প্রাণিসম্পদ গবেষণায় নতুন যুগ: বাকৃবিতে অত্যাধুনিক জৈবপ্রযুক্তি ল্যাব চালু

ইউএনবি

ডিসেম্বর ২৮, ২০২৫, ০৪:০৮ পিএম

প্রাণিসম্পদ গবেষণায় নতুন যুগ: বাকৃবিতে অত্যাধুনিক জৈবপ্রযুক্তি ল্যাব চালু

ছবি: কোলাজ/ইউএনবি

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) প্রাণিসম্পদ গবেষণায় নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে ইন ভিট্রো ভ্রূণ উৎপাদন, ভ্রূণ কালচার এবং জেনোম এডিটিং সুবিধাসম্পন্ন একটি বিশেষায়িত ও অত্যাধুনিক গবেষণাগার। উচ্চমাত্রার জৈব-নিরাপত্তা নিশ্চিত করে গড়ে তোলা এই গবেষণাগারটি দেশে প্রথম, যেখানে ইন ভিট্রো কালচার ও জেনোম এডিটিং প্রযুক্তি সমন্বিতভাবে ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

রবিবার (২৮ ডিসেম্বর) বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া প্রধান অতিথি হিসেবে গবেষণাগারটির উদ্বোধন করেন।

বাকৃবির পশু প্রজনন ও কৌলিবিজ্ঞান বিভাগের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ও ধারাবাহিক গবেষণা উদ্যোগের অংশ হিসেবে ল্যাবটি স্থাপন করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সহযোগিতায় এবং কেজিএফ, বিএএস-ইউএসডিএ ও এটিএফ-হিট প্রকল্পের আর্থিক সহায়তায় আন্তর্জাতিক মান ও জৈব-নিরাপত্তা নির্দেশনা অনুসরণ করে গবেষণাগারটির অবকাঠামো ও গবেষণা সুবিধা গড়ে তোলা হয়েছে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া বলেন, আধুনিক জৈবপ্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষা ও গবেষণাকে আরও কার্যকর, গতিশীল ও ফলপ্রসূ করতে এই গবেষণাগারটি একটি গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা অবকাঠামো হিসেবে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে। এই ল্যাব থেকে অর্জিত গবেষণালব্ধ জ্ঞান ও প্রযুক্তি ভবিষ্যতে দেশের প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং টেকসই কৃষি ব্যবস্থার বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।

প্রাণিসম্পদ গবেষণায় নতুন যুগ: বাকৃবিতে অত্যাধুনিক জৈবপ্রযুক্তি ল্যাব চালু

তিনি আরও বলেন, গবেষণাগারটি প্রতিষ্ঠায় পশু প্রজনন ও কৌলিবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. সামছুল আলম ভূঁঞা এবং বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. মো. মুনির হোসেনের অবদান অনস্বীকার্য। এই অত্যাধুনিক গবেষণাগারের মাধ্যমে প্রাণিসম্পদে উন্নত গবেষণা, প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও সম্প্রসারণের সুফল দেশের কৃষক ও খামারিরা ভোগ করবেন।

অধ্যাপক ড. মো. সামছুল আলম ভূঁঞা বলেন, সর্বোচ্চ জৈব-নিরাপত্তা বজায় রেখে কৃত্রিম পদ্ধতিতে গবাদিপশুর ভ্রূণ উৎপাদন, ভ্রূণের বৃদ্ধি ও বিকাশ পর্যবেক্ষণ এবং জেনোম এডিটিং প্রযুক্তির মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন প্রাণি উৎপাদনের গবেষণা এই ল্যাবে পরিচালিত হবে। এর ফলে দুধ ও মাংস উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং পরিবেশ অভিযোজন সক্ষমতা উন্নয়নে কার্যকর বৈজ্ঞানিক সমাধান পাওয়া যাবে।

বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. মো. মুনির হোসেন বলেন, একই স্থানে ইন ভিট্রো কালচার ও জেনোম এডিটিং সুবিধাসম্পন্ন বিএসএল-২ প্লাস মানের এই গবেষণাগারটি বাংলাদেশে প্রথম। জরুরি স্বাস্থ্য পরিস্থিতি বা কোভিড-১৯-এর মতো মহামারি মোকাবিলায়ও এই ল্যাব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে। পাশাপাশি স্নাতক, স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি পর্যায়ের শিক্ষার্থী ও নবীন গবেষকেরা এখানে হাতে-কলমে আধুনিক গবেষণার অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ পাবেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন, শিক্ষক, গবেষক, কর্মকর্তা, শিক্ষার্থী ও আমন্ত্রিত অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান শেষে অতিথিরা গবেষণাগারটি পরিদর্শন করেন।

Link copied!