‘গুপ্ত শিবির’ কম ছিল না দাবি কাদেরের, সাদিক বললেন ন্যারেটিভটি ‘সম্পূর্ণ মিথ্যা’

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

আগস্ট ৪, ২০২৫, ০৪:১৩ পিএম

‘গুপ্ত শিবির’ কম ছিল না দাবি কাদেরের, সাদিক বললেন ন্যারেটিভটি ‘সম্পূর্ণ মিথ্যা’

ছবি: সংগৃহীত

দোর্দণ্ড প্রতাপে দেড় দশকের বেশি সময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নিয়ন্ত্রণকারী ছাত্রলীগে অনেক ‘গুপ্ত শিবির’ ছিল বলে দাবি করেছেন বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক আব্দুল কাদের।

তার ভাষ্য, “লীগ যে নিপীড়ন-নির্যাতন চালাতো তারা সেগুলার অংশীদার হতো, লীগের কালচার-ই চর্চা করত।”

আর রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর শিবিরের তদবিরের কারণেই এমন অপকর্মকারীরর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি বলেও দাবি করেছেন কাদের। তবে এসব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত শিবির নেতা সাদিক কায়েম।

এই আলোচনার সূত্রপাত্র ঘটে ২ জুলাই আব্দুল কাদেরের দেওয়া এক ফেইসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে।

তিনি লেখেন, “আমরা ক্যাম্পাসে দেখেছি, শিবিরের যে সকল ছেলেরা ছাত্রলীগে গুপ্ত আকারে প্রবেশ করত, তারাই বেশি আগ্রাসী ছিল। ক্যাথলিক মোর দ্যান পোপ সাজার চেষ্টা করত। গেস্টরুমে তারাই অনেকাংশে বেশি আক্রমনাত্মক থাকতো। নিজেকে ছাত্রলীগার প্রমাণ করার জন্য এসব কাজ করত।

“হলে হলে ছাত্র নির্যাতন, শিবির ট্যাগ দিয়ে নির্যাতনে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই শিবির থেকে আগত ছাত্রলীগরাই সম্মুখ সারিতে থাকতো। অসংখ্য নজির আছে এমন।”

এরপর এ পোস্টের স্ক্রিনশট ছাত্রলীগের ফেইসবুক পেইজসহ ক্ষমতাচ্যুতদের ওয়ালে ঘুরতে থাকে। তারা আওয়ামী লীগ আমলের বিভিন্ন অপকর্মের দায় শিবিরকে দিতে থাকেন। শিবিরেরও অনেকে কাদেরের ওপর ক্ষোভ ঝারতে শুরু করেন।

এ পরিস্থিতিতে রোববার নতুন পোস্টে কাদের লেখেন, “গতকালের ঐ কমেন্টে আমি মূলত বুঝাতে চেয়েছি, হলে থাকার কারণে শিবিরের যে ছেলেগুলা সক্রিয়ভাবে ছাত্রলীগ করতো, তারা মূলত আইডেন্টেটি ক্রাইসিস থেকে উৎরানোর জন্য কিছু ক্ষেত্রে অতি উৎসাহী কর্মকাণ্ডে জড়াতো।

“সেটা কেবল নিজেকে লীগার প্রমাণের দায় থেকে। লীগ যে নিপীড়ন-নির্যাতন চালাতো তারা সেগুলার অংশীদার হতো, লীগের কালচার-ই চর্চা করত। আমার এই কথাটা অস্বীকার করার সুযোগ নাই, ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি তো এমন ছিল।”

তিনি এও বলেছেন, “আরেকজন ব্যক্তি আরমান হোসাইন ১৫-ই জুলাই কেন্দ্রিক তার করা মামলার অভিজ্ঞতা থেকে মন্তব্য করেছেন যে, শিবির থেকে আসা ছাত্রলীগের কয়েকজন ১৫ তারিখের হামলায় জড়িত ছিল।

“এই দুইটা কমেন্ট’কে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগ তিলকে তাল বানিয়ে নিজেরা দায়মুক্তি নেওয়ার কূটচাল চেলেছে। সেটাকে আবার শিবির খুবই নোংরাভাবে প্রচার করেছে, ভিন্নভাবে ফ্রেমিং করার মধ্য দিয়ে।”

