ছবি: সংগৃহীত
সাম্য হত্যার বিচার, নিরাপদ ক্যাম্পাস ও দ্রুত ডাকসু তফসিল ঘোষণার দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ (বাগছাস)।
শনিবার, ২৪ মে দুপুর ১ টায় মধুর ক্যান্টিন থেকে মিছিল নিয়ে সিনেট ভবনের সামনে তারা অবস্থান নেয়। পরবর্তীতে প্রশাসন এর সাথে তারা আলোচনায় বসেন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, প্রোভিসি সহ উর্ধ্বতন কর্মকতারা।
আলোচনার প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানায়,
১) সাম্য হত্যার বিচার নিশ্চিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রতিনিয়ত পুলিশ প্রশাসন ও ডিবি’র সাথে যোগাযোগ করে যাচ্ছে। তদন্ত কাজের অগ্রগতি হয়েছে, তবে সার্বিক বিবেচনায় তদন্তের স্বার্থে এখন কিছু বলা সম্ভব না। ডিবি আরো ৩ দিন রিমান্ড বাড়িয়েছে। শিগগিরই ডিবি থেকে একটা আপডেট জানানো হবে এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের অবস্থান পরিষ্কার করবে৷
২) নিরাপদ ক্যাম্পাস নিশ্চিতে প্রশাসন কার্যকরী পদক্ষেপ নিচ্ছে। ক্যাম্পাসে যে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে সেটা চলমান সংস্কার কাজের জন্যই হচ্ছে। ওয়াসার কাজের জন্য রাস্তা খোড়াখুড়ির কাজ চলছে, সেইজন্য রাস্তা সংকীর্ণ হয়ে আছে। আজকের মধ্যেই সংস্কার কাজ শেষ হবে। রাস্তা সচল হবে। আর প্রতিনিয়ত শাহবাগ অবরোধের কারণে ক্যাম্পাসের মধ্য দিয়ে যানবাহনের প্রেশার বাড়ছে। প্রশাসন সেটা কন্ট্রোলের জন্যও কাজ করে যাচ্ছে। তিন নেতার মাজারের কাছে যে নতুন করে ভবঘুরেদের আখড়া তৈরি হইছে, তাদেরকে উচ্ছেদ করার জন্য প্রক্টরিয়াল টিম কাজ করছে। আগামীকাল ডিএমপি’র প্রতিনিধি দল এবং ম্যাজিস্ট্রেট এসে উচ্ছেদ অভিযান চালাবেন। একইসাথে মেয়েদের দূরবর্তী হলগুলোতে নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য মোবাইল টিম মোতায়েন করা হয়েছে।
৩) ডাকসু নির্বাচনের বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে নির্বাচন কমিশন গঠনের কাজ প্রক্রিয়াধীন। ঈদুল আজহার ছুটির আগে নির্বাচন কমিশন গঠন এবং সার্বিক অগ্রগতি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ক্লিয়ার বিবৃতি দিবেন। বন্ধের আগেই নির্বাচন কমিশন গঠন প্রক্রিয়া শেষ করার আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন।
ভেতরে বৈঠক চলাকালীন বাইরে দাঁড়ানো বাগছাসের নেতাকর্মীদের মধ্যে হঠাৎ করে উত্তেজনা দেখা দেয়। তাদের একজনকে বলতে শোনা যায়, “আমাদের নেতারাই আমাদের বোকা বানাচ্ছে।”
পরবর্তীতে সকল বিষয় নিয়ে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের আহ্বায়ক আব্দুল কাদের দ্যা রিপোর্ট ডট লাইভকে বলেন, “বাইরে দাঁড়ানো নেতা কর্মীরা হঠাৎ উত্তেজিত হয়েছিল কমিউনিকেশন গ্যাপের কারণে। তাদের দাবি ছিল আজকের মধ্যেই তফসিল ঘোষণা। কিন্তু সেটা পাস হয়ে সিন্ডিকেট এ যাওয়ার বিষয়টি তারা বুঝতে পারেনি। পরে তাদেরকে বোঝানো হলে তারা শান্ত হয়।”
এছাড়া তিনি বলেন, “প্রশাসনকে আন্তরিক মনে হয়েছে। এবং তারা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন ঈদের আগেই অর্থাৎ বিশ্ববিদ্যালয় ছুটি হওয়ার আগের কর্মদিবসগুলোর মধ্যেই তারা নির্বাচন কমিশন গঠন ও ডাকসুর রোড ম্যাপ নিয়ে একটি স্পষ্ট বিবৃতি দিবেন। তবে তাদের কাজ নিয়ে আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা সন্তুষ্ট নই। এমন ভাবে চলতে থাকলে আন্তরিকতা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে।”
অপরদিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আশ্বাসে দীর্ঘ ৮১ ঘণ্টা পর অনশন ভেঙেছেন ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লাসহ তিন শিক্ষার্থী। শনিবার (২৪ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে পানি পান করিয়ে তাদের অনশন ভাঙান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান।
গত ২১ মে সাম্য হত্যার বিচার, ডাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা ও নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবিতে অনশনে বসেন ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা। পরবর্তীতে তার দাবির সাথে সংহতি জানিয়ে অনশনে বসেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম-আহ্বায়ক মোহাম্মদ মাহতাব ইসলাম ও স্বাধীন বাংলাদেশ ছাত্রসংসদের আহ্বায়ক জামাল উদ্দিন খালিদ।