ওমিক্রন মহামারি শেষের লক্ষণ, বুস্টার ডোজ টেকসই কৌশল নয়

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

জানুয়ারি ১৩, ২০২২, ০৫:৪৫ এএম

ওমিক্রন মহামারি শেষের লক্ষণ, বুস্টার ডোজ টেকসই কৌশল নয়

করোনাভাইরাসের অতি সংক্রামক ধরন ওমিক্রন যেভাবে ছড়াচ্ছে, তাতে মনে হচ্ছে করোনা মহামারি শেষ হতে চলেছে। ইউরোপের ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ইউরোপিয়ান মেডিসিনস এজেন্সি (ইএমএ) গত মঙ্গলবার এ কথা বলেছে। তবে কোভিড এখনো মহামারি রূপেই রয়েছে বলেও সতর্ক করেছে সংস্থাটি। সাধারণ মানুষকে বারবার বুস্টার ডোজ দেওয়ার মাধ্যমে মহামারি নিয়ন্ত্রণ টেকসই কোনো কৌশল নয় বলেও মনে করে ইএমএ।

নেদারল্যান্ডসের আমস্টারডামভিত্তিক সংস্থাটির টিকা কৌশল বিভাগের প্রধান মারকো ক্যাভালেরি সাংবাদিকদের বলেন, “করোনা মহামারি কবে শেষ হবে, তা আমরা কেউই নির্দিষ্ট করে বলতে পারব না। তবে আমরা সেটা দেখতে পাব। তিনি আরও বলেন, “মানুষের মধ্যে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধি এবং ওমিক্রন সংক্রমণের কারণে প্রচুর প্রাকৃতিক রোগ প্রতিরোধসক্ষমতা গড়ে উঠছে। এখন আমরা করোনা মহামারি শেষের দিকে ধাবিত হব।

একই সঙ্গে ক্যাভালেরি সতর্ক করেছেন,   “আমাদের ভুলে গেলে চলবে না যে আমরা এখনো মহামারির মধ্যেই রয়েছি। এর আগে মাইক্রোসফটের সহপ্রতিষ্ঠাতা বিল গেটসও ওমিক্রনকে মহামারি শেষের আভাস বলে দাবি করেন।

এর আগে, মঙ্গলবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) সতর্ক করে বলে, আগামী ছয় থেকে আট সপ্তাহের মধ্যে ইউরোপের অর্ধেক মানুষ ওমিক্রন সংক্রমণের ঝুঁকিতে রয়েছে। জাতিসংঘের সংস্থাটি আরও বলেছে, বারবার বুস্টার ডোজ দেওয়া করোনার উদীয়মান ধরনের বিরুদ্ধে ‘কার্যকর কৌশল’ নয়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে সংক্রমণের বিরুদ্ধে আরও ভালো সুরক্ষা দিতে সক্ষম এমন নতুন টিকা তৈরির আহ্বান জানানো হয়েছে। ডব্লিউএইচওর সেই বক্তব্যই এখন সমর্থন করল ইএমএ।

মারকো ক্যাভালেরি বলেছেন, “আমরা প্রতি চার মাস পরপর বুস্টার ডোজ নেওয়ার কৌশল নিয়েছি। এতে অবশেষে আমরা সমস্যার মুখেই পড়ব। এ ছাড়া বারবার টিকা নেওয়ার কারণে মানুষের মধ্যে টিকা নেওয়ার বিষয়ে শিথিলতার ঝুঁকি তৈরি হবে।

তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ইউরোপে গত এক সপ্তাহে ৮০ লাখের বেশি মানুষের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ সময় বিশ্বে করোনায় সবচেয়ে বেশি মৃত্যু ও সংক্রমণের রেকর্ড হয়েছে ইউরোপে। এখন উদ্বেগজনক সংক্রমণের নতুন কেন্দ্র হলো ইউরোপ।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ইউরোপিয়ান অঞ্চল ৫৩ দেশ ও অঞ্চলের তথ্য রাখে। ৫০টি দেশ ও অঞ্চলে ওমিক্রন ছড়িয়েছে। এর মধ্যে জার্মানি, বুলগেরিয়াসহ বিভিন্ন দেশে সংক্রমণ নতুন রেকর্ড হয়েছে।

ডব্লিউএইচওর ইউরোপ অঞ্চলের পরিচালক হ্যানস ক্লুগ বলেন, পশ্চিম থেকে পূর্বে ইউরোপে ‘সুনামির’ মতো ওমিক্রন ছড়াচ্ছে। সংক্রমণ ছড়ানোর ক্ষেত্রে করোনার আরেকটি অতিসংক্রামক ধরন ডেলটাকে ছাড়িয়ে গেছে ওমিক্রন। ২০২২ সালের প্রথম সপ্তাহে ইউরোপজুড়ে ৭০ লাখ মানুষের করোনা শনাক্ত হয়েছে। ইউরোপে দুই সপ্তাহের মধ্যে করোনা সংক্রমণের সংখ্যা দ্বিগুণের বেশি হয়ে গেছে।

হ্যানস ক্লুগ এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এখন পশ্চিম থেকে পূর্বে ইউরোপে সংক্রমণ বাড়ার মূলে ওমিক্রন। এই অঞ্চলজুড়ে সংক্রমণ ছড়ানোর ক্ষেত্রে ডেলটার প্রকোপকে ছাড়িয়ে গেছে ওমিক্রন।

Link copied!