করোনা মহামারী মোকাবেলায় আরও তিন কোটি ডোজ টিকা আমদানির নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে আমি নির্দেশ দিয়েছি, আরো তিন কোটি ডোজ কেনার জন্য। যাতে করে আমাদের যেটা আছে, সেটা প্রথম ডোজ দেওয়ার পর দ্বিতীয় ডোজ শুরু করতে পারি। আর তার সঙ্গে সঙ্গেই যেন আবার টিকা আমাদের হাতে এসে যায়। একটা মানুষও যাতে এই টিকা থেকে বাদ না যায়, তার ব্যবস্থা আমরা নিচ্ছি।
শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিকের প্রশ্নে এ তথ্য জানান সরকারপ্রধান। বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের জন্য জাতিসংঘের চূড়ান্ত সুপারিশ লাভ করায় ওই সংবাদ সম্মেলন করেন প্রধানমন্ত্রী। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে তিনি সংবাদ সম্মেলনে যুক্ত হন।
সেসময় টিকা উৎপাদনের পরিকল্পনা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কোনো দেশ যদি উৎপাদন করতে না পারে, প্রয়োজনে আমাদের দেশ উৎপাদন করতে পারবে, আমি আমাদের বিভিন্ন ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিকে ইতোমধ্যে বলেছি যে কারা কারা এটা করতে পারবে, তার জন্য প্রস্তুত থাকা এবং এখানে সিড যাতে আনা যায়, তার ব্যবস্থা করা যায় কি না, সেটাও আমরা দেখছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা অ্যাডভান্স টাকা দিয়ে বুকিং করে ফেলি, যাতে যেখানেই পাওয়া যায়, আমরা আগে কিনে আনব, আমার দেশের মানুষকে সুরক্ষা দেব, এটা আমাদের নীতিগত সিদ্ধান্ত।’
তিনি বলেন,‘এটা আমরা দেব, কারণ আমরা আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুব দ্রুত খুলতে চাই। পড়াশোনার পরিবেশটা ফিরিয়ে আনতে চাই। মানুষকে সুরক্ষা দেওয়া- এটা তো আমার কর্তব্য, আমি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শুধু না, আমি জাতির পিতার কন্যা, এটা হচ্ছে সবচেয়ে বড় কথা। সেই হিসেবে আমি মনে করি, আমার এটা কর্তব্য, আমরা করে যাচ্ছি।’
সেসময় করোনার টিকা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি অবশ্যই টিকা নেবো। তবে দেশের মানুষকে আগে দিতে হবে। আমার ৭৫ বছর বয়স। আজ আছি, কাল নেই। যেকোনো সময় মারা যেতে পারি। একটা টার্গেট করা আছে, সে পরিমাণ যখন দেওয়া হবে, তখন যদি টিকা থাকে, তাহলে তখন টিকা নেবো।’
বাংলাদেশে এখন ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনাভাইরাসের টিকা দেওয়া হচ্ছে।
এই টিকার তিন কোটি ডোজ কিনতে গত বছরের শেষভাগে চুক্তি করেছিল সরকার। এর মধ্যে জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে দুই দফায় ৭০ লাখ ডোজ টিকা দেশে এসেছে। এর বাইরে ভারত সরকারের উপহার হিসেবে এসেছে ২০ লাখ ডোজ টিকা।