জানুয়ারি ২, ২০২৪, ০৮:৩২ এএম
অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন না করতে পারলে আমাদের রাষ্ট্র নিজেই ব্যর্থ রাষ্ট্র হয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশনার মো. আনিছুর রহমান।
মঙ্গলবার আগারগাঁওয়ের বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটদের প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে এমন মন্তব্য করেন তিনি।
প্রায় তিন হাজার এক্সিকিউটিভ ও জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটরা কাজ করবেন জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা তিনটি শব্দের কথা বলে থাকি এগুলো হলো অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য এর কোনো বিকল্প নেই। এই নির্বাচন শুধু আমাদের দৃষ্টিতে ১৮ কোটি মানুষ দেখছে তা নয়। আমাদেরকে দেখছে সমগ্র বিশ্ব। আমরা কিভাবে নির্বাচন করবো, কতটুকু গ্রহণযোগ্য হবে, এইটা তারা মূল্যায়ন করবে। এবারের সর্বোচ্চ সংখ্যক বিদেশি পর্যবেক্ষক থাকবেন। তারা কে কোথায় যাবেন, এটা তাদের উইলনেস, আমরা কাউকেই ইম্পোজ করবো না যে আপনারা এখানে বা ওখানে যান। তারাই ঠিক করবেন কোথায় যাবেন, আমরা তাদের যাতায়াত ও নিরাপত্তার ব্যবস্থা করবো।
সশস্ত্র বাহিনীর মুভ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গতকালকে আমাকের একজন রিটার্নিং অফিসার ফোন দিয়েছেন। আমি ইসি সচিবকে বলেছি। কিছুক্ষণ আগে জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিবকে বলেছি। এক বাহিনী তারা ডেপ্লয় হয়ে গিয়েছে। তারা ২৯ তারিখ থেকেই মাঠে আছে। তারা একটা জায়গায় নিজেরাই অপারেশন চালিয়েছে এবং একজনকে আটক করে নিয়ে আসছে উইদাউট এনি ম্যাজিস্ট্রেট। এটা তো আইনের মধ্যে পড়ে না বা আইনী কোনো কাভারেজও সে পাওয়ার কোনো কথা না।
সিনিয়র সচিব বলেছেন যে উনি গতকালকেই (সোমবার) পরিপত্র জারি করেছেন- ম্যাজিস্ট্রেট ছাড়া সেটা সশস্ত্র বাহিনীর যারাই হোক, যেহেতু আমাদের সশস্ত্র বাহিনী বলতে আমাদের নৌ বাহিনীও কাজ করবে কোনো কোনো উপকূলীয় এলাকায় আছে। বাংলাদেশ সেনা বাহিনী, কোস্টগার্ড, বিজিবি। পুলিশ বাহিনীর জন্য অনেক ক্ষেত্রে দরকার হয় না। বিশেষ করে ওই বাহিনীগুলোর জন্য বিজিবি যখনই মুভ করবে একজন করে একজন করে ম্যাজিস্ট্রেট থাকতে হবে। ম্যাজিস্ট্রেট না থাকলে সে ক্ষেত্রে পদ্ধতিগত ত্রুটি থেকে যাবে এবং কাঙ্খিত ফলাফল আমরা পাবো না।
তিনি আরও বলেন, এরআগে বিভিন্ন বাহিনী প্রধান এবং জননিরাপত্তা সিনিয়র সচিবের সঙ্গে আমরা বসেছিলাম। ম্যাজিস্ট্রেট ছাড়া যে অপারেশন করে এগুলো বৈধ না এবং এগুলো যাতে না হয় সে জন্য তারা সার্কুলার করবেন বলে জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, উদ্দেশ্য একটাই সেটি হলো অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন করা। আমরা যদি অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন না করতে পারি। কোনো কারণে যদি আমরা ব্যর্থ হই। তাহলে আমাদের রাষ্ট্র, নিজেই ব্যর্থ রাষ্ট্র হয়ে যাবে। আমরা সেটা চাইব না। কারণ আমরা সমগ্র বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবো। কোনো মতেই এই নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ হতে দেওয়া যাবে না। যখন যেখানে যেই পদক্ষেপ গ্রহণ করার দরকার সময়ক্ষেপন না করে তাৎক্ষণিকভাবে সেখানে পদক্ষেপ নিতে হবে।
ভোট বর্জন করাদের বিষয়ে তিনি বলেন, কতগুলো সমমনা দল জোট মিলে নির্বাচন প্রতিহত করার অসযোগিতা করা ইত্যাদি অনেক কর্মসূচি দিচ্ছেন। যদিও সর্বশেষ যতটুকু আমরা জানি সহিংসতা কার্যক্রমে তারা যাবেন না বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। তারপর হতে পারে কারণ আমাদের সামনে উদাহরণ আছে ২০১৪ সালে ব্যাপক সহিংসতা হয়েছিল, অনেক ভোটকেন্দ্র জ্বালিয়ে দিয়েছিল, অনেক যানবাহনের ক্ষতি করে দিয়েছিল, অনেক প্রাণহানি হয়েছিল। অন্য যেকোনো নির্বাচনের চেয়ে এবারের সহিংসতা নাই বললেই চলে। আচরণবিধি লঙ্ঘনেও অন্য যেকোনোবারের সঙ্গে তুলনা করলে অনেক কম। আমরা মনে করি আরও কম হওয়া উচিত ছিল। একেবারেই কোনো ঘটনা না ঘটা উচিত ছিল। এখন যে কিছু কিছু ঘটনা ঘটছে অনেক ক্ষেত্রে পূর্ব শত্রুতামূলক কাজ নির্বাচনী প্রচার প্রচারণার সুযোগ সেটার মধ্যে নিয়ে এসে সংঘর্ষ হয়। এ রকম কিছু ঘটনা ঘটেছে বা ঘটছে।
ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমান, অর্থবিভাগের সচিব ড. মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার, মন্ত্রিপরিষদের সমন্বয় ও সংস্কার সচিব মো. মাহমুদুল হোসাইন খান ও ইসির উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।