কাদের কেবল এ বক্তব্য দিয়েই ক্ষান্ত থাকেননি, ছাত্রলীগে থাকা এমন কয়েকজন ব্যক্তির ফিরস্তিও তুলে ধরেছেন, যারা তার ভাষায় ‘গুপ্ত শিবির’।

শীর্ষ পদে আসা নিয়ে দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি অবস্থান, উত্তেজনা এবং একপর্যায়ে হাতাহাতি- এমন পরিস্থিতির মধ্যে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি আত্মপ্রকাশ করে নতুন সংগঠন ‘বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ’।

এ সংগঠনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়কের দায়িত্ব পান আব্দুল কাদের। সমাজকল্যাণ বিভাগের ২০১৮-২০১৯ শিক্ষাবর্ষের এ শিক্ষার্থী বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক ছিলেন। তিনি নাহিদ ইসলাম-আখতার হোসেন নেতৃত্বাধীন ‘গণতান্ত্রিক ছাত্র শক্তিরও সাবেক নেতা।

আবদুল কাদের ফেইসবুক পোস্টে লিখেছেন, “২০২৩ সালের ২২ জানুয়ারি রাতে বিজয় একাত্তর হলের শাহরিয়াদ নামের ২০১৯-২০ সেশনের (শিক্ষাবর্ষের) এক শিক্ষার্থীকে রাতভর মারধর করেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। সেখানে নেতৃত্বে ছিলেন মাজেদুর রহমান নামের একজন। যিনি আমার পাশের এলাকার। একই মাদ্রাসায় পড়ার সুবাদে জানতাম, তিনি ছাত্রশিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। ক্যাম্পাসে এসে বনে গেলেন ভয়ংকর নিপীড়ক, নির্যাতক।

“ছাত্রলীগের ঢাবি (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়) শাখার সর্বশেষ কমিটির দপ্তর সম্পাদক ২০১৭-১৮ সেশনের মুসাদ্দিক বিল্লাহ আমার জেলার, যার পরিবার জামাত, যিনি শিবিরের সাথি ছিলেন; কিন্তু পদপদবির জন্য তিনি হয়ে গেলেন কট্টর ছাত্রলীগ। ইতিপূর্বে কোনো কমিটিতে না থেকেও তিনি সরাসরি ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক পদ বাগিয়ে নেন। তাহলে চিন্তা করেন, তাকে কতটা বিশ্বস্ততার পরিচয় দিতে হইছে, কতটা ছাত্রলীগের চরিত্র ধারণ করতে হইছে!”

কাদের লিখেছেন, “জসীমউদ্দীন হলের ২০১৬-১৭ সেশনের আফজালুন নাঈম। গেস্টরুমে তার দুর্ব্যবহার, নিপীড়নের জ্বালায় হলের ছেলেরা অতিষ্ঠ ছিলেন।নাঈমের দুর্ব্যবহারের কথা হলের ছেলেদের মুখে মুখে।

“অথচ এই নাঈম এখন জামাতশিবিরের আইকন শিশির মনিরের বিশেষ সহকারী! মুজিব হলের জুনিয়রদের কাছে এক ত্রাসের নাম ছিল ২০১৬-১৭ সেশনের ইলিয়াস হোসাইন। সঞ্জিতের রাজনীতি করতেন ইলিয়াস, হল ক্যান্ডিডেট ছিলেন। মিছিলমিটিংয়ে যাওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদেরকে সর্বোচ্চ ফোর্স করতেন, গেস্টরুমে অসহ্য মেন্টাল টর্চার করতেন, ছাত্রলীগের পদও পেয়েছিলেন। ৫ আগস্টপরবর্তী সময়ে এই ইলিয়াস শিবিরের বড় নেতা হিসেবে আবির্ভূত হলেন, চলাফেরা করেন এখন শিবিরের ইমামদের সঙ্গে!”

গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের নেতা আবদুল কাদের বলেন, ২০১৭ সালে হাজী মুহাম্মদ মুহসীন হলে ইসলামি পেইজে পেজে লাইক দেওয়ায় শিবির সন্দেহে পাঁচ শিক্ষার্থীকে রাতভর নির্যাতনের করে হলছাড়া করা হয়। এ ঘটনায় ১৩ ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে রাজধানীর শাহবাগ থানায় মামলা হয়।

“মুহসীন হলের (ছাত্রলীগের) সাবেক ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক মো. শাহাদাত হোসেন ওরফে সোহেল ভুক্তভোগীর মোবাইল চেক করেন এবং সঙ্গে সঙ্গেই অতর্কিত হামলা চালান। এই শাহাদাত আবার শিবির হিসেবে সর্বমহলে পরিচিত ছিলেন। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে এই মামলা হওয়ার পরে শাহাদাতকে নিয়ে একজন পোস্ট করেন। পরবর্তী সময়ে ওই পোস্টকারীর সঙ্গে শিবিরের তৎকালীন সভাপতি সাদিক কায়েম যোগাযোগ করেন। শাহাদাত ভালো মানুষ, তাকে যেন এসবের সঙ্গে না জড়ান!”

কৌশলগত জায়গা থেকে শিবির নেতাকর্মীরা ছাত্রলীগের বড় পদ নিতেন মন্তব্য করে কাদের বলেছেন, “হল ক্যান্ডিডেট, বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যান্ডিডেট হওয়ার কারণে তাকে ছাত্রলীগ যে স্টাইলে কার্যক্রম পরিচালনা করে, ঠিক সেই স্টাইল ফলো করা লাগত। শিক্ষার্থীদের গণরুম, গেস্টরুম, জোরপূর্বক মিছিলমিটিংয়ে ধরে নিয়ে যাওয়ার কাজটা একিনের সঙ্গে করতেন তারা। উদ্দেশ্য একটাই, পদ পাইতেই হবে।

“ছাত্রলীগের হল ক্যান্ডিডেটদের পেছনে আবার কিছু গুপ্ত শিবির থাকত। এরা তেলবাজি আর চাটুকারিতায় ছিল অনন্য। এরা সব কিছু আগবাড়িয়ে আনজাম দিত। ভাই কখন কোথায় আসবে, কখন ভাইটাল প্রোগ্রাম, সেটার তাগিদ দিয়ে জোরপূর্বক ছেলেপেলেদেরকে হাজির করার দায়িত্ব নিত এই প্রকৃতির শিবিররা।

“এমন কর্মকাণ্ডে জড়িত একজন হচ্ছেন জহু হলের ২০২১-২২ সেশনের হাসানুল বান্না, যিনি ৫ আগস্টের পরে শিবিরের সদস্য সম্মলনে গিয়ে নিজেকে সদস্য হিসেবে প্রকাশ করেন। আবার এই বান্না এখন শিবিরের জহু হল শাখার বড় নেতা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছেন।”

আবদুল কাদের লিখেছেন, “স্যার এ এফ রহমান হলের ২০১৮-১৯ সেশনের রায়হান উদ্দিন। যিনি ছাত্রলীগের অ্যাকটিভ (সক্রিয়) কর্মী ছিলেন। মেধাবী হওয়ার দরুন হল ক্যান্ডিডেটের বক্তব্যগুলা যিনি নিজে লিখে দিতেন, সারাক্ষণ ক্যান্ডিডেটের আগেপিছে থাকতেন, কাউকে ভিড়তে দিতেন না।

“এফ রহমান হলের কুখ্যাত ছাত্রলীগ সভাপতি রিয়াজের একনিষ্ঠ অনুসারী এই রায়হান ৫ তারিখের পরে শিবিরের বড় নেতা হিসেবে হাজির হয়েছেন। আগের ফেসবুক আইডি বাদ দিয়ে এখন নতুন আইডি চালান। তবে আগের আইডি এবং তার কৃতকর্ম মুছে ফেলতে পারেননি। এখনো আছে।”

ছাত্রলীগ পরিচয়ে এমন নিপীড়ন যারা চালিয়েছেন, তাদের অনেককে রক্ষায় শিবিরের তৎকালীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি সাদিক কায়েম ফোন দিয়ে তদবির করেন বলেও দাবি করেছেন কাদের।

