এভারেস্টের চেয়েও বড় ধূমকেতু এগিয়ে আসছে পৃথিবীর দিকে

ফাহিম রেজা শোভন

মার্চ ২৮, ২০২৪, ০৩:১৬ এএম

এভারেস্টের চেয়েও বড় ধূমকেতু এগিয়ে আসছে পৃথিবীর দিকে

১২পি/পনস–ব্রুকস। ছবি : নাসার সৌজন্যে

মাদার অব ড্রাগন্স – এর নাম শুনেছেন? না, গেম অব থ্রোনস সিরিজের ডেনিরেস টারগেরিয়ান যে মাদার অব ড্রাগন বলে খ্যাত হয়েছিলেন, তার কথা বলছি না।

বলছি, বিশ্বের সবচেয়ে বড় ধূমকেতু, হ্যালির ধূমকেতুর ন্যায় বিরটাকায় আরেক ধুমকেতু 12P/Pons-Brooks এর কথা। এর বিশালতা দেখে ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি একে আখ্যা দিয়েছে মাদার অব ড্রাগন্স নামে।

জ্যোতির্বিজ্ঞানী ও মহাকাশপ্রেমীদের জন্য ২০২৪ একদম সোনায় সোহাগা। এপ্রিলে যেমন একদম পরিপূর্ণ পূর্ণগ্রাস সূর্যগহণের দেখা মিলবে যা ৫০ বছরের মধ্যে দেখা মেলে নি আবার মিলবেও না। তেমনি সাত দশক পর আবারো বিশ্ববাসী সাক্ষী হতে যাচ্ছে এত বৃহদাকায় এক ধূমকেতুর।

আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে পৃথিবীর খুব কাছে আসছে 12P/Pons-Brooks কমেট।

এটি এতটাই বড় যে মাউন্ট এভারেস্ট এর উচ্চতাকেও ছাড়িয়ে যাবে বলে মত দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।

দীর্ঘ ৭১ বছর পর বিরল এই ধূমকেতুর দেখা মিলতে যাচ্ছে। ১২পি/পনস–ব্রুকস খালি চোখেও দেখা যেতে পারে।

এভারেস্টের চেয়েও বড় এই ধূমকেতুটি নির্দিষ্ট সময় পরপর পৃথিবীর কাছাকাছি আসে। সূর্যকে প্রদক্ষিণ করা ধূমকেতুটি প্রতি ৭০ বছর পরপর সৌরজগতের ভেতরে চলে আসে।

নামকরণ

জ্যোতির্বিজ্ঞানী জ্যঁ-লুইস পনস ১৮১২ সালে প্রথম ধূমকেতুটি আবিষ্কার করেন। এরপর ১৮৮৩ সালে এটি আবার দেখতে পান জ্যোতির্বিজ্ঞানী উইলিয়াম রবার্ট ব্রুকস। তাদের নামানুসারে এর নামকরণ করা হয় ১২পি/পনস–ব্রুকস।

সর্বশেষ ১৯৫৪ সালে ধূমকেতুটি সূর্যের কাছাকাছি এসেছিল। ২০২৪ সালের পর আবার ২০৯৫ সালে এটি আবার সূর্যের কাছাকাছি আসতে পারে। একে অনেক সময় শয়তান (ডেভিল) ধূমকেতু হিসেবেও উল্লেখ করা হয়।

আগামী ২১ এপ্রিল ধূমকেতুটি সূর্যের খুব কাছাকাছি পৌঁছাবে। ইতোমধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের জ্যোতির্বিদেরা দূরবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে এটি দেখতে পাচ্ছেন এবং ছবি তুলছেন।

চূড়ান্তভাবে আগামী ২ জুন এটি পৃথিবীর খুব কাছাকাছি আসবে। এ সময় পৃথিবী থেকে এর দূরত্ব হবে ১৪ কোটি ৪০ লাখ মাইল।

আগামী ৮ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, মেক্সিকো থেকে সূর্যগ্রহণ উপভোগ করার সময় এই জায়ান্ট ধুমকেতুটি সেখান থেকে দেখা যেতে পারে। অন্য ধূমকেতুর মতোই ১২পি/পনস-ব্রুকস মূলত ধূলি, বরফ ও ধাতব পদার্থের তৈরি। সূর্যের কাছাকাছি গেলে তাপে সেখান থেকে গ্যাস বের হয় এবং ধূলিকণা মিশে ধূমকেতুর বায়ুমণ্ডল সৃষ্টি করে। এ ছাড়া সৌরবায়ুর কারণে ধূমকেতুর একটি লেজ সৃষ্টি হয়।

ধূমকেতু ১২পি/পনস-ব্রুকস হল একটি ‍‍`হ্যালি-টাইপ‍‍` ধূমকেতু যার কক্ষপথের সময়কাল প্রায় ৭১ বছর এবং এর একটি নিউক্লিয়াস প্রায় ৩০ কিলোমিটার চওড়া।

ধূমকেতুকে বলা হয় প্রাচীন মহাজাগতিক আইসবার্গ। তারা প্রায় ৪.৬ বিলিয়ন বছর পুরানো এবং সূর্য, পৃথিবী এবং অন্যান্য গ্রহের মতো একই সময়ে গঠিত।

Link copied!