নভেম্বর ৮, ২০২৫, ০৩:০৭ পিএম
ডিএনএ-এর ডাবল হেলিক্স গঠন আবিষ্কার করে জীববিজ্ঞানে বিপ্লব ঘটানো নোবেলজয়ী মার্কিন বিজ্ঞানী জেমস ওয়াটসন আর নেই। বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) ৯৭ বছর বয়সে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
ওয়াটসনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে যুক্তরাষ্ট্রের কোল্ড স্প্রিং হারবার ল্যাবরেটরি, যেখানে তিনি জীবনের বেশিরভাগ সময় গবেষণায় কাটিয়েছেন।
১৯৫৩ সালে ব্রিটিশ বিজ্ঞানী ফ্রান্সিস ক্রিকের সঙ্গে মিলে তিনি ডিএনএ অণুর গঠন—ডাবল হেলিক্স মডেল—উন্মোচন করেন, যা জীববিজ্ঞানের ইতিহাসে এক যুগান্তকারী আবিষ্কার হিসেবে বিবেচিত। পরবর্তীতে এই আবিষ্কার থেকেই আণবিক জীববিজ্ঞানের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়।
এই অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৬২ সালে ওয়াটসন, ক্রিক ও মরিস উইলকিনস যৌথভাবে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হন। তবে ডিএনএ-এর এক্স-রে চিত্র ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা বিজ্ঞানী রোজালিন্ড ফ্র্যাঙ্কলিনের অবদান সেই সময় স্বীকৃতি পায়নি।
তবে জীবনের শেষ দিকে ওয়াটসনকে ঘিরে তৈরি হয় বিতর্ক। বর্ণ ও বুদ্ধিমত্তা নিয়ে তার মন্তব্য বিজ্ঞানী মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। ২০০৭ সালে আফ্রিকানদের নিয়ে এক মন্তব্যের পর তিনি চাকরি হারান, এবং ২০১৯ সালে অনুরূপ মন্তব্য পুনরাবৃত্তির পর কোল্ড স্প্রিং হারবার ল্যাবরেটরি থেকে তার সব ধরনের সম্মানসূচক পদও বাতিল করা হয়।
১৯২৮ সালে শিকাগোতে জন্ম নেওয়া ওয়াটসন মাত্র ১৫ বছর বয়সে শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। পরবর্তীতে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার সময় ফ্রান্সিস ক্রিকের সঙ্গে যুক্ত হয়ে তিনি ডিএনএ-এর গঠন আবিষ্কারের পথে যাত্রা শুরু করেন। পরে তিনি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেন এবং কোল্ড স্প্রিং হারবার ল্যাবরেটরিকে বিশ্বের শীর্ষ গবেষণা কেন্দ্রগুলোর একটিতে পরিণত করেন।
বিজ্ঞান ও মানবজাতির ইতিহাসে তার অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে, যদিও বিতর্ক ছায়া ফেলেছিল তার উত্তরাধিকারে।