তার ভাষ্যে, “৫ তারিখের পরে শিবিরের যে সব ছেলে ছাত্রলীগের ভেতরে থেকে ছাত্রলীগের মতো আচরণ করেছে, তাদেরকে আইনের আওতায় আনার বিষয়ে জনাব সাদিক কায়েমের সঙ্গে আমার আলাপ হয়। ৫ তারিখের পরে হলে হলে ছাত্রলীগের নিপীড়কদের তালিকা হচ্ছিল।

“একদিন ফোনে এই বিষয়ে কথা বলার পরিপ্রেক্ষিতে সাদিক ভাইকে জিজ্ঞাসা করলাম, একাত্তর হলের হাসান সাঈদী, এফ রহমানের তানভীর হাসান শান্তর মতো শিবিরের যারা লীগের আমলে অপকর্ম করেছে, তাদেরকে মামলা দিবেন না? প্রতিউত্তরে উনি বললেন, “তোমরা দাও।”

“আমি বললাম, আমরা আর তোমরা দেওয়ার কী আছে! লিস্ট তো আমরাআপনারা মিলেই করতেছি। এ বিষয়ে সাদিক ভাইয়ের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডা হয়; কিন্তু শেষে আর হাসান সাঈদী কিংবা শান্তদের নাম মামলার তালিকায় উঠল না!”

কাদের লিখেছেন, “এই সাঈদী ছিল শিবিরের সাথি। পরে একাত্তর হল ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িয়ে গেছে। এমন কোনো অপকর্ম নেই যে সে করেনি। ও একাত্তর হলের কুখ্যাত সন্ত্রাসী আবু ইউনুসের রাজনীতি করত। শিবিরসংশ্লিষ্টতার কারণে তারে পোস্টপদবি দেয়নি দীর্ঘদিন। সে হতাশায় আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছিল। “নিজেকে লীগার প্রমাণ করার জন্য সে আরও উগ্রপন্থা বেছে নিল। একে তো শিবিরসংশ্লিষ্টতা, তার ওপর নিজের নাম সাঈদী হওয়ার কারণে পদপদবী পাচ্ছে না, সে জন্য কাগজপত্রে নাম পরিবর্তন করে সাঈদ বানিয়েছেন তিনি! অবশেষে সে হীন কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ, একাত্তর হল ছাত্রলীগের উপদপ্তর সম্পাদক হয়। তারপর সৈকতের রাজনীতি করা শুরু করে, হল ক্যান্ডিডেট ছিল।”

পটপরিবর্তনের পর এ সাঈদীকে শিক্ষার্থীরা পুলিশে তুলে দিলেও এক সপ্তাহের মধ্যে জামিনে মুক্ত হন জানিয়ে কাদের লিখেছেন, “অথচ জুলাইয়ের মামলার আসামির নাকি জামিন হয় না সহজে! তাহলে চিন্তা করলাম, এদের লিংকলবিং কোন পর্যায়ে! ছাত্রলীগের ভেতরে ঢুকে ছাত্রলীগের কালচার চর্চা করা এমন গুপ্ত শিবিরের সংখ্যা কিন্তু কম ছিল না।”

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক কাদের বলেন, “৫- ই আগস্টের পরে জুলাইয়ের ঘটনার প্রেক্ষিতে দুইটা মামলা হয়। মাহিম সরকার এবং আরমান হোসেন বাদী হয়ে এই দুইটা মামলা করেন। এই দুই মামলার বাদীর সাথেই শিবিরের সাদিক কায়েম সরাসরি দেখা করে কয়েকজন ব্যক্তির ব্যাপারে তদবির করেন।

“মাহিন এবং আরমানকে একটা তালিকাও দেন, যেনো এই ব্যক্তিগুলার নাম মামলা থেকে কেটে দেয়, সেই বিষয়ে সাদিক কায়েম সরাসরি তদবির করেন। আরমান পরবর্তীতে খোঁজ নিয়ে দেখেন, সাদিক কায়েম যে নামগুলা দিছেন, তারা শিবিরের সাথে সংশ্লিষ্ট। এরমধ্যে একজম আসামী আরমানের কাছে স্বীকারও করছেন, তিনি শিবির করেন, তার নাম যেনো মামলা থেকে বাদ দেওয়া হয়!”

