‘র’, ‘সিআইএ’ না ‘মোসাদ’? বাঁধন কোন গোয়েন্দা সংস্থার চর!

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

মে ২৫, ২০২৫, ০৫:০৩ পিএম

‘র’, ‘সিআইএ’ না ‘মোসাদ’? বাঁধন কোন গোয়েন্দা সংস্থার চর!

ছবি: সংগৃহীত

জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানে আজমেরি হক বাঁধন ছিলেন সরব। স্পষ্ট উচ্চারণে অবস্থান নিয়েছিলেন অন্যায়ের বিরুদ্ধে। তবে সেই স্পষ্টভাষী অবস্থানের জন্য তাকে শুনতে হয়েছে কটাক্ষ, পড়তে হয়েছে সন্দেহের তীরের মুখে। কখনও ‘সিআইএ’, কখনও ‘র’, কখনও বা ‘মোসাদ’-এর চর বলে অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। 

এসব গুজব আর অপপ্রচারের জবাব দিয়েছেন বাঁধন নিজেই। 

রোববার, ২৫ মে সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে বাঁধন একটি আক্ষেপভরা, অথচ রসিকতায় মোড়ানো পোস্টে লেখেন, “২০২১ সালে আমি একজন গর্বিত ‘র’ এজেন্ট ছিলাম। তখন প্রিয় অভিনেত্রী টাবুর সঙ্গে বিশাল ভরদ্বাজ পরিচালিত বলিউড সিনেমা ‘খুফিয়া’য় অভিনয় করেছিলাম। কিন্তু পরে অবস্থা গেল বদলে। আমি ছবির প্রিমিয়ারেও যোগ দিতে পারিনি। কেন? কারণ ভারতীয় হাইকমিশন আমার ভিসা প্রত্যাখ্যান করেছিল। একবার নয়, পাঁচবার।”

ভারতের ভিসা বাতিল হওয়ার কারণ হিসেবে বাঁধন লিখেছেন, ‘তাদের সাথে আমার দুটি সাক্ষাৎকার হয়। সেসময় মনে হলো তারা আমার একটি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট নিয়ে খুব চিন্তিত। ইউএস অ্যাম্বেসির প্রোগ্রামে ভিপি নূরের সাথে একটি ছবি!’

পরে ভিসা পেতে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে উল্লেখ করে বাধন জানান, ‘আমাকে অনেক কানেকশন ব্যবহার করতে হয়েছিল- নিজের দেশের প্রভাবশালী মানুষদের কাছাকাছি থাকার সুবিধার্থে, কয়েকজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার সঙ্গে হাস্যজ্জল ছবির কারণে অবশেষে আমি এক মাসের সিঙ্গেল-এন্ট্রি ভিসা পেলাম।’

ভিসা না পাওয়া নিয়েও কোনো এক অভিনেত্রীকেও দূষেছেন বাঁধন। তিনি লিখেছেন, ‘দুটি প্রভাবশালী সূত্রে জেনেছি, একজন গুরুত্বপূর্ণ অভিনেত্রী আমার ভিসা সমস্যার পেছনে কলকাঠি নেড়ে থাকতে পারেন, কে জানে! এটা আমার কথা না। এ কারণে, আমি বলিউড ও কলকাতায় বেশ কিছু বড় সুযোগ হারিয়েছি। যদিও অপেক্ষা করছি এখনও- আমার যাত্রা এখানেই শেষ নয়!’

নিজের বিরুদ্ধে গোয়েন্দা সংস্থার চর হিসেবে কাজ করার অভিযোগ প্রসঙ্গে বাঁধন এই পোস্টে লেখেন, ‘জুলাই বিদ্রোহের সময় বলা হয়েছিল ‘সিআইএ’ এজেন্ট, ‘ঐতিহাসিক বিপ্লব’-এর সঙ্গে থাকার জন্য মার্কিন দাতা সংস্থা ইউএসএআইডির কাছ থেকে টাকা নিয়েছি। তারপর এলো জামাত এজেন্টের তকমা, শুধু তাদের একজন নেতার একটি ভিডিও আমার পেজে শেয়ার করেছিলাম বলে। কেউ কেউ এমন দাবিও করেছেন যে, আমি মোসাদের হয়েও কাজ করছি নিশ্চয়ই! আর গত রাতেই আমি আবার ‘র’-এর এজেন্ট হয়ে গেছি! বর্তমান সরকারের ঘনিষ্ঠ এক বন্ধু আমাকে বেশ গম্ভীরভাবেই জিজ্ঞেস করলো ‘টাকা খাইছো?’ কি এক সমাজে আমরা বাস করি! যারা নিঃশর্তভাবে নিজের দেশকে ভালোবাসে না, তারা ভাবে অন্য কেউও সেটা করে না।’ 

বাঁধনের এই পোস্ট যেমন ছিল ব্যঙ্গাত্মক, তেমনি ছিল ক্ষোভে মোড়া। তার কিছুদিন আগেই ফেসবুকে আরেকটি পোস্টে লিখেছিলেন, “কী মর্মান্তিকভাবে নষ্ট হলো এক ঐতিহাসিক সুযোগ! আমি স্বপ্ন দেখেছিলাম একটি ভালো, ন্যায়ের ওপর গড়া দেশ, যেখানে থাকবে সততা, থাকবে আশার আলো। কিন্তু সেই স্বপ্ন এখন চূর্ণবিচূর্ণ।” 

পবিত্র ঈদুল আজহায় মুক্তি পাবে আজমেরী হক বাঁধন অভিনীত সিনেমা ‘এশা মার্ডার: কর্মফল’। দুবছর আগে শুটিং শেষ হয় ছবিটি। ‘মাস্টার’ নামে আরও একটি ছবিতে কাজ করেছেন তিনি। বলিউডের পাশাপাশি কলকাতার একটি ওয়েব সিরিজেও কাজ করেছিলেন এই অভিনেত্রী।

বিশ্বমঞ্চে তার বড় পরিচিতি আসে কান চলচ্চিত্র উৎসবে নির্বাচিত হওয়া ‘রেহানা মারিয়াম নূর’ ছবি দিয়েযা তাকে আন্তর্জাতিক দর্শকের সামনে নিয়ে যায় এক নতুন উচ্চতায়।  

Link copied!