অ্যাপল, ফেসবুক, গুগলসহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম থেকে ১৬০০ কোটি ইউজার একাউন্টের তথ্য ফাঁস

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

জুন ২১, ২০২৫, ০৩:১১ পিএম

অ্যাপল, ফেসবুক, গুগলসহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম থেকে ১৬০০ কোটি ইউজার একাউন্টের তথ্য ফাঁস

বিশ্বের ইতিহাসে অন্যতম বড় তথ্য ফাঁসের ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে বিশেষজ্ঞরা। এতে অ্যাপল, ফেসবুক, গুগলসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং সরকারি সেবার প্রায় ১৬০০ কোটি ইউজার নাম পাসওয়ার্ড ফাঁস হয়ে গেছে।

বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ফোর্বসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এই ভয়াবহ তথ্য ফাঁসের ঘটনায় বিশ্বব্যাপী কোটি কোটি ব্যবহারকারীর অ্যাকাউন্ট ঝুঁকির মুখে পড়েছে।

ঘটনার পর প্রযুক্তি জায়ান্ট গুগল ব্যবহারকারীদের দ্রুত পাসওয়ার্ড পরিবর্তনের আহ্বান জানিয়েছে।

একই সঙ্গে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই ব্যবহারকারীদের এসএমএসে প্রাপ্ত সন্দেহজনক লিংকে ক্লিক না করার ব্যাপারে সতর্ক করেছে।

সাইবারনিউজ নামের একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান জানায়, অন্তত ৩০টি আলাদা ডেটাসেট বা তথ্যভাণ্ডার ইন্টারনেটে ফাঁস হয়েছে। প্রতিটি ডেটাসেটে কয়েক কোটি থেকে শুরু করে সাড়ে তিনশো কোটি পর্যন্ত ইউজার তথ্য রয়েছে।

গবেষকরা জানিয়েছেন, আগের ফাঁস হওয়া তথ্যের মতো এবার এটি পুরনো তথ্যের পুনরাবৃত্তি নয়, বরং সম্পূর্ণ নতুন এবং আগে প্রকাশ না পাওয়া এক বিশাল তথ্যভাণ্ডার।

ব্রিটিশ দৈনিক দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট জানায়, এই ফাঁস হওয়া তথ্যগুলো একেবারেই নতুন এবং বড় পরিসরে সাইবার ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।

গবেষকদের ভাষায়, "এটি কোনো সাধারণ তথ্য ফাঁসের ঘটনা নয়, বরং বিশ্বব্যাপী সাইবার অপরাধের নীলনকশা।"

তারা আরও বলেন, এই তথ্যগুলো ফিশিং আক্রমণ, ভুয়া লিংক পাঠানো এবং সরাসরি অ্যাকাউন্ট হ্যাকিংয়ের জন্য ব্যবহৃত হতে পারে।

গবেষকরা সতর্ক করে বলেছেন, "এগুলো পুরনো বা রিসাইকেল করা ডেটা নয়, এগুলো সম্পূর্ণ নতুন সচল লগইন তথ্য। বড় আকারের সাইবার হামলার জন্য এগুলো হ্যাকারদের শক্তিশালী অস্ত্র হতে পারে।"

ফাঁস হওয়া তথ্যের বেশিরভাগই ইউআরএল (ওয়েব ঠিকানা), ইউজারনেম পাসওয়ার্ড আকারে ছিল। এসব তথ্য দিয়ে অ্যাপল, ফেসবুক, গুগল, গিটহাব, টেলিগ্রাম এবং বিভিন্ন সরকারি ওয়েবসাইটে প্রবেশ করার সুযোগ পেয়েছে হ্যাকাররা।

যদিও বিষয়টি অত্যন্ত উদ্বেগজনক, গবেষকরা জানিয়েছেন, ফাঁস হওয়া ডেটাসেটগুলো খুব অল্প সময়ের জন্য ইন্টারনেটে উন্মুক্ত ছিল এবং দ্রুত সেগুলো সরিয়ে ফেলা হয়েছে। তবে এত দ্রুত ঘটনার কারণে তারা ফাঁসের মূল উৎস বা দায়ী ব্যক্তিদের শনাক্ত করতে পারেননি।

সাইবারনিউজের মতে, এই বিশাল তথ্য ফাঁস সম্ভবত একাধিক ইনফোস্টিলার ম্যালওয়্যার ব্যবহার করে সংগঠিত হয়েছে, যা মূলত ব্যবহারকারীদের তথ্য চুরির জন্য ডিজাইন করা হয়।

তবে ঠিক কতজন ব্যবহারকারীর তথ্য ফাঁস হয়েছে তা এখনও নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি।

বিশেষজ্ঞরা সব ব্যবহারকারীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, পাসওয়ার্ড ম্যানেজমেন্ট টুল ব্যবহার করুন, পাসওয়ার্ড কখনো কারও সঙ্গে শেয়ার করবেন না এবং অবশ্যই টু-ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন (২এফএ) চালু করুন।

Link copied!