খেদ প্রকাশ করে কাদের বলেন, “জুলাইয়ের অঙ্গীকার রক্ষা করা যায় নাই এই তদবির কাণ্ডের কারণে, সবাই সবার দলীয় মানুষজনকে বাঁচিয়ে দিতে গিয়ে জুলাইয়ের সন্ত্রাসীদেরকে মুক্তি দিয়ে দিছে।

“শিবির অস্বীকার করতেছে, তাদের কোনো নেতাকর্মী গুপ্তভাবে লীগের ভেতরে ঢুকে লীগের কালচার চর্চা করে নাই। তারা আমাদের কাছে প্রমান চাচ্ছে; কিন্তু শিবির তাদের বিগত একযুগের হল কমিটি এবং ঢাবি শাখার কমিটি প্রকাশ করুক।

“তাহলেই তো মানুষজন ক্লিয়ার হতে পারে, শিবির ছিল কি; ছিলো না। বর্তমানের হল কমিটিও তো প্রকাশ করতে পারে। ৫ তারিখের পর তাদের ভয় কিসের? নাকি তাদের কৃতকর্ম প্রকাশ হয়ে যাবে, সেই ভয়ে প্রকাশ করতেছে না! হলে হলে এখন শিবিরের হয়ে মাতব্বরি করা মানুষের পূর্বের চেহারা প্রকাশ হয়ে যাবে!”

অভিযোগের বিষয়ে যা বললেন সাদিক কায়েম

ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সভাপতি আবু সাদিক কায়েম বর্তমানে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছেন।

তিনি ফেসবুকে পোস্টে বলেন, “স্ক্রিনশটে যাদের নাম যুক্ত আছে, তারা কেউই শিবিরের না। ৫ আগস্টের পর থেকেও তারা শিবিরের কোনো পদে বা কর্মসূচিতে ছিলেন না। ফলে, ছাত্রলীগে লুকিয়ে থাকা শিবিরকে বাঁচাতে সহায়তা করার ন্যারেটিভটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। বিপ্লবের পর দুইটি কনসার্ন ছিল। প্রথমটি ছিল অপরাধের বিচার।

“দ্বিতীয়টি ছিল বিচারের নামে নিরীহ কোনো ব্যক্তির হয়রানি না হওয়া। সে সময় অনেকেই বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগ করে জানান যে, তারা ছাত্রলীগের সঙ্গে যুক্ত থাকলেও কোনো ফৌজদারি অপরাধ করেননি এবং ব্যক্তিগত আক্রোশবশত মামলায় তাদের নাম যুক্ত করা হচ্ছে।”

সাদিক কায়েমের ভাষ্য, “স্বাভাবিকভাবেই গণহারে মামলার আশঙ্কা থাকলে কে অপরাধী আর কে নিরপরাধতা যাচাই করার জন্য আন্দোলনে সক্রিয় নানা স্টেকহোল্ডারের কাছে তথ্যগুলো ফরওয়ার্ড করে পারস্পরিক ফিডব্যাকের ভিত্তিতে ভেরিফাই করাটা জরুরি ছিল।

“তাই বেশ কয়েকটি কনসার্ন বিভিন্ন মাধ্যম থেকে পেয়ে আমি এনসিপি নেতা ও সংস্কার কমিশনের এক সদস্য আরমান হোসেন এবং মাহিনকে ফরওয়ার্ড করি অধিকতর তদন্তের জন্য।

“তাদের বলেছি, এমন একটি দাবি এসেছে যে তারা হামলায় যুক্ত ছিলেন নাএই দাবিটি খতিয়ে দেখতে, যেন অসচেতনতা বশত নিরপরাধ কেউ ভিকটিম না হন।”

শিবির নেতা সাদিক কায়েম বলেন, “ছাত্রলীগে লুকিয়ে থাকা শিবিরকে বাঁচাতে সহায়তা করার ন্যারেটিভটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। সাঈদী নামের এক ছেলেকে মামলা থেকে বাঁচাতে আমি নাকি বিভিন্ন জায়গায় কল করেছিএটাও একটি মিথ্যা।

“সাঈদী অপরাধী এবং তাকে বাঁচানোর কোনো প্রশ্নই আসে না। মুহসিন হলের একজনের সাথে আমাকে জড়িয়ে মিথ্যা অপবাদ দেওয়া হয়েছে। অথচ উক্ত শাহাদাতকে আমি চিনিই না।”

Link copied!