খায়রুজ্জামানকে ফেরত পাঠানো যাবে না: ইউএসএইচসিআর

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২২, ১১:৩৭ এএম

খায়রুজ্জামানকে ফেরত পাঠানো যাবে না: ইউএসএইচসিআর

মালয়েশিয়ায় গ্রেপ্তার হওয়া সাবেক হাইকমিশনার মোহাম্মদ খায়রুজ্জামানকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো যাবে না বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর।

ইউএনএইচসিআর এর এক বিবৃতির বরাত দিয়ে স্থানীয় সময় গতকাল শনিবার মালয়েশিয়ার গণমাধ্যম ফ্রি মালয়েশিয়া টুডের খবরে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সরকার যখন খায়রুজ্জামানকে দেশে ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে, ঠিক তখনি জাতিসংঘের এই সংস্থার পক্ষ থেকে তাকে বাংলাদেশে না ফেরত পাঠানোর জন্য মালয়েশিয়া সরকারকে জানিয়ে দিল।

ফ্রি মালয়েশিয়া টুডের খবরে বলা হয়, শরণার্থী পুনর্বাসন আইন অনুযায়ী, সরকার কোনো শরণার্থীকে এমন কোনো স্থানে পাঠাতে পারে না; যেখান তার জীবন হুমকির মুখে পড়বে। শরণার্থীদের মর্যাদা সম্পর্কিত ১৯৫১ সালের কনভেনশন চুক্তি অনুযায়ী, উক্ত আইনটি সব দেশের জন্য পালন করা বাধ্যতামূলক।

সংস্থাটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এম খায়রুজ্জামান জাতিসংঘের শরণার্থী কার্ড নিয়ে মালয়েশিয়ায় অবস্থান করায় বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো সম্ভব না। এটা আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী বলে জানিয়েছে ইউএনএইচসিআর ।

চার দলীয় জোট সরকারের সময় কূটনেতিক দায়িত্ব পাওয়া সাবেক কর্মকর্তা এম খায়রুজ্জামান    ২০০৯ সাল থেকে মালয়েশিয়ায় রাজনৈতিক আশ্রয়ে একজন ইউএনএইচসিআর কার্ডধারী। গত বুধবার একটি অজ্ঞাত এনফোর্সমেন্ট এজেন্সি তাকে আমপাং-এ তার বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। ২০০৭ সালে তিনি মালয়েশিয়ায় হাইকমিশনার হিসেবে নিযুক্ত হন। দুই বছর পর, সরকার পরিবর্তন হলে তাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু তিনি দেশে ফিরে আসতে অস্বীকার করেন এবং তখন থেকেই মালয়েশিয়ায় নির্বাসনে রয়েছেন।

খায়রুজ্জামানকে গ্রেপ্তারের কারণ এখনও জানা যায়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে, ঢাকায় ১৯৭৫ সালের জেল হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে বাংলাদেশের সরকারি কর্মকর্তারা তাঁকে অভিযোগের মুখোমুখি করা উচিত বলে মনে করেন।

তবে এর ঠিক উল্টো অবস্থান নিয়েছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। খায়রুজ্জামানকে মুক্তি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠিয়ে দেওয়ার জন্যেএই সংস্থাটি মালয়েশিয়া সরকারকে অনুরোধ করেছে। স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য খায়রুজ্জামানের আবেদন ত্বরান্বিত করতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে সহযোগিতা করার জন্য মালয়েশিয়াকে অনুরোধ করেছে; যাতে তিনি সেখানে অবস্থানরত তার স্ত্রী ও ছেলের সঙ্গে যোগদান করতে পারেন।

প্রসঙ্গত, ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে হত্যা করা হয় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ট সহচর এবং স্বাধীন বাংলার প্রথম সরকারকে নেতৃত্ব দেওয়া জাতীয় চার নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমেদ, এম মনসুর আলী এবং এ এইচ এম কামরুজ্জামানকে। অবসরপ্রাপ্ত মেজর খায়রুজ্জামান ওই জেলহত্যা মামলার আসামি ছিলেন, তবে পরে তাকে এ মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

Link copied!