৭ নভেম্বর শপথ করলেন বিএনপির মহাসচিব

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

নভেম্বর ৭, ২০২১, ০৩:২৩ পিএম

৭ নভেম্বর শপথ করলেন বিএনপির মহাসচিব

দেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনার শপথ করেছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সরকার দেশে একটা ‘ভয়ঙ্কর’ পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন।

রবিবার (৭ নভেম্বর) সকালে দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি শপথ করেন ও এসব কথা বলেন।

এসময় অন্যদের মধ্যে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও নজরুল ইসলাম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা  আমানউল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, হাবিবুর রহমান হাবিব, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন উপস্থিত ছিলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে আমরা শপথ গ্রহণ করেছি, দেশের মানুষকে একত্র করে, রাজনৈতিক দল ও সংগঠনগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করে ফ্যাসিস্ট এই সরকারকে পরাজিত করে দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্ত করব এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে ফেরাব।’

বিএনপির এই মহাসচিব আরও বলেন, বাংলাদেশকে আবার আধিপত্য ও সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে স্বাতন্ত্র্য শক্তি নিয়ে নিজের পায়ে দাঁড়াবার ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নির্মাণের আন্দোলন করব আমরা।

৭ নভেম্বরকে ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন,  ‘দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এই দিনটির কথা স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। দ্বিতীয়বারের মতো এই দিনে আমরা স্বাধীনতাকে সুরক্ষিত করতে পেরেছিলাম শহীদ জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে।

‘আজকে দেশে গণতন্ত্র নেই, আজকে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নেই’ মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আজকে এ দেশের মানুষের বাকস্বাধীনতা নেই, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নেই। ৩৫ লাখের বেশি দেশপ্রেমিক মানুষকে আজকে মিথ্যা মামলা দিয়ে জর্জরিত করা হয়েছে, আজকে এখানে গুম হচ্ছে, খুন হচ্ছে এবং নির্যাতন হচ্ছে।  দেশে ভয়ঙ্কর একটা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।‘

৭ নভেম্বরের গুরুত্ব তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা যে আশা-আকাঙ্ক্ষা ও চেতনার মধ্য দিয়ে স্বাধীনতাযুদ্ধ করেছিলাম; ৭ নভেম্বর সেই আশা-আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন করার একটা সুযোগ সৃষ্টি হয়েছিল জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে। ৭ নভেম্বরে সিপাহি-জনতার বিপ্লবের মধ্য দিয়ে দেশে গণতন্ত্র-স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব সুসংহত করতে আমরা সক্ষম হয়েছিলাম। আমরা বহুদলীয় গণতন্ত্রকে ফিরে পেয়েছিলাম, মুক্ত অর্থনীতি একটি সমাজ নির্মাণ করার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছিল।’

তিনি বলেন,‘সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে-সামাজ্যবাদ,আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ আবার রুখে দাঁড়িয়েছিল, সংবাদপত্রের ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত হয়েছিল। সর্বোপরি যেটি বাংলাদেশে স্বাতন্ত্র নিয়ে, পরিচয় নিয়ে বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর সুযোগ পেয়েছিল। আমরা এই দিনটিকে স্মরণ করি এবং এই দিনটি আমাদের অনুপ্রেরণা জোগায়’।

প্রসঙ্গত, বিএনপি ৭ নভেম্বর দিনটিকে ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ হিসেবে পালন করে। বিএনপির মতে, ’৭৫ সালের এই দিনে আধিপত্যবাদী শক্তির নীলনকশা প্রতিহত করে সিপাহি-জনতা স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে রক্ষা করেছিল।

তবে আওয়ামী লীগ ৭ নভেম্বর দিবসটিকে মুক্তিযোদ্ধা ও সৈনিক হত্যা দিবস হিসেবে পালন করে থাকে।

অন্যদিকে, জাসদসহ সমমনা সংগঠনগুলো ৭ নভেম্বরকে ‘সিপাহি-জনতার অভ্যুত্থান’ দিবস হিসেবে পালন করে থাকে। তাদের যুক্তি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর থেকে সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরে ক্ষমতালিপ্সু অফিসারদের ক্ষমতা দখল-পুনর্দখলের জন্য পরস্পরবিরোধী অবস্থানের প্রেক্ষাপটে ইতিহাসের এই দিনে ‘সিপাহি-জনতার অভ্যুত্থান’ ঘটেছিল।

Link copied!