‘তছনছ’ মন্তব্যে বিতর্কের পর ব্যাখ্যা দিলেন জাবি শিবির সেক্রেটারি মোস্তাফিজুর

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

ডিসেম্বর ২০, ২০২৫, ০১:০৩ পিএম

‘তছনছ’ মন্তব্যে বিতর্কের পর ব্যাখ্যা দিলেন জাবি শিবির সেক্রেটারি মোস্তাফিজুর

বাম, শাহবাগী, ছায়ানট ও উদীচীকে ‘তছনছ’ করে দিতে হবে, এমন মন্তব্য করে সমালোচনার মুখে পড়ার পর নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন ইসলামী ছাত্রশিবির জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সেক্রেটারি মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি দাবি করেছেন, ‘তছনছ’ বলতে ভাঙচুর নয়, বরং আদর্শিক ও বয়ানগত মোকাবিলাকে বোঝানো হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার রাতে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর প্রতিবাদে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য দিতে গিয়ে মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, রাজনৈতিক লড়াইয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রকৃত স্বাধীনতা অর্জন সম্ভব নয়। তাঁর ভাষায়, শহিদ ওসমান হাদির ইনকিলাব মঞ্চের সাংস্কৃতিক লড়াই থেকেই নতুন সংগ্রাম শুরু হবে এবং বাম, শাহবাগী, ছায়ানট ও উদীচীকে ‘তছনছ’ করলেই প্রকৃত স্বাধীনতা অর্জিত হবে।

সমাবেশে তিনি আরও বলেন, গত ১৫ বছর ধরে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ও ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে লড়াই চলছে। তিনি অভিযোগ করেন, শেখ হাসিনার সরকার হাজার হাজার তরুণকে হত্যা করেছে এবং বিদেশে বসেও বিপ্লবীদের হত্যার ষড়যন্ত্র করছে। এ সময় তিনি ভারতের সঙ্গে সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করার দাবি জানান এবং বাংলাদেশে অবস্থানরত ভারতীয় নাগরিকদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দেশে ফেরত পাঠানোর আহ্বান জানান। পাশাপাশি, ওসমান হাদির হত্যাকারীদের হস্তান্তর না করা পর্যন্ত ভারতের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক থাকবে না বলেও মন্তব্য করেন।

মোস্তাফিজুর রহমানের এই বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। এর পর গতকাল শুক্রবার রাতে ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি নিজের বক্তব্যের ব্যাখ্যা দেন।

স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, বক্তব্যে ব্যবহৃত ‘তছনছ’ শব্দটি দিয়ে ভাঙচুর বোঝানো হয়নি। বরং নিয়মতান্ত্রিক ও প্রাতিষ্ঠানিক উপায়ে বিকল্প কাঠামো গড়ে তুলে ফ্যাসিবাদী বয়ান মোকাবিলার কথাই তিনি বোঝাতে চেয়েছেন। তিনি স্বীকার করেন, পরিস্থিতির চাপে বক্তব্যে শব্দচয়নে কিছুটা তাড়াহুড়ো হয়েছে।

মোস্তাফিজুর রহমান আরও লেখেন, ইসলামী ছাত্রশিবির সব সময় নিয়মতান্ত্রিক পথেই আন্দোলন চালিয়ে এসেছে এবং ভবিষ্যতেও ধৈর্যের সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করবে। তাঁর ভাষায়, ‘শাহাদাত আমাদের তামান্না, লড়াই আমাদের ধারাবাহিকতা। তবে সেই লড়াই ভাঙার চেয়ে গড়ার দিকেই মনোযোগী।’

উদীচী ও ছায়ানটসহ সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলোকে আদর্শিকভাবে মোকাবিলা করা হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এসব প্রতিষ্ঠান দীর্ঘদিন ধরে ফ্যাসিবাদের পক্ষে ভূমিকা রেখেছে বলে তাদের নিয়মতান্ত্রিক ও প্রাতিষ্ঠানিকভাবেই মোকাবিলা করা হবে।

Link copied!