চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যার কারণ জানালেন আশীষ

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

এপ্রিল ৬, ২০২২, ০৪:৩৩ পিএম

চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যার কারণ জানালেন আশীষ

ঢাকাই চলচ্চিত্রের এক সময়ের জনপ্রিয় অভিনেতা সোহেল চৌধুরী হত্যাকাণ্ডের অন্যতম পরিকল্পনাকারী আমিষ রায় চৌধুরী ওরফে বোতল চৌধুরী। ব্যবসায়ী ও চিত্র প্রয়োজক আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের সঙ্গে মিলে বোতল চৌধুরী ও ট্রাম্পস ক্লাবের মালিক বান্টি ইসলাম ওই হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা করেন।

মামলার পলাতক ও চার্জশিটভুক্ত ১ নম্বর আসামি আশিষ রায় চৌধুরী ওরফে বোতল চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।

বুধবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এসব তথ্য জানান।

আশিষ চৌধুরীকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্য জানিয়ে খন্দকার আল মঈন বলেন, চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা করেছেন আজিজ মোহাম্মদ ভাই, ট্রাম্পস ক্লাবের মালিক বান্টি ইসলাম ও আশিষ রায় চৌধুরী ওরফে বোতল চৌধুরী। ট্রাম্পস ক্লাবে জনসম্মুখে আজিজ মোহাম্মদ ভাইকে সোহেল চৌধুরী অপমান করায় প্রতিশোধ নিতে তারা এ পরিকল্পনা করেন।

র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক আরও বলেন, রাজধানীর বনানীর আবেদীন টাওয়ারের অষ্টম তলায় অবস্থিত ট্রাম্পস ক্লাবের পাশে ছিল সে সময়ের বনানীর সবচেয়ে বড় মসজিদ বনানী জামে মসজিদ। ট্রাম্পস ক্লাবে সন্ধ্যা থেকে শুরু করে সারারাত অসামাজিক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হতো। বনানী মসজিদের কমিটিকে নিয়ে চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী  ট্রাম্পস ক্লাবের এ ধরনের অশ্লীলতা বন্ধের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। এ নিয়ে আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের সঙ্গে সোহেল চৌধুরীর বাগবিতণ্ডা ও হাতাহাতি হয়। এরপর তিনজন মিলে সোহেলকে উচিত শিক্ষা দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়। সেটার দায়িত্ব দেওয়া হয় ইমনকে।

র‍্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, ওই ঘটনার প্রতিশোধ নিতে ট্রাম্পস ক্লাবে যাতায়াত করা শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন তারা। এক পর্যায়ে ইমন তাদের অনুরোধে পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করতে রাজি হন এবং সোহেল চৌধুরীকে হত্যার পরকল্পনা বাস্তবায়ন করেন।

এর আগে, মঙ্গলবার রাত ১১ টার দিকে রাজধানীর গুলশান-২ এর ২৫/বি ফিরোজা গার্ডেন নামে একটি বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।এসময় তার কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ মদ ও সিসা সেবনের সরঞ্জাম উদ্ধার করে র‌্যাব।

গ্রেফতার আশিষ রায় জিজ্ঞাসাবাদে র‌্যাবকে বলেন, তিনি ২০০৫ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত একটি এয়ারলাইন্সের ডিরেক্টর (অপারেশন্স) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১০ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত তিনি আরেকটি এয়ারলাইন্সের গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন।২০১৩ থেকে এখন পর্যন্ত তিনি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানে এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর হিসেবে কর্মরত।

প্রসঙ্গত, ১৯৯৮ সালের ১৮ ডিসেম্বর ঢাকার বনানীর ১৭ নম্বর রোডের আবেদীন টাওয়ারে ট্রাম্পস ক্লাবের নিচে সোহেলকে গুলি করে হত্যা করা হয়। ঘটনার দিনই তার ভাই তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী গুলশান থানায় হত্যা মামলা করেন।

মামলার তদন্ত শেষে ১৯৯৯ সালের ৩০ জুলাই ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার আবুল কাশেম ব্যাপারী নয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন।

অভিযোগপত্রে আসামির তালিকায় ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের নামও ছিল। অন্য আসামিরা হলেন- ট্রাম্পস ক্লাবের মালিক আফাকুল ইসলাম ওরফে বান্টি ইসলাম ও আশীষ চৌধুরী, শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমন, আদনান সিদ্দিকী, তারিক সাঈদ মামুন, সেলিম খান, হারুন অর রশীদ ওরফে লেদার লিটন ও ফারুক আব্বাসী।

এই মামলায় আশীষ চৌধুরী শুরু থেকেই পলাতক ছিলেন। তার বিরুদ্ধে আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও ছিল।

Link copied!