলে অ্যালেসের শুক্রাণু সংরক্ষণ করেন। আর ওই শুক্রাণু ও নিজের ডিম্বানু থেকেই ফ্লোরিডায় বসবাসকারী কিউবান বংশোদ্ভূত এক নারীর গর্ভে আনা সান্দ্রা নামের মেয়ে শিশুটির জন্ম হয়।
এদিকে, স্পেনে সারোগেসি অবৈধ হলেও অন্য দেশে সারোগেসির মাধ্যমে জন্ম নেওয়া শিশু দত্তক নিতে কোনো বাধা নেই। তাই ফ্লোরিডায় জন্ম নেওয়া শিশুটিকে ওই অভিনেত্রী মাদ্রিদে নিয়ে যেতে চাইলে যুক্তরাষ্ট্রে স্পেনের কনস্যুলেটের মাধ্যমে নথিভুক্ত করাতে হবে।
আনা ওবরেগন সারোগেসির মাধ্যমে সন্তানের মা হওয়ার বিষয়টি প্রকাশ্যে আনার পরই বিষয়টি জাতীয় বিতর্কের জন্ম দেয়। স্পেনের বামপন্থী সরকারের মন্ত্রী আইরিন মন্তেরো ‘একে নারীদের উপর নিপীড়ন’ হিসেবে বর্ণনা করেন। এদিকে আলেস লেকুইওর বাবা অর্থাৎ ওই স্প্যানিস অভিনেত্রীর সাবেক স্বামী আলেসান্দ্রো লিকুইও এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।