আগস্ট ৫, ২০২৫, ০৯:০৫ পিএম
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার দিকে প্রক্টোরিয়াল টিম এসে ছবিগুলো নামিয়ে ফেলে।
সহকারী প্রক্টরের উপস্থিতিতে টিএসসি থেকে নামিয়ে ফেলা হয়েছে গোলাম আযম, কাদের মোল্লা, আলী হাসান মোঃ মুজাহিদ সহ সকল স্বীকৃত যুদ্ধাপরাধীদের দায়ে দন্ডিত ছবি। আজ ৫ ই আগস্ট স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পলায়নের এক বছর পূর্তি উদযাপনের জন্য টিএসসি তে অনুষ্ঠান আয়োজন করে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির। এ অনুষ্ঠানে তারা টিএসসির এক স্থানে মতিউর রহমান নিজামী গোলাম আযম সহ মানবতা বিরোধী অপরাধে জড়িত অনেকের ছবি প্রদর্শন করে। পরবর্তীতে এই বিষয়টি নিয়ে লেখালেখি শুরু হয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার দিকে প্রক্টোরিয়াল টিম এসে ছবিগুলো নামিয়ে ফেলে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ দ্যা রিপোর্ট ডট লাইভকে বলেন," আমি জানার সাথে সাথে আমার সহকারী প্রক্টর কে পাঠিয়ে ছবিগুলা নামিয়ে ফেলেছি। আমরা চাই ৫ ই আগস্ট আনন্দঘন পরিবেশের মধ্য দিয়ে দিনটি উদযাপন করা হোক। কোনরকম বিতর্ক ও বিশৃঙ্খলার পরিবেশের যাতে সৃষ্টি না হয় এ কারণে ছবিগুলো নামিয়ে ফেলা হয়েছে।"
এ ব্যাপারে ইসলামী ছাত্র শিবিরের বিজ্ঞান বিষয়ক সম্পাদক ও অনুষ্ঠানের অন্যতম আয়োজক ইকবাল হায়দার দ্যা রিপোর্ট ডট লাইভকে বলেন, "মূলত ছবিগুলো রাখা হয়েছিল বিগত ১৬ বছরে হাসিনার জুডিশিয়াল কিলিং ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে যারা শহীদ হয়েছে তাদেরকে তুলে ধরার জন্য। "
ছবিটি নামিয়ে ফেলার ব্যাপারে তিনি বলেন,"যে শাহবাগের হাত ধরে ফ্যাসিবাদের উত্থান হয়েছে তা পরাজিত হয়েছে জুলাই আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে। কিন্তু সেই শাহবাগ ই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে প্রণোদিতভাবে ও একই সাথে প্রশ্নবিদ্ধ মব জাস্টিস শুরু করেছিল। আমরা মনে করি যারা এই প্রশ্নবিদ্ধ মব জাস্টিস এর ভিকটিম তারা বিগত ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদেরও ভিকটিম।
তিনি আরো বলেন,"বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক শৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের অনুরোধ করলে আমরা ছবিগুলো সরিয়ে ফেলেছি। "
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী সভাপতি নূজিয়া হাসিন রাশা বলেন," আজ পাঁচই আগস্ট স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা পতনের এক বছর। কিন্তু প্রশাসনের মদদ পুষ্ট হয়ে আজকের এই দিনটিকে নানাভাবে বিতর্কিত করার চেষ্টা করছে ইসলামী ছাত্রশিবির। তাদের প্রদর্শনীতে তারা একাত্তরের স্বীকৃত রাজাকার ও ধর্ষকদের এবং যারা একাত্তরে বাংলাদেশের মুক্তি কামে জনগণদের সাথে গাদ্দারি করেছিল তাদের ছবি তুলে ধরে। এটি দেখে আসলে অনেক শিক্ষার্থীদের মধ্য নানা প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। এরই ফলশ্রুতিতে বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী সাধারণ সম্পাদক জাবির আহমেদ জুয়েল প্রক্টর কে ফোন দেন এবং বলেন ১০ মিনিটের মধ্যেই এ ছবিগুলো তুলে ফেলা হবে। তাও প্রায় ৪৫ মিনিট পরে এসে বিভিন্নভাবে কল দেওয়ার পরে প্রক্টোরিয়াল টিম এসে ছবিগুলো সরিয়ে ফেলে।
তিনি আরো বলেন,"আজকের এই ঘটনাটির দায় পুরোপুরি প্রশাসনের যারা জানে না আজকের অনুষ্ঠানটিতে কি আয়োজন করা হবে। আমরা স্পষ্ট ভাবে বলতে চাই আজকের ঘটনাটির মধ্য দিয়ে ইসলামী ছাত্রশিবির ২৪ কে বিতর্কিত করেছে। ২৪ এর শহীদদের রক্তকে তারা নিচু করেছে যেভাবে তারা ৭১ কে করেছে। এটি শিবিরের নতুন কোন পায়তারা না তারা সব সময় ৭১ ও ২৪ কে মুখোমুখি করে সেটাকে কলঙ্কিত করেছে। মানুষের সংগ্রামকে তারা ছোট করে দেশের সার্বভৌমত্বের প্রশ্নবিদ্ধ করে। "