এআই যা বলে, অন্ধভাবে বিশ্বাস করবেন না: গুগল সিইও

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

নভেম্বর ১৮, ২০২৫, ০১:১৮ পিএম

এআই যা বলে, অন্ধভাবে বিশ্বাস করবেন না: গুগল সিইও

ছবি: সংগৃহীত

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রদত্ত সব তথ্যকে ‘অন্ধভাবে বিশ্বাস’ না করার পরামর্শ দিয়েছেন গুগলের মূল প্রতিষ্ঠান অ্যালফাবেটের প্রধান নির্বাহী (সিইও) সুন্দর পিচাই। তিনি বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন।

তিনি সতর্ক করে বলেন, এআই মডেলগুলোর ‘ভুল করার প্রবণতা’ রয়েছে এবং শুধুমাত্র এআই–এর ওপর নির্ভর না করে অন্য উপায়েও তথ্য যাচাই করা প্রয়োজন। তিনি আরও বলেন, ‘এ কারণেই মানুষ গুগল সার্চ ব্যবহার করে, আর আমাদের আরও কিছু পণ্য আছে যেগুলো সঠিক তথ্য সরবরাহে বেশি নির্ভরযোগ্য।’

সৃজনশীল লেখালেখিসহ বিভিন্ন কাজে এআই টুলস সহায়তা করলেও এগুলো ব্যবহারের সময় সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন তিনি। পিচাই বলেন, ‘আমরা যতটা সম্ভব সঠিক তথ্য দেওয়ার জন্য বিপুল পরিমাণ পরিশ্রম করি। তবে বর্তমান আধুনিক এআই প্রযুক্তিতেও কিছু ভুল হওয়ার প্রবণতা আছে।’

প্রযুক্তি দুনিয়ায় গুগলের নতুন ভোক্তাবিষয়ক এআই মডেল জেমিনি ৩.০ নিয়ে ব্যাপক প্রত্যাশা ছিল। ইতোমধ্যে এই মডেল চ্যাটজিপিটির কাছে হারানো বাজারের অংশ ফিরে পেতে শুরু করেছে। চলতি বছরের মে মাসে গুগল সার্চে ‘এআই মোড’ যোগ করা হয়, যেখানে ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতা বাড়াতে জেমিনি চ্যাটবট সংযুক্ত করা হয়েছে। সে সময় পিচাই জানান, সার্চে জেমিনির অন্তর্ভুক্তি গুগলের এআই প্ল্যাটফর্ম রূপান্তরের নতুন ধাপ নির্দেশ করে।

চ্যাটজিপিটির মতো প্রতিদ্বন্দ্বী সেবার সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে গুগলের এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

এ বছরের শুরুর দিকে বিবিসির এক গবেষণায় দেখা যায়, এআই চ্যাটবটগুলো সংবাদ প্রতিবেদন সঠিকভাবে সংক্ষেপ করতে ব্যর্থ হয়েছে। বিবিসির কনটেন্ট নিয়ে প্রশ্ন করা হলে ওপেনএআইয়ের চ্যাটজিপিটি, মাইক্রোসফটের কোপাইলট, গুগলের জেমিনি এবং পারপ্লেক্সিটি এআই—সবগুলোই ভুল তথ্য দিয়েছে বলে গবেষণায় উঠে আসে। এতে বলা হয়, এআই–এর উত্তরে ‘উল্লেখযোগ্য ভুলত্রুটি’ ছিল।

বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পিচাই বলেন, প্রযুক্তির দ্রুত অগ্রগতি এবং সম্ভাব্য ক্ষতিকর প্রভাব প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাস্তবায়নের মধ্যে এক ধরনের টানাপোড়েন তৈরি হয়েছে। অ্যালফাবেটের ক্ষেত্রে এই পরিস্থিতি মোকাবিলার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘একই সঙ্গে সাহসী এবং দায়িত্বশীল থাকা।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এই সময়টিকে দ্রুত অতিক্রম করছি। আমার মনে হয় ভোক্তারাও এটি চাইছেন।’

এআই–এ বিনিয়োগ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গুগল নিরাপত্তা জোরদার করতেও বিনিয়োগ বৃদ্ধি করেছে বলে জানান পিচাই। তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, ‘উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, আমরা এমন প্রযুক্তি ওপেন সোর্স করছি, যার মাধ্যমে বোঝা যাবে কোনো ছবি এআই–এর তৈরি কি না।’

ওপেনএআই–এর প্রতিষ্ঠাতাদের উদ্দেশে ইলন মাস্কের সেই মন্তব্য—ডিপমাইন্ড এআই–নির্ভর এক ধরনের ‘স্বৈরতন্ত্র’ তৈরি করতে পারে—এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পিচাই বলেন, ‘এত শক্তিশালী প্রযুক্তির মালিকানা কোনো একক কোম্পানির হাতে থাকা উচিত নয়।’

এআই নিয়ে বহু প্রতিষ্ঠান কাজ করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘যদি একটিমাত্র কোম্পানি এআই প্রযুক্তি তৈরি করত এবং সবাইকে সেটাই ব্যবহার করতে হতো, তাহলে আমিও উদ্বিগ্ন হতাম। কিন্তু আমরা এখনো সেই পরিস্থিতি থেকে অনেক দূরে।’

Link copied!