জুলাই ২৮, ২০২২, ১০:৫৪ এএম
রাজধানীর দক্ষিণখানে পাঁচটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে একটি মাঠে আওয়ামী লীগের সম্মেলন ও জনসভার আয়োজন এবং সেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নেয়ার বিষয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
মন্ত্রী বলেছেন, “আমি আসলে খুবই বিব্রত। একেবারেই আমার অজান্তে ঘটনাটি ঘটেছে। এ ঘটনায় আমি ভীষণ লজ্জিত এবং দুঃখিত।” একইসঙ্গে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত না করে অন্য কোন খোলা স্থানে রাজনৈতিক ও সামাজিক অনুষ্ঠান আয়োজন করতে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
বুধবার রাতে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে এক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ জনসংযোগ কর্মকর্তা এম এ খায়ের এই তথ্য জানান।
জানা গেছে, রাজধানীর দক্ষিণখান এলাকায় পাশাপাশি পাঁচটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে গত সোমবার আয়োজন করা হয়েছিল থানা ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন। এ সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিরও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে স্থানীয় আওয়ামী লীগের সস্মেলন এবং সেখানে শিক্ষামন্ত্রীর উপস্থিতি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অভিভাবকদের অনেকে। পাশাপাশি স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকে বিষয়টি ভালোভাবে নেননি। তারা বলছেন, সাপ্তাহিক ছুটির দিনে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের এ সম্মেলন আয়োজন করাই যেতো। সম্মেলনের কারণে স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখার বিষয়টি ঠিক হয়নি। বিষয়টি নিয়ে গত মঙ্গলবার দৈনিক শিক্ষাডটকমে 'রাজধানীর পাঁচ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে থানা আওয়ামী লীগের সম্মেলন' শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিলো।
গতকাল বুধবার রাতে অনুষ্ঠানে বক্তব্যকালে সোমবারের জনসভার কথা টেনে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমি আসলে খুবই বিব্রত। একেবারেই আমার অজান্তে ঘটনাটি ঘটেছে। গত পরশুদিন একটি রাজনৈতিক সমাবেশে গিয়েছি, ঢাকায়, দক্ষিণখানে এবং সেখান থেকে চলে আসার পরে আমি জানতে পেরেছি যে, যে মাঠে জনসভা আয়োজন করা হয়েছে তার আশপাশেই বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যেগুলো এ মাঠটিকে ব্যবহার করে। কমপ্লেক্স মত। আর সেখানেই রাজনৈতিক সমাবেশটি হয়েছে। পরে খোঁজ নিলে আমাকে বলা হলো সেখানে সকাল নয়টা থেকে দুপুর দুটো পর্যন্ত ক্লাস চলেছে। যদিও বলা হয়েছে শিক্ষাকার্যক্রম চলেছে, আসলে কতটা চলেছে তা আমি জানিনা। ওখানে যেহেতু প্যান্ডেল প্যান্ডেল করা হয়েছে সেহেতু শিক্ষা কার্যক্রম যদি চলেও থাকে, নির্বিঘ্নে যে চলেছে সেটা মনে করবার আমার কোনো কারণ নেই।
'সেজন্যই আমি সত্যিই, আমি একেবারে ভীষণভাবে লজ্জিত ও দুঃখিত। যে আমি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে আছি এবং বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠে জনসভার আয়োজন করা হয়েছে। আমি জানি না ওখানে বিকল্প কোন মাঠ ছিলো কিনা, যোগ করেন শিক্ষামন্ত্রী।
দীপু মনি আরও বলেন, আমি অনুরোধ করবো যারা এ ধরনের অনুষ্ঠান করেন, সেটি কোন রাজনৈতিক অনুষ্ঠান হোক, সামাজিক অনুষ্ঠান হোক, ধর্মীয় অনুষ্ঠান হোক, ব্যবসায়ী অন্য কোনো কর্মকাণ্ড হোক, যদি কোন বিকল্প জায়গা থাকে সেখানে করার। আর যদি বিকল্প না থাকে তাহলে শিক্ষা কার্যক্রম কোনভাবেই যেন ব্যাহত না হয় এমনভাবে করা হয় অর্থাৎ ছুটির দিনে করা হয়। এবং যেন দেখা হয়, আমি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট সবাইকে বলবো, যারা এ ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজন করেন তাদের কাছ থেকে নিশ্চয়তা নেয়া, যদি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অঙ্গনকে ব্যবহার করতে হয় তাহলে যেন ছুটির দিনে এসব অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। আর ওই ওই প্রাঙ্গন যেন কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে নিশ্চয়তা বিধান করেই যেন এসব অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।