ঈদের ছুটি শেষ হয়ে গেলেও কমছে না দৌলতদিয়ায় যাত্রী ও যানবাহনের চাপ। ঢাকামুখী মানুষকে ফেরি পারের জন্য দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে ঘাট এলাকায়।
ঘাট কর্তৃপক্ষ বলছে, ঈদের সময়ে অতিরিক্ত যাত্রী ও যানবাহনের জন্য কয়েক দিন ধরেই একটা জট লেগে আছে। শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌপথে যানবাহন পারাপার ব্যাহত হওয়ায় এই পথে চাপ বেড়েছে। সেই সঙ্গে আবার অপচনশীল পণ্যবাহী ট্রাক পারাপার শুরু হওয়ায় যানজট আরও বেড়েছে। রোববার রাতে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ফেরিঘাট থেকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের মকবুলের দোকান পর্যন্ত ১০ কিলোমিটারের বেশি জট ছিল। সোমবার সকালে তা কমে সাত কিলোমিটার হয়েছে। প্রতিটি বাসকে ফেরি পারের জন্য ছয় থেকে সাত ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে। আর ট্রাকগুলোকে অপেক্ষা করতে হচ্ছে এক থেকে দুই দিন।
রাজবাড়ী থেকে ঢাকাগামীে এক যাত্রী বলেন, ‘আমি আর আমার দিদি ঢাকা যাওয়ার জন্য ফার্স্ট ট্রিপের টিকিট কাটি। সকাল ৭টায় ঘাটে পৌঁছেছি। তারপর আর আগাতে পারিনি। ‘তাড়াতাড়ি যাব বলে ফার্স্ট ট্রিপের টিকিট কাটলাম, কিন্তু লাভ হলো না। সেই সঙ্গে শুরু হয়েছে বৃষ্টি।’
সকাল থেকেই এই এলাকায় বৃষ্টি হওয়ায় যাত্রী ও চালকরা আশঙ্কা করছেন, ঘূর্ণিঝড় আসানির প্রভাবে আবহাওয়া খারাপ হয়ে গেলে বন্ধ হয়ে যেতে পারে ফেরি। এতে ভোগান্তি আরও বেড়ে যাবে। ঘাটের জট না কমার বিষয়ে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মো. শিহাবউদ্দিন বলেন, ‘আমাদের সব ফেরিই চলছে। শিমুলিয়া-বাংলাবাজার দিয়ে বড় গাড়ি পার হতে না পারায় সেগুলো এদিক দিয়ে যাচ্ছে। তাই গাড়ির বাড়তি চাপ।
‘ঈদে বন্ধ থাকার পর অপচনশীল পণ্যবাহী ট্রাক পারাপারও শুরু হয়েছে। সে কারণেও গাড়ির সংখ্যা বেড়ে দীর্ঘ সিরিয়াল তৈরি হচ্ছে।’ গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) স্বপন কুমার মজুমদার জানান, অতিরিক্ত যানবাহনের কারণেই জট তৈরি হচ্ছে। ঘাটের ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা সুশৃঙ্খল রাখতে ও যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ঘাট থেকে গোয়ালন্দ মোড় পর্যন্ত বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশ সদস্যরা কাজ করছেন। দৌলতদিয়ায় এই অবস্থা হলেও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাটের অবস্থা সম্পূর্ণ বিপরীত।
বিআইডব্লিউটিসির আরিচা কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক শাহ খালেদ নেওয়াজ বলেন, ‘এই মুহূর্তে বাস ও ট্রাক মিলিয়ে ঘাট এলাকায় অর্ধশতাধিক যানবাহন ফেরির জন্য সিরিয়ালে আছে। ঘাটে আসা মাত্রই সবাই ফেরির দেখা পাচ্ছে। পাটুরিয়া ঘাট এলাকার পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক।’